logo
আপডেট : ৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১৩:২৮
পোশাক রপ্তানিতে আরো অগ্রগতি চাই
নিজস্ব প্রতিবেদক

পোশাক রপ্তানিতে আরো অগ্রগতি চাই

আমাদের দেশে তৈরি পোশাক রাপ্তানির সুখবর আসছে। বিদেশে তৈরি পোশাকের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। আমাদের দেশে তৈরি পোশাক শিল্পের উৎপাদনও আগের তুলনায় বেড়েছে। ফলে পোশাক শিল্পে দেখা দিয়েছে সম্ভাবনা। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। বন্ধ করতে হবে শ্রমিক আন্দোলন। তবেই পোশাক শিল্পের উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও বিদেশের বাজরে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। আমরা জানি দেশের নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও সাভারের আশুলিয়ার বেশির ভাগ তৈরি পোশাক কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব শিল্প কারখানায় কাজ করছে ৫০ লক্ষাধিক শ্রমিক। শ্রমিক আন্দোলন এই শিল্পের অগ্রযাত্রায় যে বাধা ছিল তাও নিরসন হয়েছে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সরকার-মালিক-শ্রমিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলন ছেড়ে কাজে ফিরেছেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা। তবে আর্থিক সংকটের কারণে এখনও কিছু কারখানা চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। যদিও কয়েক দিনের শ্রমিক আন্দোলনের মুখে বন্ধ ঘোষণা করা কারখানাগুলোও ধীরে ধীরে খুলে দেওয়া হচ্ছে। ফলে কারখানায় উৎপাদন পুরোদমে শুরু হয়েছে। এখন শ্রমিকদের কর্মচাঞ্চল্যমুখর শিল্পাঞ্চল। কারখানা এলাকায় বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে কাজ করছে যৌথ বাহিনী। শিল্প এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজেপি সদস্যরাও টহল দিচ্ছেন। শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরে মোট নিবন্ধিত কারখানা ২ হাজার ৬৩৩টি। এর বাইরে অনিবন্ধিত কারখানা আছে ৫০০টি। এসব কারখানায় কাজ করেন প্রায় ২২ লাখ শ্রমিক। শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে রাজি হয়েছে মালিকপক্ষ। ফলে বিক্ষোভ-প্রতিবাদসহ অন্য কর্মসূচি আপাতত বন্ধ করে কাজে ফিরেছেন শ্রমিকেরা। ফলে এই শিল্পে জেগেছে আশার আলো। পোশাক রপ্তানি আয় বাড়ছে বলে গতকাল দৈনিক ভোরের আকাশে প্রকাশিত খবরে উল্লেখ কর হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ আয় করেছে ৩ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ২ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি। গত বছরের জুলাই মাসে তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছিল ৩ দশমিক ০ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথম মাস জুলাইয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ২ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ৩ দশমিক ৮২ বিলিয়ন হয়েছে। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে, বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল ৩ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য মতে, ওভেন পণ্য থেকে রপ্তানি আয় ৩ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যেখানে নিট পণ্যের রপ্তানি আয় ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, অর্থবছরের প্রথম মাসে ইতিবাচক সূচনা হওয়া ভালো লক্ষণ। এটা ধরে রাখতে হবে। প্রতিটি শিল্প কারখানায় উৎপাদন বাড়াতে হবে। তবেই তৈরি পোশাক শিল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি হবে।

আমরা জানি, তৈরি পোশাক শিল্পের উৎপাদিত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। আমরা এই শিল্পের আরো উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা দেখতে চাই। আমাদের দেশে জনসংখ্যার তুলনায় জমির পরিমাণ খুবই কম। কাজেই কৃষির ওপর নির্ভও করে উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা সম্ভব নয়। তাই শিল্পের ওপর নির্ভর করে এগিয়ে যেতে হবে আমাদেরকে। মনে রাখতে হবে শিল্প বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। শিল্পের উন্নয়ন হলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। কাজেই শিল্পের উন্নয়নে নিতে হবে পরিকল্পিত উদ্যোগ। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শিল্পের উন্নয়নে পদক্ষেপ নিবে বলে আমরা আশাবাদী।

 

ভোরের আকাশ/রন