রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজারে ১০০ টাকা কেজির কমে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। হঠাৎ দাম বাড়ার পেছনে এবার বৃষ্টিকে দায়ী করেছেন ব্যবসায়ীরা। সবজির এই অগ্নিমূল্যের কারণে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। তারা নীরবে চোখের জল ফেলছেন।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন, করলা, ঝিঙা, ধুন্দল, পটল, কচুর লতি, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, চিচিঙ্গা- সবই আছে। বাজারে চলে এসেছে শিম, ফুলকপি, পাতাকপি, মুলাসহ প্রায় সব ধরনের শীতের সবজি। এদিকে নতুন সবজির প্রতি ক্রেতাদের বাড়তি আকর্ষণ থাকলেও আকাশছোঁয়া দামের ফলে ধারে-কাছেও যেতে পারছে না নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ। এই তালিকায় একশ টাকার নিচে বাজারে কোনো সবজি বিক্রি হচ্ছে তা খুঁজতে ক্রেতাকে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের এমন দামে হতাশ ক্রেতারা। তারা বলছেন, সরকার বদলেছে, তবে বাজার সিন্ডিকেট একই আছে। আর সিন্ডিকেটের কবলেই জিম্মি ভোক্তার পকেট। এ অবস্থা থেকে যেন আর পরিত্রাণ নেই।
সরেজমিন দেখা গেছে অধিকাংশ সবজির দাম শুরু হচ্ছে ৮০, ৯০, ১০০ টাকায়। নতুন ফুলকপি ও বাঁধাকপি পিস ৭০-৮০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, বেগুন জাতভেদে ১০০-১২০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৪০-৪৫ টাকা, টমেটো ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, পটল ১০০ টাকা, চিচিংগা ১০০ টাকা, কাকরল ১০০ টাকা, ঝিঙ্গা ১০০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা এবং ধুন্দুল ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। শীতের সবজি শিমের দাম দোকানভেদে চাওয়া হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি। বাজারে নতুন আলুর দাম ২০০ টাকা কেজি। এ ছাড়া, কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। শসা ৮০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ ১১০-১২০ টাকা, ইন্ডিয়ান পেঁয়াজের দামও ১০০-১১০ টাকা, দেশি রসুন ২২০ টাকা, চায়না রসুন ২০০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা বলছেন, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যে কারণে দামটা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে একটু বেশি। এদিকে সরকার ডিম, মুরগির দাম বেঁধে দিয়েও বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। উল্টো দাম বেড়ে ডিমের হালি এখন ৬০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা, সেনালি এবং লেয়ার মুরগি ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা। আলু ৫০ টাকার নীচে নেই। লাল আলু আবার ৬০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে বড় সাইজ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকা কেজি। মাঝারী সাইজ ১৫০০ টাকা (এক কেজির কম)। তবে ছোট সাইজের ইলিশ ৫০০ ৬০০ ৭০০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে। পাবদা মাছ ৩০০ টাকা, পাঙ্গাস ১৮০- ২০০ টাকা, শোল মাছ ৬০০ টাকা কেজি, শিঙমাছ (চাষের) ৪০০ টাকা, কই মাছ (চাষের) ২০০-২২০ টাকা। গরুর মাংস ৭০০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা। খাসির মাংস ১০০০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে। আ. রহিম নামে জনৈক ক্রেতা বলেন, সবজি কিনতেই ২০০ টাকার ওপরে চলে যাচ্ছে। মাছ-মাংস বাদ দিয়ে সবজি কিনে খাব তারও উপায় নেই। আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে আছে। সবজি বিক্রেতারা বলেন, সবজির বাজার অনেক দিন থেকেই বাড়তি। কিন্তু গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বাজারে সবজির দাম আরও বেড়ে গেছে। পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, বন্যা এবং বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক সবজি ক্ষেত। যে কারণে সবজির সরবরাহ কিছুটা কম।
ভোরের আকাশ/রন