করোনা মহামারির পর জনমনে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ‘দ্য হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসের (এইচএমপিভি)’। চীন, জাপান, মালয়েশিয়া বেরিয়ে ভাইরাসটি এবার শনাক্ত হয়েছে ভারতে। ভাইরাসটি করোনার মতোই ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা এই ভাইরাস নিয়ে এখনও কোনো সতর্কতা জারি করেনি। ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২৫ সালে আবার করোনার মতো নতুন কোনো মহামারির উদ্ভব হতে পারে। যদিও কোন রোগটি মহামারি আকার ধারণ করবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বার্তা এখনই দেওয়া সম্ভব নয়। তবে এইচএমভির প্রাদুর্ভাব ভাবাচ্ছে তাদের।
একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষক মাইকেল হেড বলেন, ‘আরও একটি মহামারির আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে এখনো কোন রোগটি মহামারি আকার ধারণ করবে, সেটি নিশ্চিত না বলে আগাম মহামারির নাম দেওয়া হয়েছে ডিজিজ এক্স।’
হাম, কলেরা, বার্ড ফ্লু ও স্ক্যাবিসের মতো প্রায় ১১টি রোগকে সম্ভাব্য মহামারির তালিকায় রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে এইচএমপিভির সাম্প্রতিক প্রাদুর্ভাব চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কপালে।
চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যায়, করোনার সময়ে হাসপাতালে যেভাবে ভিড় তৈরি হয়েছিল, একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাবেও। একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে জাপানেও। দেশটির সংবাদমাধ্যম বলছে, চলতি মৌসুমে দেশটিতে ঠান্ডাজনিত সংক্রমণ ছাড়িয়েছে সাত লাখেরও বেশি মানুষের মধ্যে।
মাইকেল হেড বলেন, ‘আগামীর মহামারির প্রধান বৈশিষ্ট্য হবে মারাত্মক ছোঁয়াচে। মানুষের মৃত্যুহার পৌঁছাবে সর্বোচ্চে।’
চীনের বর্তমান অবস্থা : চীনে প্রতিনিয়ত এইচএমপিভি প্রকট হয়ে উঠলেও এখন পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিংবা দেশটির সরকার সতর্কতা জারি করেনি। যেভাবে ভাইরাসটি ছড়াচ্ছে, তাতে করে যেকোনো সময়ে দেশটি জরুরি অবস্থা জারি করতে পারে বলেও দাবি বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের।
দেশটিতে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা। বিশেষ করে আগে যাদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল, তারা নতুন এই ভাইরাসের আক্রমণে নাজুক অবস্থায় আছেন।
জ্বর, নাক বন্ধ, কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো সাধারণ ঠান্ডাজনিত সমস্যা দিয়ে শুরু হলেও পরবর্তী সময় এই ভাইরাসের সংক্রমণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। অনেক সময় সংক্রমণের তীব্রতা ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা বা কানে ইনফেকশনের মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
এইচএমপিভি ভাইরাস কী : বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনসমূহে বলা হয়েছে, ভাইরাস হলো অতিক্ষুদ্র সংক্রামক, যা শুধুমাত্র একটি জীবন্ত কোষের অভ্যন্তরে বংশবৃদ্ধি করতে পারে। ভাইরাস উদ্ভিদ, প্রাণী থেকে শুরু করে ব্যাকটেরিয়া, আর্কিয়াসহ সব জীবজগতকে আক্রান্ত করে। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি বাস্তুতন্ত্রেই ভাইরাস পাওয়া যায়। এরা হলো সবচেয়ে বহুল সংখ্যক জৈবিক সত্ত্বা।
২০০১ সালে প্রথম দ্য হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) আবিষ্কার হয়। আবিষ্কারেরও ৬০ বছর আগে থেকে ভাইরাসটি মানবজগতে রয়েছে, ফলে কোভিডের মতো নভেল বা নতুন ধরনের ভাইরাস এইচএমপিভি নয়। মূলত ১৪ বছর বয়সের নিচের শিশু এবং বয়স্করা এতে আক্রান্ত হবেন।
চীনে সম্প্রতি এটি শনাক্ত হয়। ভাইরাসের প্রকোপে চীনে প্রচুর মানুষ হাসপাতালমুখী হচ্ছেন। গত বছর চীনে ৩২৪ জন এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ২০২৩ সালে সেই সংখ্যাটি ছিল ২২৫।
বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. তাহমিনা শিরীন বলেন, এটা নতুন কোনো ভাইরাস নয়। এমনকি এ নিয়ে বাংলাদেশে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। কোভিড-১৯ একেবারে ভিন্ন ও নতুন আবহের ভাইরাস হওয়ায় এর প্রাদুর্ভাব বা মহামারির রেশ এতোটা বিস্তর হয়েছিল।
এর লক্ষণগুলো কী : জ্বর, নাক বন্ধ, কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো সাধারণ ঠান্ডাজনিত সমস্যা দিয়ে শুরু হলেও পরবর্তী সময় এই ভাইরাসের সংক্রমণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। অনেক সময় সংক্রমণের তীব্রতা ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা বা কানে ইনফেকশনের মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. তাহমিনা শিরীন বলেন, শ্বাসতন্ত্রে ছড়ায় এমন অন্যান্য ভাইরাসের মতোই এটি। অনেকটা ইনফ্লুয়েঞ্জা ধরনের ভাইরাসের আক্রমণের মতোই, যার উপসর্গ হিসেবে জ্বর-স্বর্দি-কাশি-ঠান্ডা হয়ে থাকে।
ভারতে এইচএমপিভি : গত সোমবার ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বেঙ্গালুরুতে একই দিনে দুই শিশুর শরীরে পাওয়া গেছে। প্রথমে আট মাস বয়সী এক শিশুর শরীরে ভাইরাসের হদিস মেলে। পরে তিন মাসের এক শিশুর শরীরেও একই ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যায়।
এই পরিস্থিতিতে আগে থেকেই সতর্ক ছিল ভারত। শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যায় দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ। সেই সঙ্গে হাসপাতাল ও চিকিৎসকদেরও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
ভারতের বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের এক খবরে বলা হয়েছে, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) নিশ্চিত করেছে, ওই দুই শিশুর শরীরে এইচএমপিভি ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। দেশব্যাপী শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা নিয়ে আইসিএমআরের নিয়মিত পর্যবেক্ষণে দুই শিশুর দেহে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এর আগে ২০২৩ সালে নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, ফিনল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রে এইচএমপিভি শনাক্ত হয়েছিল।
এইচএমপিভি কীভাবে ছড়াতে পারে : এইচএমপিভি অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাসের মতো ছড়ায়। এটি সাধারণত সংক্রমিত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে সৃষ্ট বায়ুকনা থেকে ছড়ায়। এছাড়া সংক্রমিত ব্যক্তির জীবাণু হাঁচি-কাশির কারণে বা জীবাণুযুক্ত হাত দিয়ে স্পর্শ করলে অন্য কেউ আক্রান্ত হতে পারেন। এইচএমপিভি আক্রান্ত কারও কাছে গিয়ে তার কাপড় বা ব্যবহার্য কোনো জিনিসি ধরে নাকে-মুখে-চোখে হাত দিলে এইচএমপিভি শ্লেষ্মাঝিল্লী দিয়ে দেহে প্রবেশ করে। আক্রান্ত হওয়ার ২-১৪ দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয়; গড়ে ৫ দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা যায়।
এই ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে কারা : করোনা ভাইরাসের মতো এই ভাইরাসেও সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা। বিশেষ করে আগে যাদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল, তারা নতুন এই ভাইরাসের আক্রমণে নাজুক অবস্থায় আছেন। বিশেষ করে যাদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা আছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে আগেও এইচএমপিভি ভাইরাসের অস্তিত্ব ছিল। এখনও শিশু আর প্রবীণদের শরীরে মিলবে এটির অস্তিত্ব। তবে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। করোনার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই, সংক্রমণ থেকে দূরে থাকা সম্ভব।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. মুশতাক হোসেন বলেন, অধিকাংশ ভাইরাসেরই সরাসরি কোনো ওষুধ নেই। তবে লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা রয়েছে; এটির ক্ষেত্রেও তাই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি এইচএমপি ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে কি না, সে বিষয়ে চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান তিনি।
কী কী সতর্কতা নেওয়া উচিত : ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ভাইরাসের সংক্রমণ কোভিডের মতো প্রাণঘাতী নয়। তবে শিশুদের ও খুব বয়স্কদের সাবধানে থাকা জরুরি। ভারতের স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক ডা. অতুল গয়াল বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এইচএমপিভি সাধারণ ফ্লু, প্রাথমিকভাবে এটি সাধারণ ফ্লু বলেই মনে হচ্ছে। তবে ঠাণ্ডা ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সংক্রমণ যেন না ছড়ায় সে বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে। হাঁচি-কাশির সময় ব্যবহৃত রুমাল বা তোয়ালে পরিষ্কার রাখতে হবে। এছাড়া ঠান্ডা ও জ্বরের জন্য সাধারণ ওষুধ সেবন করলেই হবে।’
যেকোনো সংক্রমণ ঠেকানোর একমাত্র উপায় যে পরিচ্ছন্নতা। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শিশু, বয়স্ককে পরিচ্ছন্নতায় জোর দিতে হবে। যেকোনো কিছু খাওয়ার আগে হাত পরিষ্কার করতে হবে। অযথা ভয় পাবেন না, কিন্তু সতর্ক থাকতে ভুলবেন না। পরিচ্ছন্নতাই সংক্রমণ রুখতে পারে।
বাইরে থেকে আসলে বাথরুমে গিয়ে পোশাক বদলে হাত-মুখ সাবান দিয়ে তবেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করবেন। কেন না বাইরে নানা মানুষের সংস্পর্শে থাকায় অদৃশ্য ভাইরাস আপনার সঙ্গে বাড়িতে চলে আসতে পারে।
যেসব বাচ্চার অ্যালার্জিজনিত হাঁচি, সর্দি লাগা বা হাঁপানির প্রবণতা আছে, তাদের সাবধানে রাখুন। বাড়ির বাইরে বেরোলে মাস্ক ব্যবহার করতে বলুন।
এই ভাইরাসও ড্রপলেট, অর্থাৎ হাঁচি - কাশি মারফত ছড়ায়। এই ব্যাপারে সাবধানে থাকতে হবে। তাদের সর্দিকাশি হলে তার কাছাকাছি যেতে নেই। সর্বোপরি চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা মোকাবিলায় যেসব সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল। সে সব সতর্কতা মেনেই চলতে হবে।
বাংলাদেশে কেমন প্রভাব পড়তে পারে : জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বসবাসের অনুপযোগী পরিবেশ, ভেজাল খাদ্য, জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি থাকায় বাংলাদেশে এইচএমপিভি ভাইরাসের প্রকোপ বেশি হওয়ার প্রবণতা রয়েছে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দেশে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া বেড়েছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে মানুষের জীবন-জীবিকা ও স্বাস্থ্যের ওপর। এর ফলে শুধু ভাইরাস নয়, কয়েক বছর ধরে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। এতে দেশে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পরার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বেনজীর আহমেদ বলেন, অনেক ভাইরাস হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। দেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি থাকায় এসব ভাইরাসের প্রকোপ বেশি থাকে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন, জীবনযাত্রা মান বদলে যাওয়া, ভেজাল খাদ্য, বসবাসের অনুপযোগী পরিবেশ থাকায় বাংলাদেশে অন্য রোগের প্রকোপও বেশি। তিনি বলেন, ভাইরাসপ্রতিরোধী টিকার বাইরে থাকে নিম্ন আয়ের মানুষ। বস্তি ও ভাসমান লোকদের টিকা নেওয়ার আগ্রহ কম। দেশের মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন নয়, ফলে এইচএমপিভিও করোনার মতো মহামারি আকার ধারণ করতে পারে।
২০১৯ সালের শেষদিকে চীনে ব্যাপকহারে সংক্রমণ বাড়ে কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাসের। একপর্যায়ে এটি মহামারিতে রূপ নেয়। থমকে যায় পুরো বিশ্ব। সেই সঙ্গে প্রাণ হারান লাখ লাখ মানুষ। সেই মহামারির ৫ বছর পর আবারও নতুন ব্যাধি আতঙ্কে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীন। প্রাথমিক ধারণা, রাইনোভাইরাস ও দ্য হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসের সংক্রমণে দেশটিতে রহস্যময় এই রোগের প্রাদুর্ভাব। এইচএমপিভির লক্ষণ শনাক্ত হয়েছে জাপান, মালয়েশিয়া, ভারতেও। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশও। শঙ্কা রয়েছে মহামারিতে রূপ নেওয়ার।
বেনাপোল স্থলবন্দরে সতর্কতা জারি : করোনা ভাইরাস ও এমপক্সের পর এবার নতুন এইচএমপিভি ভাইরাস (হিউম্যান মেটো নিউমো ভাইরাস) সংক্রমণ রোধে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের উপ-সহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ বলেন, ‘বিকালে এইচএমপিভি সংক্রমণ রোধে সতর্কতামূলক একটি চিঠি স্বাস্থ্যবিভাগ থেকে আমাদের কাছে এসেছে।’ তিনি বলেন, ‘এই ভাইরাসটি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে দেখা দিয়েছে। এর হাত থেকে সুরক্ষা পেতে ইমিগ্রেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে মাস্ক পরাসহ বিভিন্ন সচেতনমূলক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতকারী পাসপোর্ট যাত্রীসহ সবাইকে।’
সতর্কতা বজায় রাখতে ভারত থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা করা হচ্ছে। মাস্ক পরা, নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান, সর্দি, কাশি ও জ্বর থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শের অনুরোধ করছেন ইমিগ্রেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ।
এ বিষয়ে বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ মোহাম্মদ আহসানুল কাদের ভূঁইয়া জানান, ভাইরাস সংক্রমণ রোধে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ সতর্ক রয়েছে। ভারত থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রীদের কেউ আক্রান্ত কিনা তা পরীক্ষা করছেন ইমিগ্রেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ।
ভোরের আকাশ/রন