logo
আপডেট : ৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১৪:৩২
বন্যায় ক্ষতি সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা
-সিপিডি
ভোরের আকাশ প্রতিবেদক

বন্যায় ক্ষতি সাড়ে ১৪
হাজার কোটি টাকা

দেশের পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি ৩৫ ভাগ ক্ষতি হয়েছে কৃষি ও অবকাঠামো খাতে। এ তথ্য জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। গতকাল রোববার সিপিডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি এ তথ্য জানায়। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে, যা জিডিপির দশমিক ২৬ শতাংশ। এর মধ্যে কৃষি ও বন খাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে, যার পরিমাণ ৫ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা। তিনি বলেন, অবকাঠামো খাতে ৪ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা ও ঘরবাড়িতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ২ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা। জেলা হিসেবে নোয়াখালীতে সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে। এ জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৪ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। এরপর আছে কুমিল্লা জেলা, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা। বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়হীনতার ঘাটতি ছিল। এ কার্যক্রমে জনপ্রতিনিধি থাকা দরকার ছিল কি না তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কোনো ব্যক্তি একাধিকবার ত্রাণ পেয়েছেন, আবার অনেকেই পাননি। এ ছাড়া অনেকেই ত্রাণসামগ্রী বিক্রি করে দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

এর আগে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, দেশে গত চার মাসে (মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত) প্রাকৃতিক দুর্যোগে ১ কোটি ৮৩ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব দুর্যোগের মধ্যে ছিল ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা। সবচেয়ে বেশি ৫৯ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে সাম্প্রতিক বন্যায়। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক জরুরি শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) জানায়, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ৫৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২০ লাখের বেশি শিশু স্বাস্থ্যগত ও মানসিক নানা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বন্যায় এখন পর্যন্ত ৫২ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পাঁচ লাখের বেশি মানুষ মাথা গোঁজার আশ্রয় হারিয়েছে। বন্যায় তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, রাস্তা, মাঠ-ঘাট ও ফসলি ক্ষেত।

এদিকে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে শেরপুরের নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও নিম্নাঞ্চলের অন্তত দেড়শ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের ডুবে শুক্রবার নালিতাবাড়ীতে বৃদ্ধ ও নারীসহ তিনজন এবং রাতে ঝিনাইগাতীতে একজন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী মারা গেছেন। তবে এখন পর্যন্ত তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা আরও বাড়ছে। তিন উপজেলায় এখনো অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন আবাদ, মাছের ঘের ও সবজি আবাদ। ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ীর মহারশি ও ভোগাই নদীর অন্তত ১০ জায়গায় বাঁধ ভেঙে ও পাড় উপচে প্লাবিত গ্রামের বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও আবাদ তলিয়ে গেছে। শনিবার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, পাহাড়ি নদী সোমেশ্বরী, কর্ণঝোড়া, মহারশী, ভোগাই ও চেল্লাখালীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হবে।

 

ভোরের আকাশ/রন