logo
আপডেট : ৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১১:১৫
১২ জেলায় আকস্মিক বন্যা
প্রাণিসম্পদের ক্ষতি ৪৮৯ কোটি টাকা
হেলাল সাজওয়াল

প্রাণিসম্পদের ক্ষতি
৪৮৯ কোটি টাকা

প্রথম দফার আকস্মিক বন্যায় দেশের প্রাণিসম্পদ খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ১২টি জেলার ৭২টি উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭ হাজার ৮৩৫টি গবাদি পশুর খামার। এ ছাড়া ৫ হাজার ৪৭৯টি হাঁস-মুরগির খামারও ক্ষতির কবলে পড়েছে। সব মিলে এ খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৪৮৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রবল বৃষ্টি আর উজানের ঢলে আগস্টের মাঝা-মাঝি দেশের ১২টি জেলা মারাত্মকভাবে বন্যা আক্রান্ত হয়। জেলাগুলো হলো- সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, খুলনা, ফেনী, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া। নজিরবিহীন এ বন্যায় ৫০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক গবাদি পশুর মৃত্যু হয়। ভেসে যায় পশুখাদ্য ও খামারের অবকাঠামো।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ভয়াবহ বন্যায় ১২ জেলার ৭২ উপজেলায় ৭ হাজার ৮৩৫টি গবাদি পশুর খামারে ২ লাখ ২৪ হাজার ৮৭টি গবাদি পশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব পশুর মূল্য ৩০ কোটি ৩৫ লাখ ১৬ হাজার ৫০০ টাকা। এছাড়া ৫ হাজার ৪৭৯টি খামারে ক্ষতি হয়েছে ৪৩ লাখ ৫৪ হাজার ৬৩০টি হাঁস মুরগির। অনেক হাঁস-মুরগি মরে গেছে। ভেসেও গেছে বিপুল সংখ্যক হাঁস-মুরগি। এতে ক্ষতি হয়েছে ৪১ কোটি ২৬ লাখ ৭৯ হাজার ২৮০ টাকার। এছাড়া ৭ হাজার ৫০ টন পশু-পাখির খাবার নষ্ট হয়ে গেছে; যার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪ কোটি ৩৪ লাখ ১১ হাজার ৫৫০টাকা। বন্যায় বিনষ্ট হওয়া পশুপাখির খড়ের পরিমাণ ২১ হাজার ১৭৮ টন; যার মূল্য ৮ কোটি ৮০ লাখ ৩১ হাজার টাকা। ঘাস নষ্ট হয়েছে ৬ লাখ ৩০ হাজার ৪৮৬ টন; যার মূল্য ধরা হয়েছে ৪৫ কোটি ৭৫ লাখ ৯৬ হাজার ১৫০ টাকা। বন্যায় প্লাবিত হয়েছে ৪৫ হাজার ১২১ একর চারণ ভূমি।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পদক্ষেপ : প্রাণিসম্পদ বিভাগ প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ২০ হাজার ৪৯৬টি গবাদি পশু এবং ২ লাখ ৪৮ হাজার ৬৮৫টি হাঁস-মুরগিকে টিকা দিয়েছে। এছাড়া ১৩ হাজার ৬৮৬টি পশু ও ২ লাখ ৭ হাজার ৮৮৭টি রোগাক্রান্ত হাঁস-মুরগিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে চূড়ান্ত পর্যায়ে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এরই মধ্যে কার্যকর নানা পদক্ষেপ ঘোষণা করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, জরুরি পশুখাদ্য সরবরাহ ও বিতরণ; গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগ প্রতিরোধে টিকা প্রদান এবং ঘাসের কাটিং বিতরণ করা হবে। সহজ শর্তে খামারিদের ঋণ দেওয়া হবে। পশু ও হাঁস-মুরগির খামারগুলো সুরক্ষিত করতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সহায়তা দেওয়া হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসন ডা. মো. বয়জার রহমান ভোরের আকাশকে বলেন, বন্যা চলমান অবস্থায় আমরা গোখাদ্য সরবরাহ, চিকিৎসা ও পরামর্শ সেবা অব্যাহত রেখেছি। পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করে মন্ত্রণালয়ে তথ্য পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলে পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবো।

 

ভোরের আকাশ/রন