অনিয়ম-দুর্নীতির আতুরঘর বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে (শেবাচিম) হাসপাতালে এই প্রথমবার পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদার কর্মকর্তা একেএম মশিউল মুনিরকে পরিচালক নিয়োগ দিয়ে গত ৭ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই সেনা কর্মকর্তা সোমবার (২৫ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে শেবাচিম হাসপাতালে দায়িত্বগ্রহণ করেছেন, তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন হাসপাতালে কর্মরত কর্মকর্তাসহ কর্মচারীরা। শেবাচিমে পরিচালক হিসেবে সেনা কর্মকর্তার নিয়োগপ্রাপ্তি ও যোগদানের মধ্যেদিয়ে বরিশালবাসীর প্রত্যাশা কিছুটা হলেও পূরণ হয়েছে। বহুমাত্রিক সমস্যায় জর্জরিত দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র চিকিৎসা সেবাদান কেন্দ্রটি পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগ এনে দীর্ঘদিন ধরে এখানে সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তাকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানানো হয়। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের গত ১৬ বছরে কজন ব্যক্তি নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি করাসহ স্বাস্থ্যসেবার মান তলানিতে নিয়ে আসা এবং হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ভঙ্গুর করে তোলায় সংক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বরিশালবাসী। চিকিৎসা অবহেলায় রোগী মৃত্যু এবং স্বজনেরা প্রতিবাদ করলে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের হামলার প্রেক্ষাপটে জনমনে ক্ষোভ থেকে শেবাচিমে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়টিকে আরও জোরালো রুপ দেয়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তনের পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দও অনুরুপ দাবি জানিয়ে আসছিলেন প্রফেসর ড. মো. ইউনূস সরকারের কাছে।
বরিশাল তথা গোটা দক্ষিণাঞ্চলবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণে শেবাচিমে সেনা কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিয়ে প্রশংসায় ভাসছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ইউনূস সরকারের এমন ইতিবাচক সিদ্ধান্ত বরিশালবাসীর জন্য মঙ্গলকর এবং আর্শিবাদস্বরুপ বলছে অভিজ্ঞ মহল। জনাকাঙ্খা উপলব্ধি করে সরকারের তরফ থেকে আসা এই সিদ্ধান্ত একমাত্র সরকারি সেবাদান কেন্দ্রটিকে আগামীতে আধুনিকতায় রুপ দেওয়াসহ প্রান্তিক এই জনপদে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার সুযোগ রয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র বলছে, ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এশিয়া মহাদেশের সর্ববহৎ এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের শাসনামলে অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। বিশেষ করে ২০১৪ সালে অর্থাৎ আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসলে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত অন্তত তিনজন পরিচালক হাসপাতালে ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে সেবাপ্রত্যাশীদের খাবারের অর্থ আত্মসাৎসহ উন্নয়ন বরাদ্দের অর্থ লোপাট এবং নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ আছে। পাশাপাশি জনগণের অর্থে বেতন নিয়ে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের লেজুরবৃত্তি করাসহ সেবার বিপরিতে রোগীদের জিম্মি করার মতো গুরুতর অভিযোগ পাওয়া যায়।
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের আমলে যারাই শেবাচিম হাসপাতাল এবং কলেজে নিয়োগ পেয়েছেন, তাদের প্রত্যেককে বরিশালের কথিত অভিভাবক ও শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর পদধুলা নিয়ে এসেছিলেন। হাসানাত আব্দুল্লাহ দীর্ঘ সময়জুড়ে ছিলেন, শেবাচিম হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি। এবং তার সিদ্ধান্তে নির্ধারিত হতো, শেবাচিম হাসপাতালে পরিচালক হিসেবে কে আসবেন।
অভিযোগ আছে, আওয়ামী লীগের আমলে অযোগ্য ব্যক্তিদের রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ দিয়ে লুটপাটের ক্ষেত্রফল তৈরি করা এবং স্বাস্থ্যসেবার মান তলানিতে চলে আসা হয়, যা নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ ছিলেন বরিশাল সদর আসনের এমপি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামীম। কিন্তু তিনি বর্ষীয়াণ আওয়ামী লীগ নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর সাথে রাজনৈতিক ক্ষমতা ও প্রভাবে পেরে উঠছিলেন না। গত বছরের ১২ জুন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের বিতর্কিত নির্বাচনে আবুল খায়ের ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত নৌকাপ্রতীক নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হলে হাসানাত আব্দুল্লাহর স্থানীয় রাজনীতিতে ক্ষমতা-প্রতিপত্তি কমে আসে। হাসানাত এবং আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ সম্পর্কে আপন ভাই হলেও তাদের মধ্যেকার সাপে-নেউলে সম্পর্ক ছিল। পরবর্তীতে চলতি বছরের শুরুর দিকে জাহিদ ফারুক শামীম দ্বিতীয়বারের মতো সদর আসনে সাংসদ নির্বাচিত হয়ে একই মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব নেওয়ার পরে হাসানাত আব্দুল্লাহকে সরিয়ে তাকে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি করা হয়।
জাহিদ ফারুকের অনুসারীদের অভিযোগ ছিল, অথর্ব হাসানাত আব্দুল্লাহ শেবাচিম হাসপাতালে নিজের আধিপত্য ধরে রাখাসহ নিয়োগ বাণিজ্য এবং সরকারি বরাদ্দের অর্থ লুটতে পছন্দসই ব্যক্তিদের শেবাচিমের শীর্ষ চেয়ারে বসাতে নিয়োগের আগে প্রতিবারই সুপারিশ রাখেন। এবং তার সুপারিশপ্রাপ্তরাই নিয়োগ পেয়ে পরবর্তীতে পরিচালক হয়ে এসে আওয়ামী লীগের লেজুরবৃত্তি করাসহ হাসানাত আব্দুল্লাহকে তৈলমর্দন করে স্বাস্থ্যসেবার বারোটা বাজিয়ে দেন।
এদিকে শেবাচিম হাসপাতালে পরিচালক হিসেবে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার দাবিটি ছিল দীর্ঘদিনের, যা নিয়ে ইতিপূর্বে কয়েক দফা বরিশালের সুশীলমহল বিভিন্ন কর্মসূচি পালনপরবর্তী সরকারের হস্তক্ষেপও কামনা করেছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ ক্ষমতার আমলে তাতে কোনো সুফল আসেনি।
সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তনের পর অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতাসহ স্বৈরাচারের লেজুরবৃত্তি করে স্বাস্থ্যসেবার দৈন্যদশা তৈরি করার অভিযোগে শেবাচিমের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলামের পদত্যাগ দাবি করে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন সকাল-বিকাল হাসপাতালে অবস্থান নিয়ে রোগীদের সার্বিক স্বাস্থ্য সেবাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উৎসাহিত করা এবং আওয়ামী লীগের দোষরদের নিহ্নিত করে ব্যবস্থাগ্রহণে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এনিয়ে কদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সাথে আওয়ামী লীগ মনস্কা শেবাচিম হাসপাতালে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পরিচালক পদত্যাগ না করলেও ৩১ আগস্ট হাসপাতালের ১২ চিকিৎসককে অতীত নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য দোষারোপ করে তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছিলেন, মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট সুদীপ কুমার হালদার, আবসিক সার্জন মাসরেফুল ইসলাম সৈকত, মেডিকেল অফিসার শিরিন সাবিহা তন্নী, ইন্টারন্যাল মেডিকেল এ.এস.এম. সায়েম, হাসপাতালের সাবেক পরিচালক বাকির হোসেন, সাবেক অধ্যক্ষ এসএম সরোয়ার, উপাধ্যক্ষ জিএম নাজিমুল হক এবং সহকারী অধ্যাপক সৌরভ সুতার স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের শাসনামলে সরকারি অর্থ লুটপাট করেছেন। তাদের ক্যাম্পাস ও হাসপাতালে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া ইন্টার্ন চিকিৎসক মহসীন বিভা, আরিফুজ্জামান ইমন, সাদমান বাকির সাবাব, প্রীতম দেবনাথ, অর্ঘ্য বিশ্বাস এবং আসিফুল ইসলামকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে ছিলেন শিক্ষার্থীরা।
সূত্র জানায়, এই আল্টিমেটামের পরে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাগ্রহণ না করায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলামকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে চাপের মুখে ফেলে দেন। এনিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন জোরালো রুপ ধারণ করলে পরিচালক পদ থেকে সাইফুল ইসলাম গত ২৯ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করে চেয়ারটি ছেড়ে দেন। তবে এক্ষেত্রেও তিনি ছলনার আশ্রয় নিয়েছিলেন, সাদা কাগজে তিনি ‘পদত্যাগ’ লিখে স্বাক্ষর করলেও পরবর্তীতে অফিসিয়ালি প্রকাশ পায় পরিচালক ছুটিতে গেছেন। সেই ছুটি কাটানোর মধ্যেই তাকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বদলিসহ অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি) করা হয়। এবং পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলামকে পরবর্তী দুই কর্মদিবসের মধ্যে বদলিস্থান অর্থাৎ নতুন কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ০৯ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির আদেশে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ পার-২ শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. আবু রায়হান দোলন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ডা. সাইফুল ইসলামকে ওএসডির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছিল।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, সাইফুল ইসলামকে পরিচালক পদ থেকে সরিয়ে নেওয়ার পর সেখানে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে উপ-পরিচালক ডা. এসএম মনিরুজ্জামান শাহীনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপরে শেবাচিম হাসপাতাল পরিচালনায় সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি বরিশালে সর্বমহলে তুমুল আলোচনায় প্রাধান্য পায়। বিশেষ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরফ থেকে একই দাবি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জানানোয় সেনা কর্মকর্তা নিয়োগ প্রসঙ্গটি আরও জোরালো রুপ নেয়।
বরিশালবাসীর প্রত্যাশা পূরণে অগ্রাধিকার দিয়েছে ড. মো. ইউনূস সরকার, কিছুটা বিলম্ব হলেও শেবাচিমে একজন সেনা কর্মকর্তার নিয়োপ্রাপ্তির মধ্যদিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম জনপদের মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালকে আস্থার জায়গায় নিয়ে যেতে চাইছে। ৭ নভেম্বর রাতে এ সংক্রান্তে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করেলেও নতুন পরিচালক
সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মশিউল মুনিরের কর্মস্থলে যোগদানে কিছুটা বিলম্বিত হয়।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র শেবাচিম হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে রোগীদের রাখার স্থান সংকট রয়েছে। এর মধ্যেই ২০২১ সালের ১৩ এপ্রিল বরিশাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ টেকনোলজির উপ-পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম শেবাচিমে পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। এবং গত তিন বছর নানা অপকর্ম করাসহ আর্থিক সুবিধা নিয়ে হাসপাতালের নতুন ভবনের নিচতলার অর্ধেকাংশ বেসরকারি একটি ব্যাংককে অনিয়তান্ত্রিকভাবে বরাদ্দ দেন। অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি হাসপাতালের অংশবিশেষ ভাড়া দেওয়া নিয়ে খোদ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে প্রায়শ কানাঘুষা শোনা গেলেও ইস্যুটি নিয়ে এখন অনেকেই প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন।
কর্মচারীরা অভিযোগ করেছেন, হাসপাতালের সরকারি কোনো কর্মচারীর বেতন বা লেনদেন সেই ব্যাংকে হয় না। চুক্তিভিত্তিক নেওয়া কিছু কর্মচারীর বেতন সেখানে দেওয়ার কথা থাকলেও, সেই নিয়োগেও অনিয়ম করা হয়। ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম গত কয়েক বছরে চুক্তিভিত্তিক যাদের নিয়োগ দিয়েছেন, তাদের মধ্যে বেশিরভাগের বাড়িই তার নিজ উপজেলা বরিশালের আগৈলঝাড়ায়। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে এ মেডিকেলে এলেও, সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, সাবেক সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত এবং সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারীদের বিভিন্ন ধরনের কাজে সম্পৃক্ত রেখে সিন্ডিকেট বানিয়ে নিজের চেয়ার শক্তপোক্ত করতে চেয়েছিলেন।
মূলত সরকারি কর্মচারী হয়ে রাজনৈতিক দলের লেজুরবৃত্তি করাসহ বহুমুখী অপকর্মের অভিযোগে সাইফুল ইসলামের পদত্যাগ এবং ওই চেয়ারে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাকে নিয়ে আসা দাবির প্রেক্ষাপটে জনাকাঙ্খার প্রতিফলন দেখা গেছে। বরিশালবাসীর প্রত্যাশা পূরণে সেনা কর্মকর্তা একেএম মশিউল মুনিরকে নিয়োগ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
দীর্ঘ সাধনার পরে শেবাচিম হাসপাতালে প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা নিয়োগ পেয়েছেন এবং আনুষ্ঠানিভাবে যোগদান করার খবর বরিশাল তথা গোটা দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য স্বস্তির বলে মনে করছেন খোদ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, সেনাবাহিনীর ওপর দেশের মানুষের আস্থা আছে, তারা অনিয়ম-দুর্নীতি বরদাস্থ করেন না। সুতরাং একজন সেনা কর্মকর্তাই পারবেন এই অসুস্থ জরাজীর্ণ ভঙ্গুর হাসপাতালে অনিয়ম-দুর্নীতি রোধ করে জনকল্যাণমুখী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ার পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্যসেবার অধিকার নিশ্চিত করতে।
সুশীলমহলসহ সাধারণ মানুষ বলছে শেবাচিমে সেনা কর্মকর্তার যোগদানের মধ্যদিয়ে বরিশালে স্বাস্থ্যসেবার নতুন দ্বার উন্মোচিত হতে যাচ্ছে। কর্ম দক্ষতার কারণে একাধিক পদকপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তা শেবাচিম হাসপাতালের সকল ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করাসহ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি মানুষের আস্থা ও ভরসাস্থলে পরিণত করতে সক্ষম হবেন। অবশ্য অতীত অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে নতুন পরিচালক কোনো রূপ মন্তব্য না করলেও শেবাচিমে স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন কী ভাবে ঘটানো যায়, সেই বিষয়টিকে বেশিমাত্রায় গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।’
ভোরের আকাশ/মি