জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে চলছে বিশ্বের বৃহত্তম বইমেলার ৭৬তম আসর। এ বছর মেলায় ১০০টিরও বেশি দেশ থেকে ৪৩০০-এর অধিক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৭.৫ শতাংশ বেশি। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ, লেখক, প্রকাশক, সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীরা অংশ নেন। বক্তারা গণতন্ত্রের বিকাশে বইয়ের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ ২০১৫ সাল থেকে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় অংশগ্রহণ করে আসছে। এবারও বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর মো. গোলাম রাব্বির তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ অংশ নিয়েছে। তিনি জানান, ভবিষ্যতে বৃহৎ পরিসরে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে মেলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
এবারের মেলায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণে বিশেষ ধরনের বৈচিত্র্য লক্ষিত হয়েছে। বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ছবি এবং তথ্য সম্বলিত লিফলেট মেলায় প্রদর্শন করা হচ্ছে। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র থেকে প্রকাশিত লিফলেটে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে।
জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক আফসানা বেগম বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তিনি বলেন, "বাংলাদেশের সাহিত্যকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে আগামীতে প্রকাশকদের অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।" বিভিন্ন দেশের লেখক ও প্রকাশকরা বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের খবর জানেন এবং এর ইতিহাস আরও বিশদভাবে লেখার প্রয়োজনীয়তা আছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
২০ বছরের বেশি সময় ধরে ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় অংশ নিচ্ছেন জার্মানি থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল শুদ্ধস্বর ডট কমের প্রধান সম্পাদক হাবীব বাবুল। তিনি বলেন, "এবারের বাংলাদেশের স্টলে রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, বরং বিভিন্ন মতের লেখকদের বই প্রদর্শিত হচ্ছে।"
মেলায় এ বছর অতিথি দেশ হিসেবে অংশ নিয়েছে ইতালি, যেখানে শতাধিক লেখক যোগ দিয়েছেন। তবে দেশটির সরকারবিরোধী লেখকদের অংশগ্রহণ নিয়ে কিছু বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
মেলা চলবে ২০ অক্টোবর রোববার পর্যন্ত, যেখানে এক হাজারেরও বেশি সভা-সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজকরা জানান, ২০২৫ সালের ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা ১৫-১৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে, আর সেবারের অতিথি দেশ হবে ফিলিপাইন।
ভোরের আকাশ/রন