সংবিধান সংস্কার কমিশন সাধারণ নাগরিকদের মতামত ও প্রস্তাবনা গ্রহণের জন্য একটি ওয়েবসাইট চালু করতে যাচ্ছে। আগামী মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হবে এই ওয়েবসাইট, যা জনগণের প্রতিক্রিয়া সংগ্রহের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত। কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ রবিবার (৩ নভেম্বর) জাতীয় সংসদের এলডি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করব না, বরং তাদের লিখিত মতামত ও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানাব।” কমিশন সরকারের কাছে রাজনৈতিক দলের দেওয়া প্রস্তাবগুলো গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করবে, এবং এর ভিত্তিতে সুপারিশ তৈরি করবে।
কমিশন বিশেষজ্ঞ, আইনজীবী, সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধি, তরুণ চিন্তাবিদ, এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের মতামত সংগ্রহের কাজ করবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনা করার পরিকল্পনা রয়েছে। আলী রীয়াজ জানান, আগামী সপ্তাহ থেকেই অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে।
মাহফুজ আলম, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, সংবাদ সম্মেলনে জানান, সরকার কমিশনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে এবং বর্তমান সরকারই সংস্কার বাস্তবায়ন করবে।
আলী রীয়াজ উল্লেখ করেন, “আমরা ২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের বিষয়টি সংবিধানে লিপিবদ্ধ করতে চাই। গণঅভ্যুত্থান না হলে এই কমিশন গঠিত হত না।” তিনি আরও জানান, কমিশনকে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার জন্য বর্তমান সংবিধানের পর্যালোচনা, সংশোধন, সংযোজন, ও পুনর্লিখনের কাজ করতে বলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন, যারা এ কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।
এছাড়া, কমিশন জানায় যে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীদের পরামর্শ গ্রহণ করা হবে না। “যেসব ব্যক্তি, সংগঠন, বা প্রতিষ্ঠান গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডে যুক্ত ছিল, তাদের কাছ থেকে কোনো সুপারিশ গ্রহণ করা হবে না,” বলেন আলী রীয়াজ।
সংবিধান সংস্কারের সাতটি উদ্দেশ্যও প্রকাশ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার এবং ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রতিরোধ নিশ্চিত করা।
ভোরের আকাশ/রন