logo
আপডেট : ২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:৫৪
নির্বাচনের পথে যাত্রা নতুন সিইসি নাসির উদ্দীন
শিপংকর শীল

নির্বাচনের পথে যাত্রা
নতুন সিইসি নাসির উদ্দীন

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সরকারের অবসরপ্রাপ্ত সচিব এএমএম নাসির উদ্দীন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার সাংবিধানিক ক্ষমতা বলে তাকে এই পদে নিয়োগ দিয়েছেন। একইসঙ্গে আরও চার নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয়। এই নির্বাচন কমিশন নিয়োগের মাধ্যমে দেশ নির্বাচনের পথে যাত্রা শুরু করলো।

নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দীন বিসিএস ১৯৭৯ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। তিনি জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। তিনি ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে অবসরে গেছেন। অন্য চার নির্বাচন কমিশনার হলেন- অতিরিক্ত সচিব (অবসরপ্রাপ্ত) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, জেলা ও দায়রা জজ (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুর রহমানেল মাসুদ, যুগ্ম সচিব (অবসরপ্রাপ্ত) বেগম তহমিদা আহমদ এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

এর আগে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে আইন অনুযায়ী, গত ২৯ অক্টোবর আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি যাচাই-বাছাই করে ১০ জনের একটি তালিকা গত বুধবার রাষ্ট্রপতির দপ্তরে পাঠান। রাষ্ট্রপতি তাদের মধ্য থেকে একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং চার জনকে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিয়েছেন। এদিকে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ পাওয়া কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন গত ৫ সেপ্টেম্বর একযোগে পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে প্রায় সাড়ে তিন মাস নির্বাচন কমিশন শূন্য ছিল।

নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দীন বলেছেন, মানুষ যাতে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবে। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ২০১৪ সাল থেকে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। গত জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে অনেক মানুষ প্রাণ দিয়েছে। এই আন্দোলনের মূল বিষয়ই ছিল ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা। এত মানুষের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা সম্ভব নয়। সে জন্য সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাব।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দীন জানান, তিনি প্রথমে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। এরপর পরিকল্পনা বিভাগের সদস্য হয়েছিলেন। তিনি বিদ্যুৎ-জ্বালানি এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। ২০১০ সালের জুলাই মাসে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন তিনি।

নাসির উদ্দীন উল্লেখ করেন, সচিব হিসেবে তিনটি মন্ত্রণালয় পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগোতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করি। তিনি মনে করেন, নির্বাচন কমিশনের জন্য বহুরকম চ্যালেঞ্জ থাকবে; সামনে আরও অনেক চ্যালেঞ্জ আসবে। সেটা বিবেচনায় রেখেই নতুন নির্বাচন কমিশন কাজ করবে। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের বিষয়ে নানা রকম আলোচনা চলছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দীন বলেন, এ নিয়ে আগাম কিছু বলা যাবে না। কারণ, বিভিন্ন দল নিয়ে নানা আলোচনা রয়েছে। ফলে সময় হলে বিষয়গুলো পরিষ্কার হবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদের জন্য বিএনপি যে দুজন সাবেক সচিবের নাম প্রস্তাব করেছিল, তাদের মধ্যে এ এম এম নাসির উদ্দীন নিয়োগ পেলেন। তবে নাসির উদ্দীন বলেন, কখনো চিন্তাও করেননি যে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাবেন। ফলে এই মর্যাদা তিনি রাখার চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, তিনি সততার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। তার নেতৃত্বাধীন নতুন নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবে। তারা তা করতে পারবেন বলে তিনি মনে করেন।

 

ভোরের আকাশ/মি