ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে মন্তব্য করে বেশ চাপে পড়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। একটি গণমাধ্যমের একজন সাংবাদিককে সাক্ষাৎকারে তার দেওয়া বক্তব্য নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় চলছে। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও ক্ষুব্ধ। অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক উপদেষ্টা গণমাধ্যমের সামনে রাষ্ট্রপতি মন্তব্য নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। রাষ্ট্রপতি ‘মিথ্যাচার’ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবি করে গত সোমবার থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কর্মসূচি শুরু করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন। গতকাল মঙ্গলবারও বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি এবং জাতীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে গণজমায়েত। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবির মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগের ইস্যুটি আলোচনার বাইরে চলে গেছে। গতকাল দুই উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও নাহিদ ইসলাম প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তার বাসভবনে যান। ধারণা করা হচ্ছে, রাষ্ট্রপতির বিতর্কিত বক্তব্যের জেরে তা নিয়ে আইনি পরামর্শের জন্য দুই উপদেষ্টা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেছেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের আড়াই মাসের মাথায় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয় রাষ্ট্রপতির বক্তব্য প্রকাশে আসার পর। গত রোববার (২০ অক্টোবর) মানবজমিন পত্রিকার সাপ্তাহিক রাজনৈতিক ম্যাগাজিন ‘জনতার চোখ’-এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আলাপকালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘আমি শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু আমার কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়তো সময় পাননি।’
ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর সারাদেশে শেখ হাসিনার পদত্যাগের ইস্যুটি টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়। চায়ের দোকান থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ফুটপাত থেকে অফিস-আদালত সর্বত্রই গত দুদিন আলোচনা বিষয় ওই প্রতিবেদন। সরকার পতনের আড়াই মাস পর হঠাৎ করে শেখ হাসিনার পদত্যাগের ইস্যুটি কেন সামনে এলোÑ এ প্রশ্ন বিভিন্ন মহলের। কারণ শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর ৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন বলে জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। রাষ্ট্রপতির এই দ্বিমুখী বক্তব্যে সৃষ্টি হয়েছে ধূম্রজালের।
এর আগে আওয়ামী লীগের কয়েক কর্মীর সঙ্গে ভারতে অবস্থান করা শেখ হাসিনা টেলিফোন আলাপ ফাঁস হয়। সেখানে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেনি। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ও তার মা পদত্যাগ করেননি বলে দাবি করেন। এমন পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার পদত্যাগের প্রকৃত তথ্যের অপেক্ষায় ছিল দেশবাসী। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতির অবস্থান পরিবর্তন নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতার। তার দুই ধরনের বক্তব্য নিয়ে সঠিক কোনো ব্যাখ্যা এখন পর্যন্ত সরকার বা বঙ্গভবন থেকে দেওয়া হয়নি।
তবে প্রতিক্রিয়া, আলোচনা-সমালোচনার মুখে বঙ্গভবন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগকেন্দ্রিক মীমাংসিত বিষয়ে নতুন করে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বিতর্ক সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বিব্রত করা থেকে বিরত থাকার জন্যও সবার প্রতি আহ্বান জানান।
৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
রাষ্ট্রপতিকে অপসারণে পাঁচ দাবিতে আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ, সংবিধান সংশোধন, বিগত তিনটি সংসদ নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধসহ মোট পাঁচ দফা নতুন দাবি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সোয়া পাঁচটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। একই সঙ্গে অবিলম্বে এসব দাবি মেনে নেওয়া না হলে শিগগিরই রাজপথে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
পাঁচ দফা দাবিগুলো হলোÑ এই সপ্তাহের মধ্যে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দীনকে পদচ্যুত করতে হবে। অনতিবিলম্বে ৭২ এর সংবিধান বাতিল করতে হবে। সে জায়গায় ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পক্ষ থেকে নতুন করে সংবিধান লিখতে হবে। এই সপ্তাহের মধ্যে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। তাদেরকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে। জুলাই বিপ্লব ও গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের আলোকে ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই সপ্তাহের মধ্যে নতুন করে রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করতে হবে। এসব নির্বাচনে যারা নির্বাচিত হয়েছিল তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। একই সঙ্গে তারা যেন ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে কোনোভাবেই প্রাসঙ্গিক হতে না পারে ও নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সে জন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটির সংগঠক মনিরুজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগ ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদী শাসন চালিয়েছে। সেই আওয়ামী লীগের নিযুক্ত রাষ্ট্রপতি তার পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন বহু আগেই। এই রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করতে হবে। দেশে বিপ্লবী সরকার গঠন করতে হবে এবং অবশ্যই সন্ত্রাসী বাহিনী আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
গণজমায়েতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, রাষ্ট্রপতিকে এই সপ্তাহের মধ্যেই পদত্যাগ করতে হবে। ছাত্রলীগ-যুবলীগ, মুজিববাদী মিডিয়া-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সকল সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, কার কথা শুনে ও কার চক্রান্তে রাষ্ট্রপতি উচ্চারণ করছেন যে, তার কাছে পদত্যাগপত্র নাই। আমরা ফ্যাসিস্ট চুপ্পুসহ সব ফ্যাসিস্ট দোসরদের বলে দিতে চাই, আমরা যদি বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট ও খুনিদের কোনো উৎপাত লক্ষ্য করি ছাত্র-জনতা ৫ আগস্টের মতো ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিহত করবে।
বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। তারা বিভিন্ন ব্যানারে আজ মঙ্গলবার বিকেলে বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান নেন।
মতিঝিল থেকে গুলিস্তান যেতে রাজউক ভবন পেরিয়ে বঙ্গভবনের সামনের সড়কে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সড়কের পাশের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন তারা। বিক্ষোভকারীরা রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সেøাগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভকারীরা কয়েকটি ব্যানারে বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে বিক্ষোভ করেন। এর মধ্যে ইনকিলাব মঞ্চের ব্যানারে ছাত্ররা, রক্তিম জুলাই’ ২৪-এর ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ব্যক্তিরা, ৩৬ জুলাই পরিষদ ব্যানারে একদল মানুষ, জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদের ব্যানারে একদল মানুষ, ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার মঞ্চের ব্যানারে কিছু মানুষ বিক্ষোভ করছেন। সব মিলিয়ে শতাধিক মানুষ সেখানে বিক্ষোভ করছেন।
তারা স্লোগান দেন, ‘এক দফা এক দাবি, চুপ্পু তুই কবে যাবি’। তাদের ভাষ্য, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন শপথ ভঙ্গ করেছেন। এখন তিনি রাষ্ট্রপতির পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি বিভিন্ন মহলের
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। গত সোমবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় এ দাবি জানান। তিনি বলেন, মিথ্যাচারের জন্য এখনই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ করা উচিত।
আখতার হোসেন বলেন, মহামান্যের চেয়ারে বসে মহা জঘন্য মিথ্যাচার করেছেন রাষ্ট্রপতি পদে আসীন চুপ্পু। যখন শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেল তারপর দেখলাম, তার কাছে নাকি পদত্যাগপত্র দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন এরকম নিউজ আমাদের কাছে আসল। কিন্তু এখন বলছেন তার কাছে দালিলিক কোনো প্রমাণ নেই।
তিনি বলেন, মিথ্যাচারের জন্য চুপ্পু সাহেবের এখনই অপসারণ হওয়া উচিত। এখনই তার পদত্যাগ করা উচিত।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগে বিভিন্ন মহলের দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন ইতোমধ্যে কর্মসূচি শুরু করেছেন। আর বিভিন্ন গণমাধ্যমে লেখালেখি এবং টক শোতে পদত্যাগের দাবি করে যাচ্ছেন বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষ। ইউটিউব চ্যানেলগুলোতেও নিজেদের মত করে রাষ্ট্রপতির দাবি তোলা হচ্ছে। বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর গত সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে মশালমিছিল শেষে সমাবেশ অনুর্ষ্ঠিত হয়। গতকাল মঙ্গলবারও পদত্যাগের দাবিতে নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপদেষ্টা ও সমন্বয়করা যা বললেন
গত দুদিন ধরে রাষ্ট্রপতি নিয়ে নানা ধরনের বিতর্ক হচ্ছে। ‘মিথ্যাচার করেছেন’, এরপর তিনি রাষ্ট্রপতি থাকতে পারবেন কিনা-সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
গত সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরের সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, এটা হচ্ছে রাষ্ট্রপতির শপথ লঙ্ঘনের শামিল। তিনি যদি তার বক্তব্যে অটল থাকেন, তাহলে তার রাষ্ট্রপতি পদে থাকার যোগ্যতা আছে কি না, সেটি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভায় ভেবে দেখতে হবে।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, রাষ্ট্রপতির স্ববিরোধী কথাবার্তা বলার কোনো রকম সুযোগ নেই। যদি তিনি এই বক্তব্যে অটল থাকেন, তাহলে ওনার রাষ্ট্রপতি পদে থাকার যোগ্যতা আছে কি না, সেটা আমাদের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভায় ভেবে দেখতে হবে। এটি উপদেষ্টামণ্ডলীতে আলোচনা হতে পারে। বিষয়টি আলোচনা হওয়ার মতো মনে হচ্ছে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক মাহিন সরকার বিষয়টি নিয়ে বলেন, রাষ্ট্রপতি যে দ্বিমুখী বক্তব্য দিয়েছেন তাতে স্পষ্ট যে তিনি শেখ হাসিনাকে বৈধতা দিতে চান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাষ্ট্রপতির এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে উল্লেখ করে মাহিন বলেন, আমরা অফিসিয়ালি দ্রুতই আমাদের প্রতিক্রিয়া জানাব।
গত সোমবার সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মতো মানুষের বিরুদ্ধে কি করা দরকার, কি ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তার জায়গা কোথায় হওয়া দরকার সেটা বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ নতুন করে নির্ধারণ করবে। চুপ্পুর মতো মানুষ এখনও প্রেসিডেন্টের মতো পদে বসে আছে। তার মতো মানুষ, আজকে তিনি বলছেন শেখ হাসিনার রিজাইন পেপার নাকি তিনি দেখেননি। কোন সাহসে তিনি এ কথা বলতে পারেন?’
গত সোমবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের উদ্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এখনো সময় আছে, বঙ্গভবনের বিলাসিতা ছেড়ে আপনি আপনার নিজের রাস্তা দেখে নিন। ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনার সংবিধান আমরা মানি না; কিন্তু ওই সংবিধানের আপনি শপথ ভঙ্গ করেছেন। যদি আপনি মনে করে থাকেন, ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনাকে আপনি পুনর্বাসিত করবেন, তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন।’
রাষ্ট্রপতির প্রশ্নে আসিফ নজরুলের মতামতের সঙ্গে একমত সরকার
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বিষয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের মতামতের সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন একমত পোষণ করে। এ মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর। গতকাল মঙ্গলবার হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতিকে সরানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে উপ-প্রেসসচিব বলেন, এখন পর্যন্ত উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
আগামীতে রাষ্ট্রপতিকে সরানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, ভবিষ্যৎ বলে দেবে।
ভোরের আকাশ/রন