কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ‘জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর’ পদে সাড়ে তিনহাজার জনের নিয়োগ কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ফলে নিয়োগ পাওয়া ৩ হাজার ৫৩৪ জনের আগামী ২৯ জানুয়ারি চাকরিতে যোগদান আটকে গেল।
বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন। অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করা হয়েছে। নিয়োগবঞ্চিত শওকত আকবরসহ ১৮ জনের করা এক রিট আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে। ‘২৪ বছর ধরে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত তারা’, ‘আবেদ আলীদের স্বীকারোক্তি’, ‘ফল প্রকাশের আগেই তথ্য চেয়েছিল সিআইডি’ শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এই রিট আবেদন করা হয়। রিট আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, এ জেড এম নূরুল আমিন, মো. মাকসুদ উল্লাহ, মো. রুকনুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া।
রিট আবেদনের নথি থেকে জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) নন-ক্যাডার হিসেবে জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর, ইনস্ট্রাক্টর ও ফিজিক্যাল ইনস্ট্রাক্টর পদের (৯ম ও ১০ম গ্রেড) জন্য ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। ২০২৩ সালের ১৮ মার্চ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত বছরের ২৫ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত। তবে এ নিয়োগ পরীক্ষায় ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস’ হয়েছেÑ এমন অভিযোগ নিয়ে গত বছর বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপরও পিএসসি গত বছরের ২৬ নভেম্বর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে। মনোনীত প্রার্থীদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অধীন ১০ম গ্রেডে নিয়োগে সাময়িকভাবে সুপারিশ করা হয়। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি ৩ হাজার ৫৩৪ জনকে যোগদানের জন্য ৪৩টি পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ওইসব প্রজ্ঞাপনে সংশ্লিষ্টদের আগামীকাল ২৯ জানুয়ারি চাকরিতে যোগদান করতে বলা হয়। এ অবস্থায় চাকরিতে যোগদানসংক্রান্ত ২৩ জানুয়ারির ওই প্রজ্ঞাপন নিয়ে রিট আবেদন করা হয়। এই রিট আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে আদেশ দিলেন হাইকোর্ট। আদালত রুলসহ প্রজ্ঞাপনের কার্যক্রম স্থগিত করে আদেশ দেন। রুলে যোগদান সংক্রান্ত ২৩ জানুয়ারির প্রজ্ঞাপনগুলো (৪৩টি) কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। শিক্ষা সচিব, পিএসসির চেয়ারম্যান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ (নন-ক্যাডার) বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। ফলে তাদের নিয়োগের কার্যক্রম আটকে গেল।
ভোরের আকাশ/ সু