logo
আপডেট : ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ২০:০২
বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে ঢাকা
অনলাইন ডেস্ক

বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে ঢাকা

সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (একিউআই) স্কোর ২৪২ নিয়ে ঢাকা এই অবস্থানে পৌঁছায়, যা "খুবই অস্বাস্থ্যকর" হিসেবে চিহ্নিত।

দূষিত শহরের তালিকায় অন্য শহরগুলো

দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটি, যার একিউআই স্কোর ১৯০। একই স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের করাচি ও লাহোর।

একিউআই সূচকের অর্থ

একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ২০০ সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য "অস্বাস্থ্যকর", ২০১ থেকে ৩০০ "খুবই অস্বাস্থ্যকর", এবং ৩০১ থেকে ৪০০ "বিপজ্জনক" হিসেবে বিবেচিত হয়। ৩০১-এর বেশি স্কোর বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

ঢাকার দূষণ ও এর উপাদান

ঢাকার বায়ুদূষণ দীর্ঘদিন ধরে একটি বড় সমস্যা। শীতকালে এই দূষণের মাত্রা বাড়ে। বায়ুর মান নির্ধারণে পাঁচটি উপাদান বিবেচিত হয়: বস্তুকণা (পিএম-১০ ও পিএম-২.৫), নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড (NO₂), কার্বন মনোক্সাইড (CO), সালফার ডাই অক্সাইড (SO₂), এবং ওজোন (O₃)।

বিশেষ করে পিএম-২.৫ নামে পরিচিত অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটি ফুসফুসের ক্যান্সার, হৃদরোগসহ অন্যান্য জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া, পুরোনো যানবাহন, কলকারখানা, এবং বিভিন্ন জ্বালানি পোড়ানোর কারণে বায়ু দূষণ তীব্রতর হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৭০ লাখ মানুষ প্রাণ হারান। এর মধ্যে স্ট্রোক, হৃদরোগ, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ, এবং ফুসফুসের ক্যান্সার উল্লেখযোগ্য কারণ।

আজকের পরিস্থিতি

আজ শুক্রবার ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও সকালে ঢাকার একিউআই স্কোর ছিল ২৪৮, যা "খুবই অস্বাস্থ্যকর"। গতকাল এই স্কোর ছিল ৩৪১, যা "দুর্যোগপূর্ণ" বলে বিবেচিত। ঢাকার গুলশান-২, মার্কিন দূতাবাস এলাকা এবং ইস্টার্ন হাউজিং-২ সবচেয়ে দূষিত স্থান হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

সতর্কতা ও পরামর্শ

আইকিউএয়ারের মতে, এই অবস্থায় বাইরে গেলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। বাড়ির জানালা বন্ধ রাখতে এবং খোলা জায়গায় ব্যায়াম থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকার ভবিষ্যৎ

বায়ুদূষণের এই ক্রমবর্ধমান সমস্যা মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, শিল্প কারখানার নির্গমন হ্রাস, এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ঢাকার বায়ুমান উন্নত করা সম্ভব।

 

ভোরের আকাশ/রন