গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার সেই বর শফিকুল ইসলাম অবশেষে তালাক দেওয়া প্রথম স্ত্রী পারভীন খাতুনকে ৩ লাখ টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। ঘটনার পর উভয় পক্ষের লোকজন থানায় বসে সমঝোতার পর গত শুক্রবার রাতেই বিয়ে করেন তিনি।
শফিকুল ইসলাম দ্বিতীয় বিয়ে করেন একই উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের চকদাড়িয়া-পাতিল্যাকুড়া গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে রিমি খাতুন (২৪) কে। এ বিয়েতে ৩ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে স্থানীয় কাজীর মাধ্যমে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
এরআগে, শফিকুল ইসলাম স্বজনদের নিয়ে মাইক্রোযোগে দ্বিতীয় বিয়ে করতে কনে রিমির বাড়িতে যাওয়ার পথে তাদের ওপর হামলা করে প্রথম স্ত্রী (তালাকপ্রাপ্ত) পারভীনসহ স্বজনেরা। এতে বর শাফিকুলসহ অন্তত ৩ জন আহত হয়। গতকাল শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের রসুলপুর (ফকিরপাড়া) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বর শফিকুল ইসলামসহ আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও ফলাও করে এ সংবাদ প্রচার হয়। এতে জেলাজুড়েই ব্যাপক চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়।
উভয় পক্ষের সমঝোতার বিষয়টি নিশ্চিত করে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজ উদ্দিন খন্দকার বলেন, ঘটনার পরেই হামলার শিকার শফিকুলকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। এরপর রাতেই উভয় পক্ষের লোকজন বসে ঘটনাটি মিমাংসা করেন। পরে শফিকুলকে তার স্বজনদের জিম্মায় দেওয়া হয়। রাতেই তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রসুলপুর ইউনিয়নের রসুলপুর (মধ্যপাড়া) গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে শফিকুল ইসলামের সঙ্গে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ৪ লাখ টাকা ধার্য করে বিয়ে হয় পারভীন খাতুনের। পারভীন ফকিরপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে। কিন্তু বিয়ের আড়াই বছর সংসার করার পর পারভীনকে তালাক দেয় শফিকুল। কিন্তু তালাকের তিন মাস পার হলেও দেনমহরের ৪ লাখ টাকা পরিশোধ করেনি শফিকুল। টাকা পরিশোধ না করেই তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাচ্ছিলেন।পথে রবের ওপর হামলা করেন প্রথম স্ত্রীসহ স্বজনরা।
প্রথম পক্ষের স্ত্রী পারভীন খাতুনের অভিযোগ, দেনমোহরের টাকা না দিয়ে আমাকে তালাক দেয় শফিকুল। দেনমহরের টাকার দাবিতে দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাওয়ার সময় তাকে আটক করেছি। পরে থানায় বসা হলে আমাকে দেনমোহরের ৩ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পরে তাকে থানা থেকে ছাড়া হয়।
তবে বর শফিকুল ইসলামের অভিযোগ, হঠাৎ তাদের গাড়ি থামিয়ে হামলা করে পারভীনসহ তার পরিবারের লোকজন। এসময় তাকেসহ সঙ্গে থাকা ৩/৪ জনকে বেদম মারধর করা হয়। পকেট থেকে টাকা ও হাতে থাকা আংটিও খুলে নেয় তারা। পারভীনকে তালাক দেওয়ার পরেই বিয়ের সিন্ধান্ত নেই। কিন্তু বিয়ে করতে যাওয়ার সময় তাদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে তারা।
এ বিষয়ে শফিকুল ইসলামের বাবা জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, প্রথম স্ত্রী পারভীনকে তালাক দেয় আমার ছেলে। কিন্তু দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাওয়ার সময় তার ওপর হামলা করে পারভীনসহ তার স্বজনেরা। পরে থানায় বসে ৩ লাখ টাকা দেওয়ার সিন্ধান্তে ঘটনাটি সমাধান হয়। এরপর ওই রাতেই ৩ লাখ টাকা দেনমোহর ঠিক করে কনে রিমির সঙ্গে শফিকুলের বিয়ে সম্পন্ন করা হয়।
ভোরের আকাশ/মি