আওয়ামী লীগের আমলে টানা ১৫ বছরে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান। গতকাল শনিবার দুপুরে বাংলাদেশের পাচারকৃত সম্পদের অযৌক্তিক ঋণ ও পুনরুদ্ধারবিষয়ক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
সেমিনারটির আয়োজন করে ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম ও সম্ভাবনার বাংলাদেশ। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ব্যাংক খাত থেকে যে ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার হওয়ার কথা বলেছেন; বাস্তবে তার পরিমাণ আরও বেশি। রাষ্ট্রীয় কাঠামো ব্যবহার করে সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালীরা ব্যাংক খাত ও বাণিজ্যের আড়ালে প্রতি বছরে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। যদিও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে কী পরিমাণ টাকা পাচার হয়েছে এর প্রকৃত হিসাব কোথাও নেই। তিনি বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হলেও প্রক্রিয়াটি খুবই জটিল। যে দেশে অর্থ পাচার করা হয়েছে সেই দেশের সাথে আইনি চুক্তি ও সমঝোতার মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে। রাজনৈতিক, আমলাতান্ত্রিক ও ব্যবসায়িক সংস্কৃতি পরিবর্তন না হলে অর্থ পাচার ও দুর্নীতি বন্ধ হবে না।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘অর্থ পাচার রোধে রাষ্ট্রকেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে’। এ সময় সবাইকে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করেছে সরকার। আগামী দুই বছরের মধ্যে যদি একটা পয়সাও ফেরত আসে তাহলে সেটাও বড় অর্জন হবে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে ঋণ খেলাপির সংস্কৃতি যারা চালু করেছেন, সেই প্রভাবশালীরাই পাঁচতারকা হোটেলে বসে ব্যাংকখাতের নীতি পলিসি তৈরি করতো। আর বাংলাদেশ ব্যাংক সেসব পলিসি শুধু ঘোষণা করতো। গ্রিনওয়াচ ঢাকার এডিটর মোস্তফা কামাল মজুমদারের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন ওয়েস্ট সিডনি ইউনিভার্সিটির এমিরেটস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান চৌধুরী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
ভোরের আকাশ/রন