আগামীকাল ২৫নভেম্বর(সোমবার) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ৩৫ বছরে পদার্পন করছে। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত নতুন প্রজন্মের স্বাধীনতার পর এবছর ভিন্ন আলোকে উদযাপিত হচ্ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। ৫ই আগস্ট পরবর্তী সংকটময় মুহূর্তেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে স্বমহিমায় এগিয়ে চলেছে, তার ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে প্রতিষ্ঠানটি নিঃসন্দেহে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের স্পিরিটের প্রতিফলন এবং অভ্যুত্থানের চাওয়া-পাওয়ার বাস্তবায়ন হবে বলে প্রত্যাশা সকলের।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস যথাযথভাবে পালনের লক্ষ্যে এ বছর ভিন্ন মাত্রার কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-সকাল ০৯.৩০ মিনিটে শহিদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ, সকাল ০৯.৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, পরে মুক্তমঞ্চে বিভাগ ও ডিসিপ্লিনসমূহের গত বছরের অর্জন ও আগামী বছরের পরিকল্পনা উপস্থাপনার ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন, সকাল ১০.০০ মিনিটে কেক কাটা অনুষ্ঠান, সকাল ১০.১৫ মিনিটে আলোচনা সভা, সকাল ১০.৪০ মিনিটে মুক্তমঞ্চে গত বছরের কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষার্থী ও সংগঠনসমূহকে সম্মাননা প্রদান, বাদ জোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল ও সুবিধাজনক সময়ে মন্দিরে প্রার্থনা, সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া ক্যাম্পাসের মেইন গেট, রাস্তা, শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসনিক ভবন, উপাচার্যের বাসভবন, ক্যাফেটেরিয়া, লাইব্রেরি ভবন, একাডেমিক ভবন ও হলসমূহ আলোকসজ্জা প্রভৃতির আয়োজন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে রয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আপামর মানুষের নিরলস প্রচেষ্টা ও ত্যাগ। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর ১৯৮৭ সালের ৪ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসংক্রান্ত সরকারি সিদ্ধান্ত গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। ১৯৮৯ সালের ৯ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৯৯০ সালের জুলাই মাসে জাতীয় সংসদে ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-১৯৯০’ পাস হয়, যা গেজেট আকারে প্রকাশ হয় ওই বছর ৩১ জুলাই। এরপর ১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষে ৪টি ডিসিপ্লিনে ৮০ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয়। ১৯৯১ সালের ৩০ আগস্ট প্রথম ওরিয়েন্টেশন এবং ৩১ আগস্ট ক্লাস শুরুর মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমের সূচনা হয়। একই বছরের ২৫ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া শিক্ষা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। প্রতিবছর ২৫ নভেম্বর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৯টি ডিসিপ্লিনে ৮ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছেন।
এদিকে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০২৪ উপলক্ষ্যে সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম। এক শুভেচ্ছা বাণীতে তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশে নতুন আবহে গড়ে উঠবে প্রাণের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয় হবে একটি ইমপ্যাক্টফুল বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে যে গবেষণাগুলো হবে, তা দেশের উন্নয়নে এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভূমিকা রাখবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এমনভাবে দক্ষ হয়ে উঠবে, তারা যেখানে যে কাজই করুক-তারা তাদের একটি গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে সক্ষম হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন এমনভাবে পরিচালিত হবে, যেন তা সমাজের এবং জাতির টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে এজন্য সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
ভোরের আকাশ/মি