logo
আপডেট : ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৫:২৪
মশলা ভাঙ্গানো মিলে পরিবেশ দূষণ, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি
লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

মশলা ভাঙ্গানো মিলে পরিবেশ দূষণ, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

কুমিল্লার লাকসাম পৌরশহরের পুরাতন দৈনিক বাজার এলাকায় যত্রতত্র গড়ে উঠেছে হলুদ-মরিচ ভাঙ্গানোর মিল।

কুমিল্লার দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে উপজেলাগুলোর পৌরশহরসহ হাট-বাজারগুলোতে জনগন চলাচলের এলাকাগুলোর পরিবেশ দূষণ এবং মানবদেহে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার অভিযোগ উঠেছে হলুদ-মরিচের গুড়া ভাঙ্গানোর মিল মালিকদের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে লাকসাম পৌরশহরের পুরাতন দৈনিক বাজার এলাকায় যত্রতত্র গড়ে উঠেছে এসব মিল।

উপজেলার স্থানীয় ভুক্তভোগীদের একাধিক সূত্র জানায়, এ ব্যাপারে বহুবার স্থানীয় প্রশাসনকে জানানোর পরও কোনো পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত চোখে পড়েনি। বিশেষ করে উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজারে ধান ভাঙ্গানোর মিল কিংবা নতুন প্রযুক্তিনির্ভর নানা ব্র্যান্ডের ছোট ছোট মিল বসিয়ে চালের গুড়া, হলুদ, মরিচ, ডাল ও মসলার গুড়া ভাঙ্গানো হচ্ছে। তবে পৌরশহর দৌলতগঞ্জ পুরাতন দৈনিক বাজারের চারপাশের ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত নাজুক অবস্থার শিকার হচ্ছেন। এসব মিল চলাকালে বাতাসে হলুদ-মরিচের ঝাঁজ উড়ে এসে ব্যবসায়ীদের দোকানে পড়ে এবং পথচারীদের চলাচলে বিপাকে পড়তে হয়।

কে শোনে কার কথা! এসব মিল মালিকদের দৌরাত্ম্য প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। বিগত কয়েক বছর ধরে স্থানীয় প্রশাসন কিংবা কোনো সংস্থা তাদের দৌরাত্ম্য কমাতে পারেনি।

সূত্রগুলো আরও জানায়, এসব মিলে ভাঙ্গানো হলুদ-মরিচের গুড়া বাতাসের সঙ্গে মিশে এলাকার পরিবেশ দূষণ এবং মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এর ফলে এলাকার নারী-পুরুষসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ শ্বাসকষ্ট, চোখের নানা সমস্যা, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন। এছাড়া কিছুদিন আগে এসব মিলে ভাঙ্গানো মরিচের গুড়া জনৈক পথচারীর চোখে গিয়ে চোখ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। পথচারী ও ব্যবসায়ীদের এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাধিক সূত্র জানায়, এ অঞ্চলের হাট-বাজারগুলোতে যত্রতত্র গড়ে ওঠা এসব মিলের মালিকরা সরকারি কোনো নিয়মনীতি মানছেন না। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে স্থানীয় পেশীশক্তির বদৌলতে এসব ব্যবসা চালাচ্ছেন তারা। প্রতিনিয়ত এসব এলাকার সড়ক দিয়ে হাজার হাজার পথচারী চলাচল করলেও এসব মিলে কোনো সতর্কতা বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মিলগুলোর পাশ দিয়ে যাওয়া পথচারী ও আশেপাশের ব্যবসায়ীদের। জনসাধারণের এই ভোগান্তিতে যেন কোনো সংস্থার মাথাব্যথা নেই।

স্থানীয় একাধিক পরিবেশবিদের মতে, এসব মিল মালিকদের বেপরোয়া দৌরাত্ম্যের ফলে আশেপাশের লোকজন হাঁচি দিতে দিতে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। এসব মিলে যে পণ্য ভেঙে গুড়া করা হয়, তাতেই ভেজাল থাকে। ইটের গুড়া, কাঠের গুড়া এবং নিম্নমানের ডালের গুড়ার মিশ্রণে ভোক্তারা প্রতারিত হচ্ছেন। পাশাপাশি এলাকার পরিবেশ দূষণ এবং মানবদেহের স্বাস্থ্যঝুঁকি তো রয়েছেই।

এ ব্যাপারে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

 

ভোরের আকাশ/রন