বিদেশে বসে কেউ মানবতাবিরোধী অপরাধ করলেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নিতে পারবে- এমন সুযোগ রেখে অধ্যাদেশ জারির উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ট্রাইব্যুনাল চাইলে শুনানির সময় অডিও ও ভিডিও রেকর্ডও রাখতে পারবে। এমন বিধান রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অধ্যাদেশের খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। রাষ্ট্রপতি সই করলে এটি অধ্যাদেশ আকারে জারি হবে।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে গতকাল বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা কক্ষে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ খসড়ায় অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ট্রাইব্যুনাল চাইলে শুনানির অডিও ও ভিডিও রেকর্ড রাখতে পারবে। তবে গণমাধ্যমের জন্য সম্প্রচারের কোনো ব্যবস্থা থাকবে না।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বাংলাদেশের বাইরে অপরাধ করলে ট্রাইব্যুনালে আমলে নেওয়া যাবে। এতদিন শুধু বাংলাদেশের ভেতরে সংঘটিত অপরাধকে আমলে নিতে পারত ট্রাইব্যুনাল।
সেরকম ক্ষেত্রে আসামি চাইলে বিদেশ থেকে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ট্রাইব্যুনাল রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করতে পারবে কিনা, এই প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিষয়টা নিয়ে আইন উপদেষ্টা আপনাদের সঙ্গে কথা বলবেন।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুবনাল গঠন করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। এখন ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো দমন পীড়নকে ‘গণহত্যা’ বিবেচনা করে এ আদালতে বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এর অংশ হিসেবে প্রসিকিউটরদের বদলে ফেলার পর নতুন তিন বিচারককে দায়িত্ব দিয়ে ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়েছে। গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে সারা দেশে ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ ৫৬টি অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন অফিসে জমা পড়েছে।
এর মধ্যে দুটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার পরিবারের সদস্য ও দলের শীর্ষ নেতাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
গত ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে সেখানেই আছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ভারতের কাছে তাকে ফেরত চাওয়া হবে বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
ভোরের আকাশ/রন