রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (৪ নভেম্বর) ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে কমিশন প্রধানরা রাষ্ট্রের সংস্কার কার্যক্রমের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে আপডেট দেন এবং কার্যক্রমকে সফলভাবে এগিয়ে নিতে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, বৈঠকে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়িদ চৌধুরী জনমতের ভিত্তিতে সংস্কার উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন। ইতোমধ্যে, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মতামত সংগ্রহ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় এবং জনপ্রশাসনের বিভিন্ন ক্যাডার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা কার্যক্রম পুরোদমে চলছে। কমিশন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে।
পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন জানান, কমিশন ইতোমধ্যে ১০টি সভা এবং অংশীজনদের সঙ্গে চারটি বৈঠক সম্পন্ন করেছে। জনমতের ভিত্তিতে আইন ও বিধি সংশোধনের প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাই চলছে এবং মব নিয়ন্ত্রণে বলপ্রয়োগ পদ্ধতি সংস্কারসহ ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর কিছু ধারা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বৈঠকে জানান, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ, অনুপস্থিত ভোটারদের পোস্টাল ব্যালট এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে ভোটার তালিকার সমন্বয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নারীর নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের জন্যও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান, এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রিয়াজ। তারা জানান, কমিশনগুলোর কার্যক্রম পুরোদমে চলছে এবং জনমতের ভিত্তিতে উন্নয়নের ধাপগুলো সাফল্যের সাথে অতিক্রম করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন। তার ভাষণে তিনি বলেন, এই উদ্যোগের লক্ষ্য একটি নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেশকে পুনর্গঠন এবং জাতিকে টেকসই উন্নয়নের পথে অগ্রসর করা।
ভোরের আকাশ/রন