logo
আপডেট : ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৭:৪৮
মমতার মন্তব্য আত্মরক্ষার কূটকৌশল নয় তো?
সালেহ উদ্দিন আহমদ

মমতার মন্তব্য আত্মরক্ষার কূটকৌশল নয় তো?

বাংলাদেশের খুব কাছেই পশ্চিমবাংলা, আমাদের নিকট প্রতিবেশী। ওখানকার পাখিরা উড়ে এসে বাংলাদেশের গাছগুলোতে বসে গান করে। বাংলাদেশের হাওয়া ওখানে গিয়ে গাছে গাছে দোল দেয়। ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে পশ্চিমবাংলার সঙ্গে আমাদের অনেক মিল। আমাদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে টানাপড়েন হলে, কলকাতার হোটেলগুলো ৬০ ভাগ ফাঁকা থাকে, তাদের নেতাদের চিন্তাও বেড়ে যায়। পচিমবাংলার ঘটনাবলিও, বিশেষ করে বাংলাদেশকে নিয়ে কাণ্ডকারখানা, আমাদেরকেও খুব আলোড়িত করে।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী পাঠাতে উদ্যোগী হওয়ার জন্য। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিয়ে রাজনীতি করা ভারতীয় রাজনীতিবিদদের পুরোনো অভ্যাস। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মনে করা হতো তিনি সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকার চেষ্টা করেন, ঊর্ধ্বে থাকেন। কিন্তু রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই।

বাংলাদেশে এমন কিছু হয়নি যে শান্তিরক্ষী লাগবে! এটা ঠিক, পশ্চিমবাংলার রাজনীতির কিছু সংকট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেশ কোনঠাসা করেছে বেশ কিছুদিন ধরে। ফলে বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী পাঠানোর মতো অপ্রত্যাশীয় এই মন্তব্য তার নিজের সংকট থেকে সেখানকার জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাবার একটা চেষ্টা বলে ভাবা হচ্ছে। মমতা যে কারণেই এই সব কথা বলুন না কেন, বাংলাদেশের জন্য এটা নতুন ভাবনার জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারকে কূটনীতির প্রধান অস্ত্র দ্বিপক্ষীয় আলাপ-আলোচনাতে ফিরে যেতে হবে। পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে এবং বড় বড় প্রতিবাদ মিছিল বের করে এইসব সমস্যার কোনো সমাধান হবে না, বরং সমস্যা আরো বাড়বে। কেউ কারো পতাকার অবমাননা করে কোনো ফল হবে না, সমস্যা বাড়বে এবং দুই পক্ষেরই অসম্মান হবে। ব্যক্তিগত কূটনীতিতে ফিরে যেতে হবে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জরাজীর্ণ করে আমাদের কোনো লাভ হবে না। দুর্ভাগ্যক্রমে দুদেশেরই কিছু লোক রাজনীতির উদ্দেশে এই সংকটটাকে জিইয়ে রাখতে চান। মমতা বন্দ্যোধ্যায়কে সেই দলে ভাবতে খুব কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু তিনি যখন বাংলাদেশের সংকট নিয়ে কথাবলছেন, তখন তার নিজের সংকটগুলোও কম নয়। পশ্চিমবাংলার গত চার মাসে কত কিছু ঘটে যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসন ক্ষমতাও টলোমলো হয়ে উঠেছিল দারুণভাবে, অনেকটা শেখ হাসিনার মতো।

২০২৪ সালের ৯ আগস্ট। হাসপাতালের রোগীদেরকে নিয়ে সারা দিন ও রাত্রি কাজ করে, ৩১ বছর বয়স্ক একজন নারী ইন্টার্নি ডাক্তার একটু বিশ্রামের জায়গা খুঁজে পেলেন একটা সেমিনার রুমের কোনে, গা এলিয়ে বিশ্রাম নিতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন নিজের অজান্তে। এটাই সম্ভবত তার শেষ নিদ্রা- এরপর তাকে ঘুমিয়ে পড়তে হলো মৃত্যুশয্যায়, চিরদিনের জন্য শেষ নিদ্রায়। আর জি কর মেডিকেল কলেজের সহকর্মীরা সকালে খুঁজে পেলেন মেয়েটির অর্ধনগ্ন মৃতদেহ। তার সমস্ত শরীরে ছিল আঘাতের চিহ্ন। আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ১৩৮ বছরের পুরানো প্রতিষ্ঠান। এখানে ইন্টার্নি ডাক্তারররা কাজ করেন একনাগাড়ে ৩৬ ঘণ্টা, কিন্তু তাদের বিশ্রামের নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই। তাই তাদেরকে সাধারণত গিয়ে বিশ্রাম নিতে হয় তিনতলার সেমিনার রুমে।

আর জি কর মেডিকেলের এই হিংস্রতা প্রথম থেকেই সবাই বুঝেছিল এটা যৌন নির্যাতনের পর হত্যাকাণ্ড। পরে বিভিন্ন ডাক্তারি পরীক্ষায় তা-ই প্রমাণিত হয়। কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় পচিমবাংলার স্বাস্থ্য ও পুলিশ বিভাগ তদন্তে গড়িমসি করে, অনেকের অভিমত তারা এটাকে একটা আত্মহত্যা বলে নিজেদের দায়িত্ব এড়াতে চেয়েছিল এবং চেয়েছিল নিজেদেরকে ঝামেলামুক্ত রাখতে। যাকে সম্ভাব্য খুনি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সে ছিল স্বাস্থ্য বিভাগের একজন অনিয়মিত কর্মী, কিন্তু হাসপাতালগুলোতে তার ছিল অনিয়ন্ত্রিত প্রবেশধিকার।

এই ঘটনায় প্রথমে আর জি করের ডাক্তাররা প্রতিবাদ ও ধর্মঘট শুরু করে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সারা পশ্চিমবাংলা ও ভারতের অন্যান্য রাজ্যের ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিবাদে ফুঁসে উঠলো। পুরো পচিমবাংলার ডাক্তারের শুরু করলেন ধর্মঘট, বন্ধ করলেন রোগী দেখা। এমনকি বন্ধ হলো জরুরি বিভাগগুলোও, রোগীদের দুর্ভোগ বাড়ল।

পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রীও। তিনি ভাবলেন, একটা বিবৃতি দিয়ে তাকে সামাল দিতে পারবেন এবং ডাক্তাররা দুয়েক দিন বিক্ষোভ দেখিয়ে আবার কাজে ফিরে আসবে। আরো ধারণা ছিল তার বিশ্বস্ত পুলিশ প্রধান বিনীত গোয়াল এই সমস্যা সহজেই সামাল দিতে পারবেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমনিতেই দারুণ আত্মবিশ্বাসী রাজনীতিবিদ, তিনি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবাংলায় মোদির দলকে হারিয়ে অনেক বেশি আসন ছিনিয়ে নিয়েছেন। আর একগুঁয়েমির জন্যও তিনি খ্যাত। তার দলের নাম তৃণমূল কংগ্রেস- তাকে বলা হয় একাই তিনি তৃণমূল আর তৃণমূল অর্থই মমতা ব্যানার্জী। ডাক্তাররা চাইলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়াল, তার ডেপুটি অভিষেক গুপ্ত ও আর জি করের প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষের তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার। তারা মমতার স্বাস্থ্য বিভাগের কয়কয়জন উচ্চপদের অফিসারেরও শাস্তি দাবি করলেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে হত্যা ও যৌন নির্যাতনের সাক্ষ্য প্রমাণাদিকে পরিবর্তন করার। ডাক্তাররা আরো চাইলেন সরকারকে অবিলম্বে সব হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমে খুব গা দিলেন না ডাক্তারদের দাবি-দাওযা নিয়ে, তার ধারণা হলো কিছু দাবি অযৌক্তিক। আস্তে আস্তে এই আন্দোলন ছড়িয়ে তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চল গেল। পচিমবাংলার সুশীল সমাজ যারা ছিল সবসময় মমতার পাশে, এবার তারা এগিয়ে এলেন ডাক্তারদের পক্ষে। রাজ্যের সর্বস্তরের মহিলাদের ক্রোধ ও পালা করে দিনের পর দিন ধর্না আন্দোলনকে আরো তীব্র রূপ দিল। এটা ছিল সম্পূর্ণ একটা অরাজনৈতিক আন্দোলন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছোটোখাটো কিছু পদক্ষেপ নিলেন যেমন মাঝারি ধরনের কিছু কর্মকর্তাকে বদলি করে দিলেন, ডাক্তারদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করলেন। মমতাও একদিন ডাক্তারদের সঙ্গে মিছিলে নামলেন, অপরাধীর বিচারের দাবিতে। কিন্তু ডাক্তাররা তাদের দাবিতে অনড় রইলেন। ভারতের কেন্দ্রীয় অপরাধ (সিবিআই) বিভাগ রাজ্য সরকারকে ডিঙিয়ে তদন্ত করার দায়িত্ব নিল। মমতা একদিন ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করে বললেন, ‘সামনে দুর্গাপূজা, তোমরা গিয়ে পূজার আনন্দ উপভোগ কর, সিবিআই তদন্ত করে এর একটা সুরাহা করবে।’ তার ‘আনন্দ উপভোগের’ উল্লেখ আরো উত্তেজনা ছড়াল। মৃত ডাক্তারের মা-বাবা বললেন, তাদের জন্য কোনো পূজা নেই, আনন্দ নেই। আন্দোলন চলতেই থাকল।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও বসে রইল না। তাদের রাজনৈতিক নেতারা মমতাকে পদত্যাগ করার উপদেশ দিলেন। ভারতের রাজনীতির অনেক পণ্ডিত বললেন, শেষমেষ মমতা ব্যানার্জী শেখ হাসিনার মতোই গদি ছেড়ে বাঁচবেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি ধ্রুপদী মুর্মু এক বিবৃতিতে ঘোষণা দিলেন, আমাদের মেয়েদের উপর অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বললেন, ‘আমাদের সমাজ ও সরকারকে অবিলম্বে মেয়েদের উপর সহিংসতা বন্ধ করতে হবে।’ যদিও রাষ্ট্রপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা পচি বাংলার নাম নেননি, তবুও অনেকেই এতে ধারণা করলেন পশ্চিমবাংলায় রাষ্ট্রপতির শাসন আসছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পচিমবাংলার ক্ষমতা থেকে হটাতে। কিন্তু কোনো নির্বাচনেও তা সম্ভব হচ্ছিল না। তাছাড়া মমতা তার জন্য জাতীয় রাজনীতিতেও খুব ঝামেলা সৃষ্টি করছেন। তিনি রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে গড়া জাতীয়বিরোধী দল ইন্ডিয়ার বড় উদ্যোক্তা। মোদি ভাবলেন, এবার মমতাকে বাগে পাওয়া গেছে। মমতাকে পদচুত্য করে কেন্দ্রের শাসন প্রতিষ্ঠা নিয়ে মোদি তার উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন। সবাই একমত হলো, সামনের নির্বাচনে ক্ষমতাচ্যুত আহত মমতার চেয়েও নিজ রাজ্যের নাগরিক ও সুশীল সমাজের হাতে নাকাল হওয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে পশ্চিমবাংলায় হারানো মোদির পক্ষে অনেক সহজ হবে। আহত বাঘিনী সব সময় খুব বিপজ্জনক। মমতা আপাতত রক্ষা পেলেন। কিন্তু সবাই ধরে নিয়েছিলেন মমতার রাজনীতিতে ভাটা শুরু হয়েছে এবং তার নির্বাচনি পরাজয় শুধু কিছু সময়ের ব্যাপার।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখলেন তার কোনো জাদুই কাজে লাগছে না, অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। এইবার তিনি নমনীয় হলেন। সেপ্টেম্বরের ২০ তারিখে ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি পশ্চিমবাংলা সরকারের জাদরেল পুলিশ কর্তাদের ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্মকর্তাদেরকে পদচ্যুত বা বদলি করলেন। এই প্রথম কলকাতার ‘লৌহমানবী’ নিজের গোয়ার্তুমি বাদ দিয়ে অন্যদের বিচার বুদ্ধি ও দাবিকে মেনে নিতে বাধ্য হলেন।

৪২ দিন প্রতিবাদ করার পর কলকাতার ডাক্তাররা কাজে যোগ দিলেন সেপ্টেম্বরের ২১ তারিখে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাবুডুবু খেয়েও কিছুটা মাথা তুলে দাঁড়ালেন। তাকে মনে করা হচ্ছিল, সব রাজনৈতিক পুঁজি হারিয়ে দেউলিয়া এবং রাজনৈতিকভাবে খুব দুর্বল। একজন বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফ্রন্টলাইনের বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বললেন, ‘এই প্রথম আমরা দেখলাম মমতাকে পিছু হটতে হলো, তার রাজনৈতিক বিরোধীদের চাপে নয়, বরং তার নিজের নাগরিকদের চাপে।’

ভারতীয়ও নির্বাচন কমিশন এর মধ্যে ঘোষণা করে, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার ছয়টি আসনে উপনির্বাচন হবে ১৩ নভেম্বর এবং ভোট গণনা হবে ২৩ নভেম্বর। আবার পণ্ডিতদের জল্পনা-কল্পনা শুরু হলো। সবাই বললো, দুর্বল মমতার থেকে উপনির্বাচনে সবগুলো আসন ছিনিয়ে নিয়ে জয় পাবে মোদির দল, ভারতীয় জনতা পার্টি। এইভাবে ক্রমান্বয়ে শুভেন্দু অধিকারী যিনি ছিলেন এককালে মমতার ডান হাত, এখন যিনি জনতা পার্টিতে যোগ দিয়ে পশ্চিম বাংলা বিধান সভায় বিরোধীদলীয় নেতা, তিনিই হবেন ভবিষতে পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। নভেম্বরের ২৩ তারিখে উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হলো। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী হলো উপনির্বাচনে। এটা কি সাময়িক উত্তরণ না স্থায়ী, এই একটা বিজয় দিয়ে সেটা নিশ্চিত হওয়া যাবে না। যদিও ভারতের প্রভাবশালী পত্রিকা ‘দ্য হিন্দু’ মন্তব্য করেছে, ‘আর জি কর হাসপাতালে ঘটে যাওয়া একটা যৌন নির্যাতন ও খুনকে নিয়ে যে প্রতিবাদ ও ক্রোধ জমে উঠেছিল, তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার তৃণমূলের নির্বাচনি ভাগ্যে কোনো স্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি করতে পারেনি।’ তবে মমতার রাজনীতি আগের মতো তার নিজের গতিতে ফিরে আসতে পারবে কি না- এ নিয়ে যথেষ্ট সংশয়-সন্দেহ রয়েছে। হঠাৎ বাংলাদেশ নিয়ে তার অমূলক কথাবার্তা কি তার রাজনীতির গতি বদলাবার চেষ্টা, নাকি জনগণের মনোযোগ অন্যদিকে ফেরাবার কূটকৌশল এই নিয়েও অনেক আলোচনা হবে।

মমতার রাজনীতির একটা বড় শক্তি হলো, তিনি ব্যক্তিগতভাবে দুর্নীতিমুক্ত বলে জনগণ মনে করে। ভারতের রাজনীতি অঙ্গনে অর্থনৈতিক দুর্নীতি একটা বড় রোগ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে লাগিয়ে অনেক বড় বড় বিরোধীদলীয় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে পেরেছেন তাদের দুর্নীতির কারণে। মমতাকে আটকাতে পারেননি। এই ফাঁদের সাম্প্রতিক শিকার অরবিন্দ কেজরিওয়াল; যাকে কারাগারে যেতে হয়েছে এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রিত্বও ছাড়তে হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনীতি বা তার কৌশলের সঙ্গে যারা একমত নন, তারাও মমতাকে ভক্তি করেন তার অর্থনৈতিক পরিছন্ন ভাবমূর্তির জন্য।রাজনৈতিক প্রতিকূলতা থেকে বারবার উত্তরণে এটাই মমতার মূল অস্ত্র। যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনীতির ইতিহাস জানেন, তারা আশা করবেন তিনি কোনোদিনই সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে জড়াবেন না। পানিচুক্তিসহ নানা প্রসঙ্গে বিতর্কিত ভূমিকার কারণে বাংলাদেশের প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মমতা প্রশ্নাতীত না হলেও বাংলাদেশের আপামর মানুষ চাইছেন, মমতা আত্মরক্ষার জন্য যেন বাংলাদেশের প্রতি এতটা মমতাহীন না হন।

লেখক: সাংবাদিক।

 

ভোরের আকাশ/রন