logo
আপডেট : ২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১৮:৩০
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ এবং রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবন অভিমুখে যাত্রা
ঢাবি প্রতিবেদক

ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ এবং রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবন অভিমুখে যাত্রা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দীন চুপ্পুর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে তার পদত্যাগ ও বিপ্লবী সরকার গঠন এবং ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বঙ্গভবন অভিমুখে যাত্রা করেছে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে সাড়ে চারটায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে "ইনকিলাব মঞ্চ", "ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র -জনতা মঞ্চ" ও "৩৬ জুলাই মঞ্চ" ব্যানার নিয়ে একদল ছাত্র-জনতা বঙ্গভবন অভিমুখে যাত্রা করে।

এসময় তারা "নৌকা ডুবছে নদীতে, চুপ্পু কেন গদিতে" , "আমার ভাই কবরে চুপ্পু কেন বাহিরে", "ছাত্রলীগ না জঙ্গিলীগ-জঙ্গিলীগ জঙ্গিলীগ", "সুশীলপনা বন্ধ করো, খুনিদের বিচার করো" ইত্যাদি স্লোগান দেন।


শাহবাগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গত তিনবারের নির্বাচনে ভোট চুরি করে খুনি হাসিনাকে গদিতে বসানোর চেষ্টা করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অপদস্ত করেছিল। তরুণ মেধাবী ছাত্রদের গণরুমের মতো কালচার তৈরী করে জেলখানার চেয়ে নিকৃষ্ট জায়গায় থাকতে দিত, হলের প্রত্যেকটি ক্যান্টিন-দোকানে অন্যায় করে খাওয়াদাওয়া করতো।

বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার এখনো হয় নাই। সর্বশেষ ১৫ জুলাই সুসংগঠিত আন্দোলনে গুন্ডাবাহিনী এনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে। নারী শিক্ষার্থীদের কীভাবে পিটিয়ে তারা উদযাপন করেছিল। শহীদুল্লাহ হলে অস্ত্র নিয়ে তারা হামলা করেছিল। সবাই যখন বলছে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী সংগঠন তাহলে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না কেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল যখন ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলেন তখন কেন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি না করলে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।

রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিনকে দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, হাসিনা পালানোর পরও এখনো কীভাবে চুপ্পু ক্ষমতায় বসে থাকে। মুজিববাদীরা যখন আজকে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তখন আবার চুপ্পু বলছে হাসিনার পদত্যাগ পত্র তার কাছে নাই। আজকের মধ্যেই চুপ্পুকে পদত্যাগ করতে হবে। বিপ্লবী সরকার এলে সকল আইন কানুন নিজের মতো করে সাজায়। এই সরকারকে বলতে চাই আজকের মধ্যেই চুপ্পুকে পদত্যাগ করিয়ে বিপ্লবী সরকার গঠন করতে হবে।


ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদী এ সময় বঙ্গভবন অভিমুখে যাত্রা শুরু করার ঘোষণা দেন।

তিনি সংবিধান বিলুপ্ত করে নতুন সংবিধান প্রণয়নের দাবি জানিয়ে বলেন, এই সংবিধান সংবিধান নয়,এটা আওয়ামীলীগের গঠনতন্ত্র থেকেও খারাপ। এই সংবিধানকে যারা সাজিয়েছে তাদেরকে জনগণ কোনো ম্যান্ডেট দেয়নি তা করার। এই সংবিধান যদি আমরা মানি তাহলে আমরা যারা আন্দোলন করেছি তারা সবাই ফাঁসির আসামি হয়ে যাবো। আমাদের যেসব ভাইয়েরা আজ আহত তারা আবার বিচারের সম্মুখীন হবে। এই সংবিধানের আইন মেনে কেউ আন্দোলন করতে যায় নাই। ড. ইউনুস সরকারকে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। সুশীল এনজিও সরকার এখানে চলবে না। বিপ্লবী সরকার গঠন করতে হবে।

পদত্যাগ পত্র বিতর্কে তিনি বলেন, লক্ষণ সেনের পরে আর কোনো সরকার বাংলা থেকে পালিয়ে যায়নি। পালিয়ে গেলে আবার পদত্যাগ পত্র কোথায়। জীবন বাঁচানো যেখানে ফরজ পদত্যাগ সেখানে বিলাসিতা।

ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বলে কোনো সংগঠন নাই। এটি সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ,খুনি ছাত্রলীগ। এই সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে কোনো কালক্ষেপণ করা চলবে না,নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করতেই হবে।


একই সময় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ পরিষদ নামে একটি ব্যানারে অভিন্ন দাবি নিয়ে বিএনপির কিছু নেতাকর্মীকেও সমাবেশ করতে দেখা যায়।

 

ভোরের আকাশ/মি