logo
আপডেট : ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১৫:৪৭
বঙ্গবন্ধু রেল সেতুতে শুরু হয়েছে প্রথম ট্রায়াল
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

বঙ্গবন্ধু রেল সেতুতে শুরু হয়েছে প্রথম ট্রায়াল

যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে আজ। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে সেতুটি উদ্বোধন করা হবে। এর পর সেতুটি দিয়ে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হবে। উদ্বোধনের আগেই আজ সেতু দিয়ে পরীক্ষা মূলক ট্রেন চলাচল করলো।

বঙ্গবন্ধু রেল সেতু’র প্রকল্প পরিচালক আবু ফাত্তাহ মো: মাসুদুর রহমান জানান, বঙ্গবন্ধু সেতুর ৪শ মিটার উজানে দেশের সর্ববৃহৎ রেলসেতুর অবকাঠামোগত নির্মান কাজ শেষ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার পরীক্ষা মূলক (ট্রায়াল ট্রেনের টেস্ট রান) ট্রেন চলাচল শুরু হলো। ৪.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘের এই সেতুতে ঘন্টায় ১০ কিলোমিটার গতিতে আপ ও ডাউন লাইনে শুরু হওয়া টেস্ট সর্বোচ্চ গতিতে ট্রায়াল ট্রেন চলাচল করবে আশা করছি।

রেল সেতু প্রকল্প সুত্রে জানা গেছে, দেশের সর্ববৃহৎ রেলওয়ে সেতু নির্মিত হচ্ছে সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর বুকে। বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩শ মিটার উজানে নির্মাণ করা হয়েছে এই রেল সেতু। গুণগতমান নিশ্চিত করে অবকাঠামো নির্মান কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে তৈরী হওয়া ৫০টি পিলার গুলোর উপর ৪৯টি স্প্যান বসানো কাজও শেষ হয়েছে। ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা বিশেষ ধরনের বড় বড় স্টিলের পাটাতন দিয়ে তৈরী করা হয়েছে স্প্যান গুলো। এই স্প্যান গুলো ওয়েদার ষ্টিল দিয়ে তৈরী। স্প্যান গুলো আলাদা ভাবে রং করার প্রয়োজন হবে না। বলা হচ্ছে এর ফলে আগামী ১শ বছরেরও সেতুর কাঠামোতে মরিচা ধরবে না। সময়ের সাথে সাথে গাডারের উজ্জলতাও বাড়বে। এই স্টিলের ক্ষয় খুব কম। একশ বছরে ১ পার্সেন্টের বেশি হবে না। নরমাল সেতুতে প্রতি ৩-৫ বছর পর পেইন্টটেইন করতে হয়। কিন্ত রেল সেতুতে পেইন্টটেইন করতে হবে না এজন্য মেইনটেইনস খরচ কমে যাবে। এছাড়াও এই সেতুতে স্লিপার ছাড়াও বিশেষ পদ্ধিতে বসানো হয়েছে রেল ট্র্যাক। এতে ঘন্টায় ১০০-১২০ কিলোমিটার বেগে চলবে পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেন। এতে রাজধানী ঢাকার সাথে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগের গতি বাড়বে।

প্রকল্প সুত্রে আরও জানা যায়, বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করতে পারে। কিন্তু মালবাহী ট্রেন চলাচল করতে পারে না যার কারনে আন্ত:দেশীয় মালামাল যে স্কোপ রয়েছে এই সেতুতে তা নেই। বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলে। এবং ট্রেন সেতুতে ওঠার আগেই পূর্ববর্তী স্টেশনে মেকানিকাল চেকিং করতে হয়। এখন এক স্টেশন থেকে সেতু পার হয়ে অন্য স্টেশনে পৌছলে সময় লাগছে ৪০-৫০ মিনিট। রেল সেতুটি চালু হলে ডাবল লাইন দিয়ে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে। এতে সময় লাগবে ৫-৭ মিনিটি। তখন বিদেশী মালবাহী ট্রেন সেতু দিয়ে চলাচল করবে তখন বাংলাদেশের রাজস্ব আয় হবে। ট্রেনের সংখ্যাও বাড়বে। আগে ৩৮টি ট্রেন চলাচল করতো এখন রেল সেতু দিয়ে প্রতিদিন ৮৮ ট্রেন চলাচল করবে।

১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা ব্যায়ে ২০২০ সালে শেষে শুরু হওয়া রেল সেতুটিতে ২০২৫ এর জানুয়ারি থেকেই বানিজ্যিকভাবে রেল চলাচলের জন্য প্রস্তুতি রয়েছে।

 

ভোরের আকাশ/মি