logo
আপডেট : ২০ অক্টোবর, ২০২৪ ১০:০৭
দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে
ড. মতিউর রহমান

দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে

বাংলাদেশে দুর্নীতি একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হিসেবে প্রতিনিয়ত বিদ্যমান। প্রায় সকল আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ বারবার বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে স্থান পায়। এ অবস্থায় দেশের প্রত্যেক নাগরিকের আকাঙ্ক্ষা থাকে একটি সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক সমাজের অংশীদার হওয়ার, যেখানে ন্যায়, সততা, এবং স্বচ্ছতার ভিত্তিতে দেশ পরিচালিত হয়। দুর্ভাগ্যবশত, ভিন্ন মতাদর্শ বা মতপার্থক্য থাকলেও তা গ্রহণ করার সক্ষমতা অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় না, ফলে দুর্নীতির শেকড় আরো গভীরে প্রোথিত হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারকে তাই সর্বাগ্রে কঠোর অবস্থান নিতে হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। অর্থনৈতিক মন্দা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, এবং সমাজে নানাবিধ সংকটের মধ্যে সবচেয়ে জরুরি কাজ হবে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা। গত কয়েক দশকের ধ্বংসাত্মক প্রভাব থেকে দেশের অর্থনীতি ও প্রশাসনিক কাঠামোকে পুনর্গঠন করতে হলে প্রথম পদক্ষেপ হতে হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্যসহনশীলতা প্রতিষ্ঠা করা। দুর্নীতিবাজদের বিচার করা এবং দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ সরকারি ভাণ্ডারে ফেরত আনার কাজটি অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশে দুর্নীতির কারণগুলো বিভিন্ন দিক থেকে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। দুর্নীতির পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিভিন্ন কারণ, যা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে।

প্রথমত, রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্বল শাসনব্যবস্থা দুর্নীতির একটি প্রধান কারণ। রাজনৈতিক দল ও নেতারা ক্ষমতায় আসার পর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যক্তিগত ও দলের স্বার্থে প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের ফলে জবাবদিহিতার অভাব দেখা যায়। প্রশাসনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে রাজনৈতিক নিয়োগের ফলে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এই প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি সহনশীল হয়ে ওঠে এবং এর বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব থাকে।

দ্বিতীয়ত, প্রশাসনিক দুর্বলতা ও স্বচ্ছতার অভাব বাংলাদেশের দুর্নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। সরকারি প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ঘাটতি রয়েছে। বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে দুর্নীতির প্রবণতা বেশি থাকে, কারণ তারা জানেন যে দুর্নীতির জন্য কার্যকর শাস্তি হয় না। দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হচ্ছে, যা প্রশাসনের দুর্নীতিকে আরও উৎসাহিত করছে।

তৃতীয়ত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব ও দুর্নীতির একটি বড় কারণ। সমাজে স্বজনপ্রীতি, ঘুষ প্রদান এবং সুবিধা অর্জনের জন্য অস্বচ্ছ পন্থা গ্রহণকে অনেক সময় স্বাভাবিক হিসেবে দেখা হয়। পরিবার, সমাজ ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এই সংস্কৃতি প্রভাব ফেলছে, যা দুর্নীতির প্রসার ঘটাচ্ছে। সাধারণ মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই সিস্টেমের দুর্বলতার কারণে বাধ্য হয়ে দুর্নীতির পথে পা বাড়ায়, যা ধীরে ধীরে সমাজের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।

চতুর্থত, অর্থনৈতিক অসামঞ্জস্য ও বেকারত্বও দুর্নীতির একটি কারণ। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং বেকারত্বের হার অনেক বেশি। অনেক মানুষ জীবিকা নির্বাহের জন্য অবৈধ ও অসাধু পথে অর্থ উপার্জন করতে বাধ্য হয়। এক্ষেত্রে, সরকারি চাকরি বা ব্যবসায় সুবিধা পেতে ঘুষ দেওয়ার প্রচলন একটি সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া, নিম্ন আয়ের মানুষদের কাছে সিস্টেমের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে জীবিকা অর্জন সহজ মনে হয়।

পঞ্চমত, আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও শাস্তির অভাব দুর্নীতির প্রসার ঘটায়। দেশে অনেক আইন ও বিধান থাকলেও, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর শাস্তি বা ব্যবস্থাপনা না থাকায় দুর্নীতিবাজরা সহজেই নিজেদের অপরাধকে লুকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়। বিচার বিভাগের ধীরগতিও দুর্নীতির শাস্তি প্রদানকে বিলম্বিত করে, যা অপরাধীদের উৎসাহিত করে।

সব মিলিয়ে, বাংলাদেশের দুর্নীতির মূল কারণগুলো হলো রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, প্রশাসনিক দুর্বলতা, সামাজিক সংস্কৃতি, অর্থনৈতিক অসামঞ্জস্য, এবং আইনের দুর্বল প্রয়োগ। এই কারণগুলোর সমাধান ছাড়া দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-এর ২০২৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে দুর্নীতির মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে, যার ফলস্বরূপ দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে দশম স্থানে রয়েছে। ২০২২ সালের তুলনায় অবস্থানের অবনতি হয়েছে, যা দেখায় যে, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার ফলে দেশের সার্বিক অবস্থান আরও খারাপ হয়েছে। দুর্নীতি শুধু ব্যক্তিগত সুবিধা বা লাভের জন্য ক্ষমতার অপব্যবহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না; বরং এটি দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক, এবং রাজনৈতিক কাঠামোকেও বিপর্যস্ত করে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে দুর্নীতির মাত্রা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায়ও বাংলাদেশের অবস্থান নাজুক। আফগানিস্তান ছাড়া এ অঞ্চলের সকল দেশের চেয়ে বাংলাদেশে দুর্নীতির হার বেশি। এ অবস্থায় দেশের আর্থিক ও সামাজিক কাঠামো পুননির্মাণ করতে হলে দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরও শক্তিশালী এবং কার্যকর করতে হবে। কমিশন যদি নিজেই দুর্নীতির শিকার হয়, তবে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। সৎ এবং যোগ্য কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে দুর্নীতি দমন কমিশনকে পুনর্গঠন করা সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

অতীতের অনেক সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে, বরং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা ব্যক্তিদের নানাভাবে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। এর ফলে, দুর্নীতিবাজরা আরও উৎসাহিত হয়েছে এবং প্রশাসনের শীর্ষ মহল থেকে শুরু করে নিচের স্তরের কর্মচারীরাও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়ে উঠেছে। বর্তমান সরকার দেশের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতেও এ অবস্থা অব্যাহত থাকবে।

অন্তর্বর্তী সরকারকে তাই সর্বাগ্রে কঠোর অবস্থান নিতে হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। অর্থনৈতিক মন্দা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, এবং সমাজে নানাবিধ সংকটের মধ্যে সবচেয়ে জরুরি কাজ হবে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা। গত কয়েক দশকের ধ্বংসাত্মক প্রভাব থেকে দেশের অর্থনীতি ও প্রশাসনিক কাঠামোকে পুনর্গঠন করতে হলে প্রথম পদক্ষেপ হতে হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্যসহনশীলতা প্রতিষ্ঠা করা। দুর্নীতিবাজদের বিচার করা এবং দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ সরকারি ভাণ্ডারে ফেরত আনার কাজটি অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে।

আশার কথা হচ্ছে, অন্তর্র্বতীকালীন সরকার ইতোমধ্যেই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে এবং এ লক্ষ্যে একটি কমিশন গঠন করেছে। এই উদ্যোগ বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন অনেক দিন থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই বর্তমান সরকারের এই সংস্কার প্রক্রিয়া দুর্নীতি মোকাবিলায় আশার আলো দেখাচ্ছে।

এই নতুন সংস্কার কমিশনের প্রধান কাজ হবে দুদকের কার্যক্রমকে পুনর্মূল্যায়ন ও পুনর্গঠন করা। এর মধ্যে থাকবে দুদকের ক্ষমতা, কর্মক্ষমতা, এবং দক্ষতার মান উন্নয়ন। সংস্কার কমিশন সম্ভাব্য সকল গঠনমূলক পরিবর্তনের জন্য সুপারিশ প্রদান করবে যাতে দুদক কার্যকরভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় প্রথমেই প্রয়োজন দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা প্রভাবশালী গোষ্ঠী তাদের কাজকে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে।

দুদকের স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতীতে দেখা গেছে, দুদককে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে বা তার স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। ফলে কমিশন তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। একটি কার্যকর দুদক গঠন করার জন্য প্রয়োজন এ সংস্থাটির প্রতি সর্বাত্মক আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা। জনগণের দৃষ্টিতে দুদককে এমনভাবে উপস্থাপন করতে হবে, যেন তারা দেখতে পায় এটি সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করছে।

এই নতুন সংস্কার কমিশন আরও সুপারিশ করবে যে, দুদকের কর্মকর্তাদের দক্ষতা ও যোগ্যতা উন্নয়ন করা প্রয়োজন। দুর্নীতি মোকাবিলায় সুশিক্ষিত, যোগ্য এবং দক্ষ জনবল অত্যন্ত জরুরি। তাই দুদকের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হবে। পাশাপাশি দুর্নীতির তদন্ত ও প্রমাণ সংগ্রহের ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তাও আছে, যা দুর্নীতি শনাক্ত ও প্রতিরোধকে আরও সহজ করে তুলবে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হবে আইনি কাঠামোর উন্নয়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়। দুদককে অধিকতর ক্ষমতাবান করা হবে যেন তারা তাদের তদন্ত ও বিচারের প্রক্রিয়া আরও কার্যকরভাবে সম্পন্ন করতে পারে। দুর্নীতির প্রমাণ সংগ্রহ, অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করা, এবং শাস্তি প্রদান নিশ্চিত করতে আইনি কাঠামোকে আরও মজবুত করতে হবে। বিশেষত, দুদকের কার্যক্রমে সময়মততা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

সংস্কার কমিশন দুর্নীতির অর্থ পুনরুদ্ধারের জন্য সুপারিশ করবে। দুর্নীতির মাধ্যমে যারা বিপুল সম্পদ আত্মসাৎ করেছে, তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। দুর্নীতিবাজদের সম্পদ ফেরত আনতে আইনগত প্রক্রিয়া সহজ করা হবে এবং যারা দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়া, গণসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সাধারণ মানুষকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সম্পৃক্ত করা হবে দুর্নীতি দমনে এক বড় হাতিয়ার। দুদককে জনগণের পাশে এনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা প্রয়োজন। সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো দুর্নীতি দমন কার্যক্রমই সফল হতে পারে না। দুদককে জনগণের অভিযোগ গ্রহণ ও তদন্তের ক্ষেত্রে আরও গতিশীল করতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষ তাদের অভিযোগ নিয়ে সরাসরি দুদকের কাছে যেতে পারেন এবং ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করতে পারেন।

এই সংস্কার প্রক্রিয়া সফল হলে দুদক একটি কার্যকর সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে, যা স্বাধীনভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করতে সক্ষম হবে। এতে বাংলাদেশের সুশাসন ও আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। দেশটি ধীরে ধীরে দুর্নীতির দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে এসে একটি সুশাসিত ও সমৃদ্ধ জাতিতে পরিণত হতে পারবে।

সরকারের সদিচ্ছা এবং সংস্কারের এই উদ্যোগ যদি সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়, তবে আশা করা যায় যে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে দুর্নীতি আর বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, জনগণের সহযোগিতা এবং কঠোর প্রশাসনিক পদক্ষেপ একত্রে কাজ করলে বাংলাদেশে দুর্নীতিমুক্ত একটি ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

কেবল সরকারকেই নয়, জনগণের মধ্যেও নৈতিকতা ও সততার চর্চা বাড়াতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি করা, নৈতিক শিক্ষা বাড়ানো, এবং স্বচ্ছ প্রশাসনের নীতির প্রতি আনুগত্য সৃষ্টি করা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। দুর্নীতিকে প্রতিরোধে ব্যক্তিগত ও সামাজিক স্তরে সদাচরণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সুতরাং, দুর্নীতি দমনের জন্য আইনগত ও প্রশাসনিক কাঠামোর পাশাপাশি এটি একটি সামাজিক আন্দোলন হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজন রয়েছে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে সরকার ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন। দুর্নীতি রোধের জন্য সরকারের সদিচ্ছা এবং জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি সুশাসিত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন সম্ভব।

লেখক: গবেষক ও উন্নয়নকর্মী।

 

ভোরের আকাশ/রন