logo
আপডেট : ২ নভেম্বর, ২০২৪ ১১:৫২
অভিনন্দন নারী ফুটবলারদের
নিজস্ব প্রতিবেদক

অভিনন্দন নারী ফুটবলারদের

নেপালকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আমাদের নারী ফুটবলাররা। বিশ্বের বুকে আমাদেরকে আরেকবার মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছেন আমাদের নারী ফুটবলাররা। অভিনন্দন জানাই আমাদের এই নারী ফুটবলারদের। আগামীতে এই নারী ফুটবলারদের আরও সফলতা কামনা করছি। আজ এই বিজয়ী নারী ফুটবলারদের সংবর্ধনা দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুধু তাই নয়, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে বিজয়ী বেশে দেশে ফেরার পর দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের হাতে এক কোটি টাকার চেক তুলে দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা।

গত ৩০ অক্টোবর বুধবার কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে মনিকা চাকমা ও ঋতুপর্ণার লক্ষ্যভেদে ২-১ গোলে স্বাগতিকদের হারিয়ে শিরোপা ধরে রাখেন বাংলাদেশের মেয়েরা। ৫২তম মিনিটে মনিকা চাকমা দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান আমিশা কারিকা। ৮১তম মিনিটে ঋতুপর্ণার করা গোলটি আগলে রেখে জয়ের আনন্দে মাতে বাংলাদেশ। দুই বছর আগে গোলাম রব্বানী ছোটনের হাত ধরে এ মাঠেই নেপালকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথম এই ট্রফির স্বাদ পেয়েছিল বাংলাদেশ। দুই বছর পর এবারের কোচ বাটলারের হাত ধরে সেই মুকুট অক্ষত থাকল। এই বিজয় অর্জনের পর আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠেন তারা। মুকুট ধরে রাখার অভিযান সফলভাবে শেষ করে বাংলাদেশ। শুধু এবারই যে এমন বিজয় অর্জন করেছে এই নারী ফুটবলাররা তা আমরা মনে করি না। গত ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে রচিত হয়েছিল নতুন এক ইতিহাস। দক্ষিণ এশিয়ায় মেয়েদের ফুটবলের শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল। বাংলাদেশ জানিয়ে দিয়েছিল মেয়েরা পারেন। প্রমাণিত হয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা ফুটবলে উন্নতি করেছেন এবং করছেন। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে ২০২৪ সালের সাফ নারী ফুটবলেও।

২০২২ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলে মেয়েদের স্বপ্নটি বড় করে দিয়েছিল। দক্ষিণ এশিয়ায় ট্রফি জয়ে আরও ভালো করার অঙ্গীকারই যেন তুলে ধরেছিল। আন্তর্জাতিক খেলায় এমন একটি জয়ের জন্য দেশের ফুটবল ভক্ত ও অনুরাগীরা দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছে। সেই অপেক্ষার অবসান হয়েছিল ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। ৩০ অক্টোবর বুধবার আমরা দেখতে পেলাম, স্বপ্ন থেকে একটুও সরেননি বাংলাদেশের মেয়েরা। এবারের আসরে দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা তহুরা খাতুন। করেছেন পাঁচটি গোল। ভারত ও ভুটানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে তিনি হয়েছিলেন সেরা খেলোয়াড়। ঋতুপর্ণা চাকমা হয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়। দ্বিতীয়বারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলে সাফল্য ধরে রাখলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। আন্তর্জাতিক খেলায় এমন একটি জয়ের জন্য দেশের ফুটবল ভক্ত ও অনুরাগীরা দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছে।

মানতে হবে, মেয়েরা অবিশ্বাস্য ফুটবল খেলেছেন। ফিটনেস ঠিক রাখা, স্কিলের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা, এসব এক দিনে সম্ভব হয়নি। এভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ে যাওয়া, সুন্দর-উপভোগ্য-দাপুটে ফুটবল খেলা সম্ভব হয়েছে দলের মধ্যে বোঝাপড়ায় কোনো ঘাটতি ছিল না বলেই। শতভাগ উজাড় করে খেললে জয় সম্ভব এই বিশ্বাস নিয়েই নেপালের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। আর দেশকে সত্যিকার অর্থে কিছু দিতে চাইলে তা যে সম্ভব, বুধবারের উচ্ছ্বাসই তার প্রমাণ। গোলের খেলা ফুটবল। বাংলাদেশের মেয়েরা মাঠে সুযোগ কাজে লাগাতে পেরেছেন বলেই বিজয়ীর হাসি হেসে মাঠ থেকে ফিরেছেন। এই জয় দেশের ফুটবলেরও। প্রতিপক্ষের মাঠ। মাঠে তাদের নিজেদের দর্শক। আত্মবিশ্বাস ছিল বলেই মাঠে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সৌরভ ছড়িয়ে জয়ের আনন্দ উপভোগ করা সম্ভব হয়েছে।

আমরা নারী ফুটবলারদের এই বিজয় অর্জনের জন্য শুধু অভিনন্দন জানিয়েই ক্ষান্ত করতে চাই না, ভবিষ্যতে উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করছি। এই জয় তাদের জন্য অনেক বড় অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। আমরা আশা করব, নারী ফুটবলারদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে। সরকার সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে সেটাই আমাদের দাবি ও প্রত্যাশা।

 

ভোরের আকাশ/রন