গাইবান্ধায় মসজিদ ভাঙচুর ও মুসল্লিদের মারধরের চেষ্টার অভিযোগে জাইদুল ইসলাম (৩৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলফিকার আলী ভুট্রো।
তিনি বলেন, ওই যুবকের বিরুদ্ধে মসজিদ ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল রোববার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত শনিবার বিকেলে পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের পশ্চিম মনোহরপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তারকৃত জাইদুলের বাড়ি পশ্চিম মনোহরপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মকবুল শেখের ছেলে।
এ খবর এলাকায় জানাজানি হলে জনগণ উত্তেজিত হয়ে ওই যুবকের ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে। এতে একটি টিনশেড ঘর পুড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই সপ্তাহ আগে জাইদুল ইসলামের বাড়ির পাশে এক প্রতিবেশীর বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। বিয়ের অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে গান বাজানো হচ্ছিল। পরে সমাজের লোকজন উচ্চ শব্দে গান বাজাতে নিষেধ করে। পরবর্তীতে গান বাজানো বন্ধ করা হয়। এই ঘটনার জের ধরে জাইদুল শনিবার বিকেলে মসজিদে এসে ভাঙচুর করার চেষ্টা করে। এ সময় মসজিদের একটি জানালার গ্লাস ভেঙে দেয় এবং সেখানে উপস্থিত কয়েকজন মুসল্লির ওপর হামলা করে তাদের মারধর করেন। এ সময় মুসল্লিরা মসজিদের মাইকে ভাঙচুরের বিষয়টি প্রচার করে। মাইকে ঘোষণা শুনে গ্রামের লোকজন এসে মসজিদ চত্বরে জড়ো হয়ে জাইদুলকে আটক করে। পরে স্থানীয় জনতা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওইদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় জনতা জাইদুলকে পলাশবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এই ঘটনায় জাইদুল ইসলামকে একমাত্র আসামি করে পলাশবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মসজিদ ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং অস্ত্র আইনে এ মামলা দায়ের হয়।
এদিকে শনিবার রাত ১০টার দিকে স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে জাইদুল ইসলামের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে জাইদুলের একটি টিনশেড ঘর পুড়ে যায়।
এলাকাবাসী জানায়, জাইদুল ইসলাম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তিনি ঘটনার দিন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় একটি ছুরি নিয়ে মসজিদ চত্বরে আসেন। এ সময় তিনি ছুরি দিয়ে মসজিদের জানালার গ্লাস ভেঙে দেন। পরে মসজিদের সভাপতি সিরাজুল ইসলামকে ছুরি দিয়ে আঘাত করার হুমকি দিতে তার বাড়িতে যান। এ সময় সিরাজুল নিজেকে রক্ষার জন্য পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন।
এসব বিষয়ে মসজিদের মোয়াজ্জেম মোনারুল ইসলাম বলেন, জাইদুল ইসলাম শনিবার আসরের নামাজের পর মসজিদে এসে হামলা করেন। পরে একটি জানালার গ্লাস ভাঙতে থাকেন। তার কাছে ধারালো ছুরি থাকায় কেউ তাকে থামাতে পারেনি। পরে সবাই একজোট হয়ে তাকে আটক করে প্রশাসনের হাতে তুলে দেন।
ভোরের আকাশ/রন