logo
আপডেট : ১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১৬:০৭
রাজনীতির ‘অগ্নিকন্যা’ মতিয়া চৌধুরীর বিদায়
অনলাইন ডেস্ক

রাজনীতির ‘অগ্নিকন্যা’ মতিয়া চৌধুরীর বিদায়

‘অগ্নিকন্যা’ নামে পরিচিত বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী (৮২) বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জানান, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত হলে সকালে তাকে হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসা শুরু করলেও দুপুর ১২টা ৫৭ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। তাঁর বোন মাহমুদা চৌধুরী জানান, মাস দুয়েক আগে মেরুদণ্ডে আঘাত পাওয়ার পর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তিনি বাসায় ফিরেছিলেন। তবে আজ শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে পুনরায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

মতিয়া চৌধুরী শেরপুর-২ (নালিতাবাড়ী-নকলা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। ১৯৯৬, ২০০৯ এবং ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৩ সালে তিনি জাতীয় সংসদের উপনেতা হন, তবে ২০২৪ সালে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের অধীনে সংসদ বিলুপ্ত হলে তিনি পদ হারান।

১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুরে জন্মগ্রহণ করেন মতিয়া চৌধুরী। তার বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। ১৯৬৪ সালে খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ইডেন কলেজে পড়াশোনা চলাকালে ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে (ন্যাপ) যোগ দিয়ে ‘অগ্নিকন্যা’ নামে পরিচিতি লাভ করেন।

মতিয়া চৌধুরী ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনী গঠনে অংশ নেন। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং দলের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বহুবার কারাগারে যান এবং জেলজীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে ‘দেয়াল দিয়ে ঘেরা’ নামে একটি বই লিখেছেন।

২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে। সারাজীবন সাধারণ বেশভূষা ও সাদামাটা জীবনযাপনের জন্য সহকর্মীদের মধ্যে প্রিয় ছিলেন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক। তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে, এবং আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ জনগণ তাঁর বিদায়ে শোক প্রকাশ করেছেন।