logo
আপডেট : ২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ০৯:৪৬
এখন কী করবে সরকার
নিখিল মানখিন

এখন কী করবে সরকার

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিকে নিয়ে প্রবল চাপে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চায়। তবে রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ না করলে তাকে অপসারণের দাবি জানিয়ে সরকারকে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল। ওইদিন অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে রাষ্ট্রপতির পদচ্যুতির বিষয়টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির নেতারা বিএনপি, জামায়াত ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। বিএনপি ছাড়া অন্য দল দুইটি ছাত্র নেতাদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ইস্যু নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়। আর বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামে আলোচনা হবে আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা জানানো হয়। তবে গতকাল রোববার রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও অপসারণ ইস্যুতে পাশে না থাকার বিষয়টি অনেকটা স্পষ্ট করেছেন বিএনপির মহাসচিবসহ দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতা। বর্তমানে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি ছাড়া রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকার কিভাবে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলবে- সবার মনে এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। একটি গণমাধ্যমের একজন সাংবাদিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তার দেওয়া ওই বক্তব্য নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় চলছে। বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের। তার পদত্যাগ ও অপসারণ দাবির ইস্যুটি জোরালো আলোচনায় আসে গত ২২ অক্টোবর। ওইদিন রাষ্ট্রপতির পদত্যাগে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আর রাষ্ট্রপতির রাষ্ট্রীয় বাসভবন বঙ্গভবনের সামনে চলে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি। রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ বিষয়ে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়। কিন্তু সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার বক্তব্যে পরোক্ষভাবে রাষ্ট্রপতির প্রতি অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। রাষ্ট্রপতির থাকা না থাকা সাংবিধানিক নয়, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। রাষ্ট্রপতি শপথ লঙ্ঘন করেছেন বলে মন্তব্য করেন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। পরবর্তীতে তার এই বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংও সমর্থন জানায়। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে রাষ্ট্রপতির পদচ্যুতির বিষয়টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

এদিকে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার আগেই গত বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যায় বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি ঘিরে দেশে ‘নতুন কোনো সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট’ যেন সৃষ্টি না হয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে সে বিষয়ে নজর দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। বিএনপির এমন বক্তব্যে নড়েচড়ে বসে অন্তর্বর্তী সরকার এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে এবিষয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। রাষ্ট্রপতির পদ থেকে মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণ করার বিষয়ে বিএনপি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত জানায় নি। দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবে দলটি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় সিদ্ধান্ত জানানোর আগেই গতকাল রোববার রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও অপসারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাশে না থাকার বিষয়টি তাদের বক্তব্যে অনেকটা স্পষ্ট করেছেন বিএনপির মহাসচিবসহ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতা।

রাষ্ট্রপতি অপসারণে হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না -মির্জা ফখরুল
রাষ্ট্রপতি অপসারণ ইস্যুতে সরকারকে হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রোববার রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে যুবদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এর আগেও বলেছিলাম গণঅভ্যুত্থানের ফসলকে ঘরে তোলার জন্য বাংলাদেশের বিপ্লবকে যদি সঙ্গত করতে হয় তাহলে কোনোরকম হটকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না, সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। তার জন্য বেশি প্রয়োজন অতি দ্রুত নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কার শেষে নির্বাচন করা প্রয়োজন। একটি সাংবিধানিক রাজনৈতিক শক্তির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’

সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে -সালাহউদ্দিন আহমেদ
সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করার পাঁয়তারা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল রোববার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘নানা ধরনের ষড়যন্ত্র ও সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে। সংবিধানের সংকট যদি হয়, রাষ্ট্রীয় সংকট যদি হয়, রাজনৈতিক সংকট যদি হয়, সেই সংকটের পিছনে কী শক্তি আছে সেইটা আমাদের আগেই অ্যানালাইসিস করতে হবে। বিপ্লবের পরে বিপ্লবের ফসল ছিনতাই হয়ে যায় নাকি সেটা চিন্তা করতে হবে। সুতরাং রাষ্ট্রীয় সংকট যাতে সৃষ্টি না হয়, সাংবিধানিক সংকট যাতে সৃষ্টি না হয়, সেই সংকট সামনে রেখে পতিত ফ্যাসিবাদ যাতে সুযোগ নিতে না পারে সেই বিষয়ে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’

নতুন করে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির চক্রান্ত দেখতে পাচ্ছি -ফারুক

গতকাল রোববার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ এলডিপির প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রাস্তায় ছিলো বিএনপি, ছাত্ররা ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা। যার মাস্টারমাইন্ড ছিলো বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এখন আবার বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ঘোলাটে করার জন্য একটা প্রগতিশীল চক্র চেষ্টা করে যাচ্ছে। তার ইঙ্গিত বহন করে বঙ্গ ভবনে সামনে মিছিল। নতুন করে আরেকটা রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করা চক্রান্ত আমরা দেখতে পাচ্ছি। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অস্থিতিশীল করার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ১২ দলীয় জোটসহ সকলকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

‘রাজনৈতিক ঐকমত্যের’ অপেক্ষায় সরকার -পরিবেশ উপদেষ্টা
রাষ্ট্রপতির পদচ্যুতির প্রশ্নে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে রাজনৈতিক ঐকমত্য হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘এটা একটা বড় সিদ্ধান্ত। এটাতে আমাদের যেমন তাড়াহুড়ো করার সুযোগ নেই, তেমনই অতিরিক্ত বিলম্ব করার সুযোগ নেই। রাজনৈতিক ঐকমত্য যেহেতু গড়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, ওইটা পর্যন্ত আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে।’ গতকাল রোববার সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির বিষয়টা এমন- এখানে গোপনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। যখন একটা সিদ্ধান্ত হবে, সেটা হবে প্রকাশ্যে।’
তিনি বলেন, ‘এখন রাজনৈতিক ঐক্য যত তাড়াতাড়ি হবে, তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। সিদ্ধান্ত কী হবে তা আমি বলতে পারব না। কারণ রাজনৈতিক ঐক্য কোন দিকে যাবে, মতামত কোন দিকে বেশি যাবে- সেটা তো আমি বলতে পারব না। এ মুহূর্তে কারও পক্ষে প্রেডিক করাও সম্ভব না।’

সাংবিধানিক যে জটিলতার শঙ্কা
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদচ্যুতির দাবিতে চলমান আন্দোলন নতুন রাজনৈতিক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অপসারণের প্রেক্ষাপটে কিছু সাংবিধানিক জটিলতা দেখা দিয়েছে। প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি এ পদক্ষেপের বিরোধিতা করে বলছে, এতে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করবেন স্পিকারের কাছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সংসদ বিলুপ্ত এবং স্পিকারও পদত্যাগ করেছেন। এ অবস্থায় রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ রাজনৈতিক সংকট ও সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি করতে পারে। এদিকে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা ভিন্ন ভিন্ন মত দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি পদটি বাংলাদেশে সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ। গণঅভ্যুত্থান এবং পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রপতির থাকা না থাকার বিষয়টিকে রাজনৈতিক বিষয় হিসেবে দেখছে।

সরকারের পক্ষ থেকে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতির থাকবে কি থাকবে না এটি আইনি কিংবা সাংবিধানিক বিষয় নয় এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। রাজনৈতিক সমঝোতা ও জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এর সমাধান হতে পারে। রাষ্ট্রপতির ব্যাপারে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সরকার সবচে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে ‘রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলা।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, ‘রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ বা পদত্যাগের কোনো সাংবিধানিক পথ খোলা নেই। সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে, স্পিকার পদত্যাগ করেছেন। এদিকে সংবিধানও স্থগিত করা হয়নি। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অপসারণের সুযোগ না থাকায়, রাষ্ট্রপতিকে এখন অপসারণ করা হলে, সেটি সংবিধানের বাইরে গিয়ে করতে হবে, যেটি একটি খারাপ নজির হয়ে থাকবে।’

রাষ্ট্রপতির অপসারণ বা পদত্যাগ করলে কিছু জটিলতার দিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, ৫ আগস্টের পরে এই রাষ্ট্রপতি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের শপথ করান এবং তিনি সংসদ ভেঙে দেন। যদি ৫ অগাস্টের পরে আগের সরকারের সংসদ, রাষ্ট্রপতি, স্পিকার সকলকে বাদ দিয়ে ডকট্রিন অব নেসেসিটির বরাত দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের চেতনা নিয়ে সরকার গঠিত হতো, তাহলে আজ এ প্রশ্ন উঠত না।’

রাষ্ট্রপতি না থাকলে নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়োগের ব্যাপারটি কীভাবে করতে হবে এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক হাফিজুর রহমান বলছেন, এ অবস্থায় রাষ্ট্রপতি কীভাবে পদত্যাগ করবেন এবং নতুন রাষ্ট্রপতির নির্বাচনকে ঘিরেই হবে জটিলতা। নতুন সরকারের কিছু কর্মকাণ্ড সংবিধান অনুযায়ী হয়েছে, আবার অনেক কর্মকাণ্ড হয়েছে সংবিধানের বাইরে। ফলে একটা হ য ব র ল বা বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হয়ছে। এখন রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করা হলে, সংসদ না থাকায় সংবিধান অনুযায়ী নতুন কোনো রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করা যাবে না। সেটি একটি সাংবিধানিক ও শাসনতান্ত্রিক শূন্যতা তৈরি করবে এবং একটি খারাপ নজির হয়ে থাকবে। সংবিধানের বাইরে গিয়ে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করতে হলে সকল প্রধান রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, সিভিল সোসাইটি, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, শিক্ষক, আইনজীবী, ও ছাত্র সংগঠনগুলোর কনভেনশন ডেকে নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করতে হবে। এবং পরবর্তী সংসদে সেটিকে বৈধ করিয়ে নিতে হবে।’

ছুটছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতারা
রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের দাবি, সংবিধান বাতিল ও প্রক্লেমেশন অব সেকেন্ড রিপাবলিক ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। সংগঠন দুটির নেতারা গত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করতে ছুটছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার বিকাল ৪টায় ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

জাতীয় নাগরিক কমিটি পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার সেক্রেটারি আরিফুল ইসলাম আদীব জানান, এ সময় রাষ্ট্রপতির অপসারণ বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত তবে প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলবে। সংবিধান বাতিল ও প্রক্লেমেশন অব সেকেন্ড রিপাবলিক ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। এসব ইস্যুতে জাতীয় ঐক্য তৈরিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাবে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ইতোমধ্যে বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন, জামায়াতসহ একাধিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে সংগঠন দুটি।

রবিবার রাজধানীর মালিবাগে ১২ দলীয় জোটের মোস্তফা জামাল হায়দারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন— হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম, আরিফ সোহেল, উমামা ফাতেমা, আব্দুল হান্নান মাসউদ, নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী, সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব।

 

ভোরের আকাশ/রন