logo
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৬:৫৫
ভিডিও কলে বিয়ে করে প্রবাসীর প্রতারণা
হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা
নাজিরপুর (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

ভিডিও কলে বিয়ে করে প্রবাসীর প্রতারণা

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় দুই পরিবারের সম্মতিতে মালয়েশিয়া প্রবাসী সোহাগ শেখ (৩২) এবং রিমা আক্তার (২৭) নামের এক যুবতীর ভিডিও কলে বিয়ে হয়।

সোহাগ শেখ উপজেলার দক্ষিণ দিঘিরজান গ্রামের আলাউদ্দিন শেখের ছেলে। অন্যদিকে, রিমা আক্তার একই উপজেলার পূর্ব বানিয়ারী গ্রামের মোতালেব দরানির মেয়ে।

রিমা আক্তারের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সোহাগ শেখ প্রবাসে থাকা অবস্থায় ভিডিও কলের মাধ্যমে রিমা আক্তারকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। পরে সোহাগ শেখ দেশে ফিরলে ২০১৫ সালের ১৪ অক্টোবর রেজিস্ট্রার কাজীর মাধ্যমে কাবিননামা সম্পন্ন হয়।

বিয়ের পরে চার মাস দেশে থাকার পর সোহাগ পুনরায় বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নেন এবং রিমার পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। রিমার বাবা মেয়ের সুখের কথা ভেবে ধারদেনা করে ৫ লাখ টাকা এনে জামাতার হাতে তুলে দেন। সোহাগ এরপর প্রবাসে চলে যান।

প্রবাসে যাওয়ার কিছুদিন পর থেকে সোহাগ রিমার খোঁজ নেওয়া বন্ধ করে দেন। কয়েক মাস এভাবে চলার পর, রিমা সোহাগকে দেশে ফেরার জন্য একটি উকিল নোটিশ পাঠান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সোহাগ ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে রিমার কিছু অন্তরঙ্গ ছবি ছড়িয়ে দেন।

এদিকে রিমা আক্তারের WhatsApp-এ একটি খুদে বার্তায় লেখা ছিল:
"বাপেরও বাপ আছে। এখন থেকে পাবি তোর ভিডিও। তুই কি মনে করেছিস? তোর ভিডিও দেখার জন্য রেডি থাক।"

এছাড়া, একটি অডিও ক্লিপে সোহাগ বলেন:
"আমি আর বাংলাদেশে কখনো ফিরবো না। তোরা কীভাবে সমাজে মুখ দেখাবি? তুই যাতে গ্রামে কারও সামনে মুখ দেখাতে না পারিস, তার ব্যবস্থা আমি করবো। তুই আমার কথা যখন শুনলি না, তোর পরিবার কীভাবে রাস্তায় বের হবে? আজকে ফেসবুক চালু দিছি। আস্তে আস্তে সব পাবি। তোদের দেখলেও মানুষ থুথু ফেলবে।"

এ বিষয়ে রিমা আক্তার জানান,
"আমার নাম দিয়ে ফেসবুকে আইডি খুলে আমার অন্তরঙ্গ ছবি ভাইরাল করেছে সোহাগ এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে আসছে। আমি মানসিকভাবে খুবই ক্লান্ত। লজ্জায় কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার পরিবার আমাকে উদ্ধার করেছে। পরে আমি নাজিরপুর থানায় Rima Rima নামে ফেসবুক আইডির বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করি। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সেই আইডি বন্ধ করে দেয়। কিন্তু সোহাগ থেমে নেই। সে পুনরায় আমার নামে ফেসবুকে আইডি খুলে আমার অন্তরঙ্গ ছবি ভাইরাল করছে। আমি মনে হয় আর বেশি দিন বাঁচতে পারবো না। যেকোনো সময় কোনো বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে পারি। আমি সোহাগের পরিবারকে অনেকবার জানালেও তারা কর্ণপাত করেনি। আমি আইনের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার চাই। আমি বাঁচতে চাই।"

প্রবাসী সোহাগ শেখ জানান,
"আমি টাকা নেইনি এবং কোনো ফেসবুক আইডি দিয়ে রিমার (আমার স্ত্রীর) ছবি বা ভিডিও ভাইরাল করিনি। এগুলো আমার নামে ষড়যন্ত্র। আমাকে ফাঁসাতে তারা মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।"

 

ভোরের আকাশ/রন