সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ করার দাবিতে আগামী ২৪ নভেম্বর রাজধানীর শাহবাগে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে ৩৫ প্রত্যাশী ঐক্য পরিষদ। এদিকে আন্দোলনের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন সংগঠনটির আহ্বায়ক শরিফুল হাসান শুভ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কার্জন হলের সামনে এই ঘোষণা দেন তিনি।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ করা সংক্রান্ত গেজেট এবং ৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির কপি দুধে চুবিয়ে তা দিয়ে গোসল করেন শরিফুল হাসান শুভ। গোসলের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘ ১২ বছর আন্দোলন করেছি। কেউ আমাদের কথা শোনেনি, চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধি হয়নি। অনেক সংগ্রাম করেছি; কুকুরের সঙ্গে শুয়ে শুয়ে অনশন করেছি; মামলা খেয়েছি; জেল খেটেছি। এখন সেইসব স্মৃতি ভুলে সরকারের ৩২ বছরের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে আমরা কমিটি বিলুপ্ত করে দিচ্ছি।
এক প্রশ্নের জবাবে শরিফুল হাসান শুভ বলেন, যদি কেউ ভিন্ন নামে ৩২-কে অযৌক্তিক মনে করে তাহলে তারা আন্দোলন করতেই পারে। তবে এতদিন যে ব্যানারে আন্দোলন চলেছে সেটির বিলুপ্তি ঘটাতে আজকে এই কার্যক্রম।
চাকরিতে প্রবেশের বয়স স্থায়ীভাবে ৩৫ বছর করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল ৩৫-প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ। গত এক যুগ ধরে বিভিন্ন সময়ে তারা এ দাবি নিয়ে রাজপথে নামেন। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের আমলে তা আলোর মুখ দেখেনি।
তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এই দাবি জোরালো হয়। এ নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে ২৪ অক্টোবর চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩২ বছর করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। তবে আন্দোলনকারীরা তা ৩৫ বছর করার দাবিতে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বহাল রাখে।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে প্রবেশে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর করার ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গত সোমবার অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যানসিয়াল করপোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাসমূহের চাকরির যেসব পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বা অনূর্ধ্ব-৩২ বছর উল্লেখ রয়েছে, সর্বত্র ওই বয়সসীমা ৩২ বছর প্রতিস্থাপিত হবে।
প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান স্ব-স্ব নিয়োগ বিধিমালা বা ক্ষেত্রমত ও প্রবিধানমালা বহাল থাকবে বলেও অধ্যাদেশে বলা হয়।
এ অধ্যাদেশ কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোনো অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই অধ্যাদেশের বিধানের সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, উক্তরূপ অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দূর করতে পারবে- এমন ক্ষমতাও নির্বাহী বিভাগকে দেওয়া হয়েছে।
অবিলম্বে এই অধ্যাদেশ কার্যকর হওয়ার কথা তুলে ধরে এতে বলা হয়, আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন, বিধিমালা, প্রবিধানমালা, আদেশ, নির্দেশ বা আইনগত দলিলে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই অধ্যাদেশের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।
ভোরের আকাশ/রন