চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র হিসেবে শপথ নিয়েছেন মহানগর বিএনপিরি সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন। রোববার (৩ নভেম্বর) সকাল পৌনে ১১টার দিকে সচিবালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে শপথ বাক্য পাঠ করান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ।
এছাড়া অনুষ্ঠানে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদসহ দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর (মঙ্গলবার) স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মাহবুবা আইরিন স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি চিঠিতে শপথ গ্রহণ রোববার (৩ নভেম্বর) সকাল ১১টায় নির্ধারণ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এছাড়া এক চিঠিতে ডা. শাহাদাত হোসেনের সম্পত্তির বিবরণ সম্বলিত হলফনামা স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠাতেও বলা হয়।
গত ১৭ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে মেয়রদের অপসারণ করা প্রজ্ঞাপন সংশোধন করায় চসিক মেয়র হিসেবে শপথ নিতে আইনি বাধা পুরোপুরি কেটে যায় ডা. শাহাদাতের।
এর আগে ১ অক্টোবর চট্টগ্রামের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল মোহাম্মদ খাইরুল আমীনের আদালত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের দায়ের করা মামলায় ডা. শাহাদাত হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন আদালত। একইসঙ্গে আগামী ১০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবকে গেজেট প্রকাশ করার জন্য নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনের ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট পাওয়ায় নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ঘোষণা অনুসারে, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মেয়রপ্রার্থী শাহাদাত হোসেন ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছিলেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট। গত ৮ অক্টোবর ইসি শাহাদাত হোসেনকে জয়ী ঘোষণা করে রাতে গেজেট প্রকাশ করেছে। তবে এ সময় নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান করে ফলাফল বাতিল ও পুনরায় নির্বাচনের দাবি করেছিলেন বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ওই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ৯ জনকে বিবাদী করে মামলা করেন ডা. শাহাদাত হোসেন।
এদিকে, মেয়র হিসেবে ডা. শাহাদাত হোসেনের শপথ অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিপুল সংখ্যক চট্টগ্রামের নেতাকর্মী ঢাকায় অবস্থান নেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শপথ গ্রহণ শেষে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারতে করবেন।
এরপর আগামী ৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে সকালে চট্টগ্রামে পৌঁছাবেন দিবেন ডা. শাহাদাত। এদিন দুপুরে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে দলীয় নেতারা ফুল দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানাবেন। সেখান থেকে হযরত আমানত শাহ এবং হযরত বদর শাহ (রহ.) এর দরগাহ জেয়ারত করবেন তিনি। এরপর তিনি নগরের লালদীঘির পাড় এলাকার সিটি করপোরেশনের নতুন ভবনে একটি সভায় অংশ নেবেন। সভা শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন। সেখান থেকে বাদে আসর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে যাবেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দিনভর গোলাগুলি, সংঘর্ষ, হামলার ঘটনার মধ্যে ভোটগ্রহণ শেষে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীকে বিজয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার। এ সময় নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান করে ফলাফল বাতিল ও পুনরায় নির্বাচনের দাবি করেছিলেন বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ওই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ৯ জনকে বিবাদী করে মামলা করেন নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন।
ভোরের আকাশ/ সু