ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে হামলা চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরবরাহ করা দূর পাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। এটি বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্টের এক বড় নীতিগত পরিবর্তন।
এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ‘আর্মি টেকনিক্যাল মিসাইল সিস্টেম’ (এটিএসিএমএস) নামে পরিচিত। এটি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য এক ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এ ক্ষেপণাস্ত্র ৩০০ কিলোমিটার (১৮৬ মাইল) পর্যন্ত দূরের নিশানায় আঘাত হানতে সক্ষম। এগুলো আর্টিলারি রকেটের তুলনায় অনেক উঁচুতে ওঠে এবং অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছায়। ক্ষেপণাস্ত্রটির এই পাল্লার কারণেই এটি বিশেষত ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
লকহিড মার্টিন কোম্পানি এটিএসিএমএস তৈরি করেছে। এগুলো ট্র্যাকড এম ২৭০ মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম (এমএলআরএস) বা চাকাযুক্ত এম ১৪২ হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম (এইচআইএমএআরএস) থেকে নিক্ষেপ করা হয়। প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্রের দাম প্রায় ১৫ লাখ ডলার।
এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্রে রকেট চালনা যন্ত্রের জ্বালানি ব্যবহার করা হয়। দ্রুতবেগী এই ক্ষেপণাস্ত্রওগুলো ঠেকানো কঠিন। এই ক্ষেপণাস্ত্রে দুটি ভিন্ন ধরনের ওয়ারহেডও বহন করানো যেতে পারে।
প্রথমটি হল বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে হালকা-সাঁজোয়া ইউনিটগুলো ধ্বংস করার জন্য শত শত ছোট বোমা ভরা একটি ক্লাস্টার ওয়ারহেড। পার্ক করা বিমান, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং সেনা জমায়েতে আঘাত হানতে এই ওয়ারহেড ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে ক্লাস্টার ওয়ারহেড কার্যকরী অস্ত্র হলেও এর গুচ্ছ বোমাগুলোর অধিকাংশই অবিস্ফোরিত থেকে যাওয়ার ঝুঁকি আছে। যুদ্ধ থেমে যাওয়ার পরও সে ঝুঁকি বিরাজ করবে। দ্বিতীয়টি হল একটি একক ওয়ারহেড, ২২৫ কেজি ওজনের শক্তিশালী বিস্ফোরক ভরা বোমা; যা বৃহত্তর কাঠামো ধ্বংস করতে ব্যবহার করা হয়। এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র প্রায় কয়েক দশক ধরে রয়েছে। ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধে প্রথম এ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী এর পরিবর্তে পরবর্তী প্রজন্মের ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক ক্ষেপণাস্ত্র’ ব্যবহার করছে। এটি আরও দ্রুতগতির এবং হালকা ওজনের। প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র।
ভোরের আকাশ/রন