logo
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৬:৩৫
শহীদ শাহজাহান সিরাজ দিবস স্মরণে আলোচনা সভা
ভোরের আকাশ ডেস্ক

শহীদ শাহজাহান সিরাজ দিবস স্মরণে আলোচনা সভা

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল এর উদ্যোগে স্বৈরাচার এরশাদ পতন আন্দোলনে ৮৪’ শহীদ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল এর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক শহীদ শাহজাহাদ সিরাজের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আলোচনা সভা শিশু কল্যাণ পরিষদের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হয়। রবিবার বিকেল ৪টায় উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল এর কেন্দ্রীয় সভাপতি গৌতম চন্দ্র শীল। আলোচনায় অংশ নেন বাহাউদ্দিন শুভ, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন; মোশাররফ হোসেন, আহ্বায়ক, ভাসানী ছাত্র পরিষদ; মোঃ তরিকুল ইসলাম, আহ্বায়ক, নাগরিক ছাত্র ঐক্য; সৈকত আরিফ, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন; রোকন ওসমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলন; সুহাইল আহমেদ শুভ, সাংগঠনিক সম্পাদক, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট; মোঃ নাহিদুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জেএসডি)।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৮৪ সালের ২২-২৩ ডিসেম্বর স্বৈরশাসক এরশাদের অবৈধ ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদ ও শোষণ-বৈষম্যমুক্ত গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার দাবিতে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ ((স্কপ) ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘট আহ্বান করে। উক্ত ধর্মঘটের সমর্থনে তৎকালীন ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনসমূহ দেশব্যাপী মিছিল মিটিংয়ের ডাক দেয়। শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের ধর্মঘট হরতালে রূপ নেয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা কাজলার গেটে সমবেত হচ্ছিল। তৎকালীন বিডিআর এর বাধা অতিক্রম করে অসীম সাহসী ছাত্ররা মিছিল নিয়ে শহরের দিকে এগুতে চাইলে বিডিআর মিছিলে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রনেতা শাহজাহান সিরাজকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে এবং ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি।

আশির দশকে স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে শহীদ শাহজাহান সিরাজসহ অনেকের জীবনের বিনিময়ে স্বৈরাচারী শাসক জেনারেল এরশাদের পতন হয়েছিল। কিন্তু আমরা গণতন্ত্র রক্ষা করতে পারিনি। আমাদের গত তিনটি জাতীয় নির্বাচন হয়েছিল বিনা ভোট এবং রাতের ভোটে। যার প্রভাব পড়েছিল স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও। ফলে সারা দেশে কায়েম হয়েছিল লুটপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের বেপরোয়া দখলদারিত্ব, ব্যাংক ডাকাতি এবং পুলিশি শাসন ব্যবস্থা। দীর্ঘ ১০ বছর ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটে একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। শতাধিক আত্মদানের বিনিময়ে কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী হাসিন সরকার পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। পরিসমাপ্তি ঘটে দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থার।

কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শতাধিক আত্মদানের বিনিময়ে দেশবাসীর অর্জিত ফলকে একটি গোষ্ঠী অপব্যবহার করার পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা সাধারণ ছাত্রের নাম ভাঙিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের পাঁয়তারা চালাচ্ছে এবং আবাসিক হল দখল করে নিজেদের রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য গুপ্ত পথে হাটঁতে শুরু করেছে। আর একটি অংশ বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নানা সুযোগ সুবিধা নিয়ে দল গঠনের নামে সারাদেশে পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের পুনর্বাসনের মধ্যে দিয়ে নিজেদের দল ভারি করার অপতৎপরতা চালাচ্ছে। মনে রাখতে হবে আমরা যখন হাসিনা সরকারের অবৈধ নির্বাচন, লুটতরাজ, ছাত্রলীগের ক্যাম্পাস দখল এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে মাঠে আন্দোলনরত ছিলাম তখন এরাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল। ফলে সকল পক্ষকে এহেন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। ৫ আগস্টের অর্জনকে ধরে রাখতে এবং অদূর ভবিষ্যতে আর-এক ফ্যাসিবাদের উত্থান যাতে না ঘটে সেই বিষয়ে সতর্ক থাকতে ছাত্র সমাজ এবং দেশবাসীকে উদ্যত আহ্বান জানান।


ভোরের আকাশ/রন