logo
আপডেট : ৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১৪:২০
নীতিনির্ধারকরা গণপরিবহনের ভোগান্তি বোঝেন না
-রোড সেফটি ফাউন্ডেশন
ভোরের আকাশ প্রতিবেদক

নীতিনির্ধারকরা গণপরিবহনের ভোগান্তি বোঝেন না

দেশে গণপরিবহন পরিচালনা সংক্রান্ত নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা গণপরিবহন ব্যবহার করেন না। তাই তারা ভোগান্তি বুঝতে পারেন না। গণপরিবহন সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে এই খাতে শৃঙ্খলা নেই। গতকাল শনিবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। ‘প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা ও কাঠামোগত সংস্কার বিষয়ে জাতীয় সংলাপ আয়োজন উপলক্ষে’ এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় সংলাপের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, গণপরিবহন ৫৩ শতাংশ যাত্রী পরিবহন করে। আর ব্যক্তিগত যানবাহন ১১ শতাংশ যাত্রী পরিবহন করে। অথচ ব্যক্তিগত যানবাহন ৭০ শতাংশ সড়ক দখল করে চলে। এটা সাধারণ মানুষের প্রতি চরম বৈষম্য।

ঘোষণাপত্রে আরও বলা হয়, রাজধানীতে মোটরবাইক ও ব্যক্তিগত যানবাহন নামাতে আইনগত কোনো বাধা নেই। কিন্তু বাস-মিনিবাস নামাতে নানা বাধা রয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সম্পর্কে ঘোষণাপত্রে বলা হয়, এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন প্রশাসনিক ক্যাডার থেকে, যাদের সড়ক বা মোটরযান সম্পর্কিত বাস্তব জ্ঞান থাকে না। বিআরটিএতে সড়ক ও মোটরযান বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তি বা কোনো একাডেমিশিয়ানকে চেয়ারম্যান করার পরামর্শ দিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটিতে যোগ্যতাসম্পন্ন জনশক্তি থাকা এবং বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণে চালক তৈরির প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন করার জন্যও সুপারিশ করা হয়েছে।

ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটির (ডিটিসিএ) সমালোচনা করে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলেছে, মানুষ এই প্রতিষ্ঠান চেনে না; তাদের কার্যকারিতা নেই। ডিটিসিএকে কার্যকর করতে হবে। ফাউন্ডেশনটি আরও বলেছে, সড়ক ও সড়ক পরিবহনের সঙ্গে বিআরটিএ, ডিটিসিএ, বাংলাদেশ পুলিশ, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, এলজিইডি, স্থানীয় সরকার প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সফল হচ্ছে না; দুর্ঘটনাও কমছে না। এই সমন্বয়হীনতা দূর করতে একটি উচ্চপর্যায়ের কো-অর্ডিনেশন বডি তৈরি করতে হবে। রাজধানীতে কোম্পানিভিত্তিক বাস সার্ভিস চালুর পরামর্শ দিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এতে রাজধানীতে ব্যক্তিগত যানবাহনের ব্যবহার নিরুৎসাহিত হবে এবং যানজট কমবে বলে আশা তাদের।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, বিদ্যমান বাস্তবতায় পরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগামী ৭ ও ৮ ডিসেম্বর দুই দিনব্যাপী একটি জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। এ সংলাপ আয়োজনের জন্য দেশের ৩৭ জন বিশিষ্ট নাগরিকের সমন্বয়ে একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ জাহাঙ্গীর, ফেরদৌস খান ও অধ্যাপক হাসিনা বেগম এবং বুয়েট অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক শাহনেওয়াজ রাব্বি, রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান ও যুগ্ম সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম।

 

ভোরের আকাশ/রন