logo
আপডেট : ২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১৭:১৮
শি-মোদি বৈঠক
পাঁচ বছর পর কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত
অনলাইন ডেস্ক

শি-মোদি বৈঠক

ভারত ও চীনের মধ্যে পাঁচ বছর পর উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। আজ বুধবার, রাশিয়ার কাজান শহরে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে সীমান্ত বিরোধ, বিশেষ করে লাদাখ ইস্যুতে সমঝোতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হবে।

সীমান্ত বিরোধ ও সম্পর্কের অবনতি:
২০২০ সালে লাদাখ সীমান্তে সংঘর্ষের পর থেকে ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। ওই সংঘাতে ২০ জন ভারতীয় এবং ৪ জন চীনা সেনা নিহত হন। এরপর সীমান্তে উত্তেজনা বেড়ে যায় এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্থবির হয়ে পড়ে। তবে সম্প্রতি দুই দেশ সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের দিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সমঝোতার সম্ভাবনা:
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চীনের সঙ্গে একটি সমঝোতা হয়েছে, যার ফলে সীমান্তে স্বাভাবিক টহল কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে। চীনও এই সমঝোতাকে সমর্থন করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই চুক্তির ফলে ভারত-চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়নের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দুই দেশই অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যা ভবিষ্যতে সম্পর্কের নতুন দ্বার উন্মোচন করতে পারে।

বৈঠকের গুরুত্ব:
বৈঠকটি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী বলেন, "এই বৈঠকে সীমান্ত বিরোধ ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হবে, যা দুই দেশের ভবিষ্যত সহযোগিতায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।" বিশ্লেষকরা এই বৈঠককে ভারত-চীন সম্পর্কের নতুন এক মাইলফলক হিসেবে দেখছেন। সর্বশেষ ২০১৯ সালে মোদি ও শি মুখোমুখি হয়েছিলেন, কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি এবং সীমান্ত সংঘাতের কারণে এরপর কোনো বৈঠক হয়নি।

অর্থনৈতিক সম্পর্কের পুনর্গঠন:
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সমঝোতার ফলে চীন ভারতের বাজারে আরও প্রবেশাধিকার পেতে পারে এবং দুই দেশের মধ্যে বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক সম্পর্কের নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে। অতীতে, ভারতের বাজারে চীনা বিনিয়োগে কিছু বাধা ছিল, এমনকি চীনা অ্যাপগুলো নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তবে এখন সেই বরফ গলতে শুরু করেছে বলে অনেকের ধারণা।

মোদি ও অন্যান্য নেতাদের বৈঠক:
ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে মোদি ইতোমধ্যেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেস্কিয়ানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেন সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, যেখানে মোদি মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন। ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়, এবং ভারত শান্তিপূর্ণ সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে প্রস্তাব দেওয়া হয়।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা:
ব্রিকস সম্মেলনে মোদি-শির এই বৈঠক ভারত-চীন কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সীমান্ত সংঘাতের অবসান এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার পুনর্গঠন উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হতে পারে।

 

ভোরের আকাশ/রন