বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শোক দিবস পালিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ সকাল সাড়ে ৭ টায় শোক র্যালিসহ জগন্নাথ হল স্মৃতিসৌধে গিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে জগন্নাথ হলের অক্টোবর স্মৃতি ভবনস্থ টিভি কক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান নিহতদের বিনম্র চিত্তে স্মরণ করে বলেন, '১৫ অক্টোবর'-এর মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। বর্তমান প্রশাসন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করে সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, জগন্নাথ হল দুর্ঘটনার আরেকটি শিক্ষা হচ্ছে একতাবদ্ধতা। জগন্নাথ হল দুর্ঘটনার পরে ধর্ম, বর্ণ, দল-মত নির্বিশেষে সারা দেশের মানুষ সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিলো। সেসময় মানুষ এক পরিবারে পরিণত হয়েছিলো। বর্তমানে দেশের বিশেষ পরিস্থিতিতেও তিনি সকল মানুষকে একতাবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল, হোস্টেল ও প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়। এছাড়া, নিহতদের তৈলচিত্র ও তৎসম্পর্কিত দ্রব্যাদি প্রদর্শন করা হয়। নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজ বাদ আছর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিআ'সহ সকল হল মসজিদে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হবে।
তাছাড়া আলোচনা সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ পাল, সাবেক প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা ও অধ্যাপক জগদীশ চন্দ্র শুরুদাস, জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নিবাস চন্দ্র মাঝি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স এসোসিয়েশন, তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী সমিতি, কারিগরী কর্মচারী সমিতি এবং চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন। এসময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও অ্যালামনাইবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর রাতে জগন্নাথ হলে সংঘটিত মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হয়। ঐ দুর্ঘটনায় ২৬জন ছাত্র, ১৪জন অতিথি ও কর্মচারীসহ মোট ৪০জন নিহত হন এবং অসংখ্য শিক্ষার্থী ও অতিথি আহত হন।
ভোরের আকাশ/ সু