৪১তম বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে লেগে গেল সাড়ে চার বছরের বেশি সময়। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর প্রকাশিত এই বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে প্রায় চার লাখ আবেদন জমা পড়ে। দীর্ঘ পরীক্ষা, ফলাফল প্রকাশ এবং পরবর্তী প্রক্রিয়াগুলোর কারণে এত দীর্ঘসূত্রতা। বিসিএস প্রত্যাশীরা এই দীর্ঘ অপেক্ষা কমিয়ে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন। সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) জানিয়েছে, তারা নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময়সীমা এক বছরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যে কাজ করছে, তবে খাতা মূল্যায়ন এবং অন্যান্য কিছু চ্যালেঞ্জের কারণে সময় কমানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয় ২০২১ সালের আগস্টে, যেখানে উত্তীর্ণ হন ২১ হাজার ৫৬ জন। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২১ সালের ২৯ নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের ৭ তারিখ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন কেন্দ্রে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৩ হাজার জন প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ডাকা হয়, যা ২০২৩ সালের জুনে শেষ হয়। চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয় ২০২৩ সালের ৬ আগস্ট। সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ২ হাজার ৪৫৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হলেও, বিজ্ঞপ্তিতে সুপারিশকৃত ৬৭ জন বাদ পড়েছেন।
এত দীর্ঘ প্রক্রিয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পিএসসি সূত্র জানায়, লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় হয়। দুটি পর্যায়ের পরীক্ষকের মধ্যে ২০ শতাংশ বা এর বেশি পার্থক্য থাকলে তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে খাতা পাঠানো হয়। এই প্রক্রিয়া দীর্ঘ হওয়ার ফলে, প্রায় সাত মাস ধরে মৌখিক পরীক্ষা এবং পরবর্তী চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন প্রক্রিয়ায় আরও কয়েক মাস লেগে যায়।
৪১তম বিসিএসে অংশ নেওয়া এক প্রার্থী বলেন, “সাড়ে চার বছরের অপেক্ষা হতাশাজনক। চার বছর আগে শুরু করা বিসিএস প্রস্তুতির প্রেক্ষিতে আজ বন্ধুদের সঙ্গে তুলনা করলে তাদের অনেকেই বেসরকারি খাতে সিনিয়র পদে অবস্থান করছেন।” সাবেক জনপ্রশাসন সচিব মনে করেন, সময় কমাতে যুক্তিসংগত পদ্ধতি অবলম্বন জরুরি।
বিসিএস পরীক্ষায় দীর্ঘসূত্রতার জন্য সমালোচনা বাড়ছে। বিগত বিসিএস পরীক্ষাগুলোতেও একই ধরনের দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগ রয়েছে, যা দক্ষ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার বিচারে দেশের জন্য ক্ষতিকর।
ভোরের আকাশ/রন