জামালপুর শহরের বানিয়াবাজার এলাকায় একই সাথে দুই ইজিবাইকের চাপায় নুরুল হক (৭৫) নামে প্রবীণ সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাত ৮টার দিকে শহরের বানিয়াবাজার এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় ইজিবাইকের চাপায় গুরুতর আহত হন তিনি। রাত ৯টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জামালপুর পৌর এলাকার বানিয়াবাজার থেকে তার পত্রিকা অফিসে যাবার পথে একই সাথে দুই ইজিবাইক তাকে চাপা দেয়। স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পথেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
জামালপুর প্রেসক্লাবের সিনিয়র সদস্য, পল্লীকণ্ঠ প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক নুরুল হকের প্রথম জানাজার নামাজ আজ রবিবার সকাল ১১ টায় শহরের আল জামিয়াতুল হাবিবিয়া কওমি মাদ্রাসা মাঠ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জেলায় কর্মরত সাংবাদিক সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নুরুল হকের বর্ণিল সাংবাদিকতা জীবনের স্মৃতিচারন এবং শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি শহরে বেপরোয়া ইজিবাইক অটোরিকশা চলাচল বন্ধের দাবি এবং জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ও প্রতিবাদ জানান।
পরে নিহতের গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় জানাযার শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
নিহত নুরুল হক জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার মুন্সি নাংলা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। নিহত সাংবাদিক নুরুল হক সাংবাদিকতা শুরু করেন ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক দর্পণ ও দৈনিক জাহান পত্রিকার মেলান্দহ উপজেলার প্রতিনিধি হিসেবে। ১৯৮০ সালে মেলান্দহ প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ছিলেন। তার পিতা কবিরত্ন আব্দুল হামিদ পল্লীকণ্ঠ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার বের করেন। পরবর্তী সময়ে তার বাবার মৃত্যুর পর সাপ্তাহিক পল্লীকণ্ঠ পত্রিকার হাল ধরেন তিনি। পরে ২০০৬ সালে দৈনিক পল্লীকন্ঠ প্রতিদিন নামে আরেকটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৯৯১ সালে সরকারি চাকুরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে ফ্রিডম পার্টি থেকে (জামালপুর-০৩) মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ আসনে সংসদ নির্বাচন করেন।
প্রবীন এই সাংবাদিকের মৃত্যুতে জেলায় কর্মরত সকল সাংবাদিক সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক ব্যক্তি বর্গের মাঝে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।