নারীরা যেসব ক্যানসারে বেশি আক্রান্ত হন, তার মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যানসার অন্যতম। জরায়ুর সবচেয়ে নিচের অংশের নাম সারভিক্স বা জরায়ুমুখ, যা জরায়ু ও প্রসবের পথের মধ্যবর্তী অংশে অবস্থিত। নারীর জননাঙ্গের বিভিন্ন অংশের মধ্যে এই অংশে ক্যানসারের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি।
পিরোজপুরের নাজিরপুরে পঞ্চগ্রাম সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জরায়ু মুখে ক্যান্সার প্রতিরোধে নারী শিক্ষার্থীদের অতি উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে তাদের কে এই টিকা নিতে দেখা যাচ্ছে। বুধবার সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ওই বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর অর্থাৎ ১০ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীদের জরায়ু মুখে ক্যান্সার প্রতিরোধক টিকা প্রদান করা হয়।
অতিরিক্ত সাদা স্রাব, দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব, অতিরিক্ত অথবা অনিয়মিত রক্তস্রাব, সহবাসের পর রক্তপাত, মাসিক পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার পর আবার রক্তপাত, কোমর, তলপেট বা ঊরুতে ব্যথা ইত্যাদি জরায়ুমুখে ক্যানসারের উপসর্গ।
অল্প বয়সে যাঁরা অবাধ যৌনাচারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন বা যাঁদের অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যায়, তাঁদের এই ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি থাকে। ঘন ঘন সন্তান নিলে জরায়ুমুখে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।ইতিমধ্যে জরায়ুমুখে ক্যানসার প্রতিরোধে অতি কার্যকর টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে। সরকার ইতিমধ্যে দেশের স্কুলগামী কিশোরীদের জন্য এই টিকাদান প্রকল্প শুরু করেছে। ১০ বছর বা তার বেশি বয়সী সব মেয়ে ও নারী জরায়ুমুখে ক্যানসার প্রতিরোধে টিকা নিতে পারেন। এই টিকার তিনটি ডোজ নিতে হয়। প্রথম ডোজ যেকোনো দিন নেওয়া যায়। দ্বিতীয় ডোজ প্রথম ডোজের এক মাস পর এবং তৃতীয় ডোজ প্রথম ডোজের ছয় মাস পর।
নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা অফিসের তিনজন কর্মকর্তার মাধ্যমে এ টিকা প্রদান করা হয়।পঞ্চগ্রাম সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবু অধীর রঞ্জন সমাদ্দার বলেন জরায়ু মুখে ক্যান্সার প্রতিরোধে টিকার কথা শুনে নারী শিক্ষার্থীরা প্রথম দিকে ভয় পেলেও তাদেরকে ব্রিফিং দেওয়ার পরে তাদের সাহস আরও বেড়ে যায় এবং আজ তারা অতি উৎসাহ উদ্দীপনায় টিকা নিতে প্রস্তুত হয়।
এদিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জরায়ু মুখে ক্যান্সার প্রতিরোধে নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিদর্শনে এসে নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ মশিউর রহমান বলেন দেখেন আমরা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বয়স হিসাব করলে ১০ থেকে ১৪ বছরের নারীদের এই টিকা দেওয়া হয়।এই উপজেলায়
আজ পর্যন্ত কোন নারী শিক্ষার্থীর টিকা দেওয়ায় কোন ইফেক্ট হয়নি। তবে একটু ভয় পায়। একটু নাড়াচাড়া করলে ভয় পায়। যদি কেউ অসুস্থ থাকে, না খাওয়া কিংবা ক্ষুধা থাকলে তাদেরকে আমরা এই টিকা দেই না। জরায়ু মুখে ক্যান্সার প্রতিরোধ এই টিকে নিলে শিক্ষার্থীদের আর ক্যান্সার হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না।
ভোরের আকাশ/মি