ইরানের পরমাণু চুক্তি বাঁচানোর জন্য জাতিসংঘের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা তেহরান এবং চুক্তির অংশীদার বিশ্ব শক্তিগুলোর প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এই চুক্তির সফলতা বা ব্যর্থতা সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ এবং মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা আর মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
২০১৫ সালে ইরান, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীনের মধ্যে যে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, সেটি "জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন" (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত। তবে ২০১৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে বের করে নেন। এর পরপরই ইরানও পরমাণু সম্পর্কিত প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসতে শুরু করে।
গত মাসে ইউরোপ এবং ইরানের কূটনীতিকরা আঞ্চলিক উত্তেজনা হ্রাস এবং পরমাণু প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেন। এদিকে, নির্বাচনে পুনরায় জয়ী হয়ে আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ নিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। জাতিসংঘের রাজনীতিবিষয়ক প্রধান রোজমেরি ডিকার্লো নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, “এটি (পরমাণু চুক্তি) নিয়ে দ্রুত কাজ করার সময় এসেছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, জেসিপিওএ’র সাফল্য বা ব্যর্থতা আমাদের সকলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ এবং মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা গ্রহণযোগ্য নয়।
এ মাসের শুরুতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানি নিরাপত্তা পরিষদে একটি চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছে, যদি প্রয়োজন হয়, তারা ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির পথে এগিয়ে যাওয়া বন্ধ করতে দেশটির ওপর সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে প্রস্তুত। জাতিসংঘে যুক্তরাজ্যের উপরাষ্ট্রদূত জেমস কারিউকি বলেন, “ইরানের হাতে পরমাণু অস্ত্র পড়া রোধে আমরা সব ধরনের কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করব এবং প্রয়োজনে নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনা হবে।”
এ বিষয়ে ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি বলেছেন, “ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনা বেআইনি এবং এর প্রতিক্রিয়া উল্টো হবে।” তিনি আরও বলেন, “ইরান স্পষ্ট জানাচ্ছে, এমন কোনো উসকানিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হলে তার সমান প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।”
জাতিসংঘের পরমাণুবিষয়ক সংস্থা আইএইএ তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইরান নাটকীয়ভাবে বিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামের সংগ্রহ বাড়িয়েছে। বর্তমানে দেশটি ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সংগ্রহ করছে, যেখানে পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজন হয় ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানি এই বিষয়ে একই ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ভোরের আকাশ/রন