logo
আপডেট : ১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১৪:০১
খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত
আপিল করার অনুমতি
নিজস্ব প্রতিবেদক

খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া ১০ বছরের সাজা স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বিভাগ গতকাল সোমবার এ আদেশ দিয়েছেন। এ সময় আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম, জাকির হোসেন ভূঁইয়া, মাকসুদ উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসিফ হাসান।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় নিম্ন আদালত খালেদা জিয়াকে ৫ বছর কারাদণ্ড দিলেও দুদকের আবেদনে হাইকোর্ট ওই সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে। হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন খালেদা জিয়া। এই আবেদনের শুনানিতে রোববার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী আসিফ হাসান আদালতকে জানান, জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টের কোনো টাকা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আত্মসাৎ করেননি। মামলার নথিপত্র অনুযায়ী দেখা যায় ট্রাস্টের দুই কোটি ৩৩ লাখ টাকা ট্রান্সফার হয়েছে। টাকা অ্যাকাউন্টে জমা আছে। কিন্তু কেউ তা আত্মসাৎ করেনি।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিশেষ জজ আদালত-৫ রায় দেন। রায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এই রায়ের বিরুদ্ধে একই বছর হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। এই আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর ২০১৯ সালে আপিল বিভাগে পৃথক দুটি লিভ টু আপিল করেন খালেদা জিয়া। পৃথক লিভ টু আপিল ৩ নভেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। সেদিন আদালত পৃথক লিভ টু আপিল আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ১০ নভেম্বর তারিখ ধার্য করেন। এর ধারাবাহিকতায় পৃথক লিভ টু আপিল শুনানির জন্য ওঠে।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা করে। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়। অপর চার আসামি হলেন- মমিনুর রহমান, সাবেক এমপি কাজী সলিমুল হক, শরফুদ্দীন আহমেদ এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী। ২০০৯ সালে মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত ছিল।

ওই টাকা দিয়েছিল কুয়েতের আমির। সৌদি আরবের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যম ওই টাকা ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে সোনালী ব্যাংকে প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে জমা হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ১৯৯৩ সালে এই টাকা জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে স্থানান্তর করা হয়।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৬ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় দণ্ড মওকুফ করে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

 

ভোরের আকাশ/রন