ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম তার কোম্পানির প্লট বিক্রি করে ৭০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে ট্রেজারি বন্ডের নামে ৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা; বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ দেখিয়ে ৪০০ কোটি টাকা এবং রি-ইন্স্যুরেন্সের অর্থও তিনি আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা গেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনে দায়ের করা অভিযোগ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মোরশেদ আলম মূলত ব্যবসায়ী; কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার ছত্রছায়ায় হয়ে উঠেছিলেন ‘রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব’। নোয়াখালী-২ আসন থেকে আওয়ামী টিকিট পেয়ে তিনবার হয়েছিলেন এমপি। এর আগে তিনি শেখ হাসিনার ‘টিনের বাক্সে’ দান করেন একশ’ কোটি টাকা। আওয়ামী লীগের ডোনার মোরশেদ আলম ছোট ভাই মোহাম্মদ জসিমউদ্দিনকে বিনা নির্বাচনে বসান এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট পদে। এভাবে তিনি ব্যবসায়ী কমিউনিটিতে প্রতিষ্ঠা করেন নিজের আধিপত্য।
মোরশেদের মালিকানাধীন বীমা প্রতিষ্ঠানের নাম ‘ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড’। ১৯৮৫ সালের ২৩ এপ্রিল কিছু উদ্যোমী ব্যবসায়ীর পরিকল্পনায় প্রতিষ্ঠা লাভ করে প্রথম বেসরকারি বীমা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লি.। ৬১ লাখ গ্রাহক এ বীমা কোম্পানিটির পলিসি হোল্ডার। যথাসময়ে গ্রাহকের বীমা দাবি পরিশোধসহ প্রতিষ্ঠানটি যখনই বীমা সেক্টরে আস্থার জাযগা তৈরি করে নেয়- তখনই এর ওপর লোভারতুর চোখ পড়ে বেঙ্গল গ্রুপের মালিক মোরশেদ আলমের। তিনি মরিয়া হয়ে ওঠেন প্রতিষ্ঠানটিকে কব্জায় নিতে। প্রথমে তিনি শেয়ার কেনেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার দু’বছরের মাথায় ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বোর্ডে প্রবেশ করেন। সাধারণত, ২ শতাংশ শেয়ার থাকলে পরিচালনা পর্ষদে নাম থাকার কথা। অথচ ৮ শতাংশ শেয়ার থাকা সত্ত্বেও উদ্যোক্তা পরিচালক আহম্মেদ আলীর পরিবারকে অবান্তর জটিলতা সৃষ্টি করে মোরশেদ আল কৌশলে পরিচালনা পর্ষদের বাইরে রাখেন। এ ছাড়া বোর্ডের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও পরিচালক মো. মতিউর রহমান এবং মো. মজিবুর রহমানকে চেয়ারম্যান হতে দেননি। তারা যাতে ন্যাশনাল লাইফে কোনো ধরনের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারেন সে লক্ষ্যে তুচ্ছ কারণে দুদককে দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করান।
শুধু কি ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স? এর বাইরেও বেঙ্গল গ্রুপের মালিক মোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে রয়েছে টেলিভিশন দখল, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি দখল, জায়গা-জমি দখল, বেনামি প্রতিষ্ঠান খুলে সেটিকে ‘শতভাগ বিদেশি বিনিয়োগ’ দেখিয়ে নানামাত্রিক সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ, আমদানি-রপ্তানির নামে অর্থ পাচার, শুল্ক ছাড়ের সুবিধা নিয়ে প্লাস্টিক দানা (রেজিন) আমদানি করে চোরাই বাজারে বিক্রি, জাল-জালিয়াতি, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে টানা ১১ বছর কব্জায় রেখে ইচ্ছে মতো লুটপাট, প্রতিষ্ঠানের বোর্ড সদস্যদের কোণঠাসা করতে দুদককে দিযে মামলা দায়ের, পর্যাপ্ত শেয়ার থাকা সত্ত্বেও বোর্ডে ঢুকতে না দেয়া, একই সঙ্গে একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও চেয়ারম্যান পদ কব্জায় রাখাসহ বহুমাত্রিক অপরাধের অভিযোগ।
বর্তমানে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সে মোরশেদ আলমসহ ১৭ জন পরিচালক রয়েছেন। চেয়ারম্যান মো. মোরশেদ আলম ছাড়া অন্যরা হলেন- ভাইস চেয়ারম্যান তাশমিয়া আমবারীন; পরিচালক মিসেস বিলকিস নাহার; এএসএম মঈনুদ্দীন মোনেম; এয়ার কমোডর (অব.) মো. আবু বকর (এফসিএ); ফারজানা রহমান; মিসেস লতিফা রানা; মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী; মিসেস কাজী মাহমুদা জামান; ড. শামীম খান; মো. মতিউর রহমান; মো. মজিবুর রহমান; প্রকৌশলী আলী আহমেদ; মাশফিকুর রহমান; মিস নাহরীন রহমান; জাকির আহমেদ খান ও ইফতেখার আলী খান।
পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পর মোরশেদ আলম এবং তার সন্তানরা ন্যাশনাল লাইফে মেতে ওঠেন বহুমাত্রিক দুর্নীতিতে। নানাভাবে আত্মসাৎ করেন কোম্পানির টাকা। যেমন রাজধানীর পান্থপথে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির দেড় বিঘা আয়তনের একটি প্লট ছিল। প্লটটি তিনি বিক্রি করেন প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকায়। অথচ দলিলে উল্লেখ করেন ৮০ কোটি টাকা। ক্রেতার কাছ থেকে তিনি দেড়শ’ কোটি টাকা আদায় করলেও ন্যাশনাল লাইফ কোম্পানিকে দেখান ৮০ কোটি টাকা। বাকি ৭০ কোটি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেন। আবার নিজের সম্পত্তি কোম্পানির কাছে বিক্রির ক্ষেত্রেও করেন বিপুল অর্থ আত্মসাৎ। নিজ নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর চৌমুহনিতে মোরশেদ আলম তার ব্যক্তিগত ভবনের ফ্লোর দ্বিগুণ দামে বিক্রি করেন ন্যাশনাল লাইফের কাছে। এ ক্ষেত্রে তিনি আত্মসাৎ করেন ৬০ কোটি টাকা।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স ভবনের সামনে একটি প্লট ছিল। বিরোধপূর্ণ এ সম্পত্তিটি ওয়ারিশ নিয়ে ঝামেলা ছিল। এ সম্পত্তি মোরশেদ প্রথমে স্বল্প দামে নিজের নামে ‘ক্রয়’ করেন ৪০ কোটি টাকায়। সে ক্রয়ের অর্থ পরিশোধ করেন ন্যাশনাল লাইফ কোম্পানির তহবিল থেকে। নিজের নামে কেনা সে সম্পত্তি পরে ন্যাশনাল লাইফের কাছে ‘বিক্রি’ করেন ৬০ কোটি টাকায়। এখাতে তিনি ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। বিরোধপূর্ণ এ সম্পত্তি নিয়ে জনৈক জসিমউদ্দিনের ওয়ারিশদের সঙ্গে এখনো মামলা ঝুলছে।
২০১৭ সালে বাংলাদেশ ট্রেজারি বন্ডে মোরশেদ আলম বিনিয়োগ করেন কোম্পানির ৯৬৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা। বন্ড ক্রয়ের লক্ষ্যে আরও ৪১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা অগ্রিম পরিশোধ করেন। বছরখানেক পর ২০১৮ সালে ধরা পড়ে, বিনিয়োগের জন্য রাখা অ্যাডভান্সের ৪১ কোটি ৪৬ লাখ থেকে ৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। ৩৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা ‘অগ্রিম’ হিসেবে আছে। ৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বন্ডে বিনিয়োগ করলে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ হওয়ার কথা ৯৭৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। কিন্তু বিনিয়োগ না বেড়ে ২০১৭ সালে ৯৬৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা থেকে বরং ২ কোটি টাকা কমে যায়। ২০১৮ সালে ৯৬৭ কোটি ১৮ লাখ টাকায় নেমে আসে। ৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকার বন্ড বিক্রি করা হয়েছে কিনা এ সংক্রান্ত কোনো ব্যখ্যা প্রতিষ্ঠানটির নেই । অর্থাৎ ন্যাশনাল লাইফ থেকে মোরশেদ আলম ট্রেজারি বন্ডের ৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।
মোরশেদ আলম অর্থ আত্মসাৎ করেন রি-ইন্স্যুরেন্সের অর্থও। ২০২১ সালের ৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা রি-ইন্স্যুরেন্স থেকে প্রাপ্ত দাবি, কমিশন এবং প্রফিট কমিশন মূল আয়ে না দেখিয়ে তিনি আত্মসাৎ করেন। প্রতিবছর রি-ইন্স্যুরেন্সের প্রতিষ্ঠানের আয়ের সঙ্গে যুক্ত না হয়ে রি-ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়ামের সঙ্গে সমন্বয়ের দাবি করা হচ্ছে। এতে বছর বছর বাড়ছে প্রতিষ্ঠানের দায়। কমিশন এজেন্ট, গ্রাহকের বীমা দাবি, এজেন্ট লাইসেন্স ফি পরিশোধ না করে জমিয়ে রেখেছেন। মোরশেদ তার প্রতিষ্ঠানের বীমা দাবি আটকে রাখার মাধ্যমে লঙ্ঘন করছেন বীমা আইন। ২০১০ সালের বীমা আইনের ৭২ নম্বর ধারা এবং এজেন্ট লাইসেন্সের ফি’র বীমা এজেন্ট (নিয়োগ, নিবন্ধন ও লাইসেন্স) প্রবিধানমালা ২০২১ এর ৯ নম্বর নির্দেশনা লঙ্ঘন করেন তিনি।
মোরশেদ আলম কোম্পানির সম্পদ বৃদ্ধির নামে মূলত: নিজের ব্যক্তিগত সম্পদই শুধু বাড়িয়েছেন। গড়ে তুলেছেন ব্যক্তিগত সম্পদের পর্বত। তিনি বিভিন্নখাতে কোম্পানির ৪শ’ কোটি টাকা ‘বিনিয়োগ’ দেখিয়েছেন। আর এসব বিনিয়োগখাতের অধিকাংশই ভুয়া, অস্বচ্ছ ও গোঁজামিলে ঠাসা।
প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, মোরশেদ আলম নানা ক্যারিকেচার করে গত ১৩ বছর ধরে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান পদ কব্জায় রেখেছেন। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে প্রভাব-প্রতিপত্তি খাটিয়ে শত শত কোটি টাকা লুট করেন। লুটপাটের উল্লেখযোগ্য একটি খাত হচ্ছে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ। বিগত চার বছরেই ন্যাশনাল লাইফ শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ দেখিয়ে আত্মসাৎ করেন ৯৭ কোটি ১৭ লাখ ৬৪ হাজার ৪৯৩ টাকা। জেড ক্যাটাগরির শেয়ার কিনে লোকসান দেন ৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা। অথচ বীমা প্রবিধানমালা ২০১৯ অনুযায়ী বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অনুমোদিত কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ে শর্ত দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, বীমা কোম্পানি জেড ক্যাটাগরিভুক্ত কোনো শেয়ার কিনতে পারবে না। অথচ মোরশেদ আলম চার বছরে জেড ক্যাটাগরি কোম্পানির শেয়ার কিনে ৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছেন। তবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনে লোকসানকে ‘আত্মসাৎ’ হিসেবে দেখা হয়।
২০১৮ সালে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত, অতালিকাভুক্ত মিলিয়ে ১১১টি কোম্পানিতে ৬ কোটি ৮৪ লাখ ২৬ হাজার ৫২৩ টি শেয়ার কেনেন মোরশেদ। টাকা বিনিয়োগ করেন ২শ ১ কোটি ৬০ লাখ ১১ হাজার ৭৬৩ টাকা। ১১১টি কোম্পানির মধ্যে ২০১৮ সালে শেয়ার বেড়েছে মাত্র ১৪টি কোম্পানির। স্থিতিশীল ছিল ১৪টির। শেয়ারের দাম কমেছে ৮৩টি কোম্পানির। ৬৪ কোম্পানির শেয়ারের মূল্য কমে যাওয়ায় ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির লোকসান হযেছে ১৪ কোটি ৮১ লাখ ৮৪ হাজার ৬৯১ টাকা। ২০১৯ সালে শেয়ার বাজারে লোকসান দেয় ৫১ কোটি ৩৪ লাখ ৭ হাজার ৮৫৯ টাকা। ২০২০ সালে লোকসান দিয়েছে ২৫ কোটি ৫৮ লাখ ১৩ হাজার ৭০২ টাকা। সর্বশেষ ২০২১ সালে মোরশেদ নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠানটি লোকসান দিয়েছে ৫ কোটি ৪৩ লাখ ৫৮ হাজার ২৪১ টাকা।
আর্থিক প্রতিবেদনে প্রতিবছরই বিনিয়োগ বাড়ানো হচ্ছে- মর্মে দাবি করা হয়। তার দাবি মতে, ২০১৬ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী মোরশেদ আলম ন্যাশনাল লাইফের বিনিয়োগ দেখান ৩ হাজার ১৬১ কোটি টাকা। কিন্তু ২০১৯ সালের প্রতিবেদনে ২০১৬ সালের বিনিয়োগ উল্লেখ করেন ৩ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে বিনিয়োগ দেখান ৩ হাজার ২৪০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের প্রতিবেদনে ২০১৭ সালে করা বিনিয়োগের অঙ্ক উল্লেখ করেন ৩ হাজার ৩৩৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ এখানে ৯৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা বাড়িয়ে দেখিয়েছেন তিনি। ২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে আরও ১৭৬ কেটি টাকা বাড়িয়ে দেখিয়েছেন ২৭০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। একইভাবে ২০১৮ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে বিনিয়োগ দেখান ৩ হাজার ৩৯৯ কোটি ৫৯ টাকা। ২০১৯ সালে সেটি বাড়িয়ে দেখান ৩ হাজার ৬০৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এভাবে আর্থিক প্রতিবেদনের পাতায় পাতায় রয়েছে হিসেবের গোঁজামিল তথা মোরশেদ আলম গংয়ের আত্মসাতের স্বাক্ষর। প্রকাশ করা বছরওয়ারি আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারেই মোরশেদ আলম ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে গ্রাহকের ২০৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। এটি ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হলে মোরশেদ আলম এবং তার সহযোগিরা সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কিংবা ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডসহ উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ১৯৪৭ সালের ৫(২) ধারার সঙ্গে দন্ডবিধির ৪০৯ এবং ১০৯ ধারা যুক্ত করে মামলা করতে পারে। এ ছাড়া বীমা আইনের ১৩১ ধারা অনুযায়ী ৩ বছর কারাদণ্ড এবং ৫ লাখ টাকা অর্থ দন্ড হতে পারে।
এ বিষয়ে দুদকের সাবেক মহাপরিচালক (লিগ্যাল) মো. মইদুল ইসলাম ভোরের আকাশকে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বীমা কোম্পানির চেয়ারম্যান-পরিচালকসহ সব এমপ্লয়ী ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী’ গণ্য। তা ছাড়া গ্রাহকের জামানত কিংবা আমানতের অর্থও ‘পাবলিক মানি’ হিসেবে স্বীকৃত। তাই উভয় বিবেচনায় এ অর্থ আত্মসাতের ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪, মানিলন্ডারিং আইন এবং ফৌজদারি দণ্ডবিধির ধারাসমূহ প্রযোজ্য। যারাই প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক রয়েছেন, তারা প্রত্যেকে এ আইনে দায়ী হবেন।
এদিকে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান মোরশেদ আলমের দুর্নীতির বিষয়ে জানতে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মুখ্য নির্বাহী মো. কাজিমউদ্দিনের সঙ্গে। একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে তাকে এসএমএস পাঠানো হয়। তাতেও তিনি সাড়া দেননি।
ভোরের আকাশ/রন