জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শনিবার (২৩ নভেম্বর) সাত দফা দাবিতে সমাবেশ করেছে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ। সমাবেশে নেতারা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের চলাচল নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
সাত দফা দাবি
সমাবেশে সংগঠনের পক্ষ থেকে উত্থাপিত সাত দফা দাবিগুলো হলো:
১. নীতিমালা অনুযায়ী ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের নিবন্ধন, চালকদের লাইসেন্স ও রুট পারমিট প্রদান।
২. কারিগরি ত্রুটি সংশোধন করে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের আধুনিকায়ন।
৩. ব্যাটারিচালিত যানবাহন চালক ও শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও চিকিৎসার নিশ্চয়তা।
৪. বিদ্যুৎ চুরি ও অপচয় রোধে চার্জিং স্টেশন স্থাপন।
৫. সড়কে বিশৃঙ্খলা ও দুর্ঘটনা এড়াতে পৃথক সার্ভিস রোড বা বাই লেন নির্মাণ।
৬. ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাটারিচালিত যানবাহন জব্দ বন্ধ ও পূর্বে জব্দকৃত যান ও ব্যাটারি ফেরত দেওয়া।
৭. সব শ্রমিকের জন্য আর্মি রেটে রেশন, পেনশন ও বিনা মূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা।
সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি জালাল আহমেদ বলেন, “দেশজুড়ে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের সঙ্গে যুক্ত। তারা কোনো সরকারি সাহায্য ছাড়াই জাতীয় অর্থনীতিতে বছরে ২ লাখ কোটি টাকার অবদান রাখছেন। এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে।” তিনি দ্রুত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সংগঠনের আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন বলেন, “১২ বছর ধরে আমরা নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানাচ্ছি। নীতিমালা বাস্তবায়ন না করে শ্রমিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। এভাবে শ্রমিকদের জীবিকা ধ্বংস করা চলবে না।”
গত ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট ঢাকার সড়কে তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন এবং এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।
এর প্রতিবাদে ২০ নভেম্বর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ চালিয়ে আসছেন ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকরা। শুক্রবার জুরাইনে তাদের সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ফলে দুটি ট্রেন আটকা পড়ে।
রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের নেতারা দ্রুত তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “নীতিমালা ও সমাধান ছাড়া নিষেধাজ্ঞা শ্রমজীবী মানুষের জীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে।”
ভোরের আকাশ/রন