পিরোজপুরের জেলা হাসপাতালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে রাজিব মন্ডল (২২) এবং রাহাত রব্বানী (২৪) নামে দুইজন দালালকে আটক করা হয়েছে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করে দুদক। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের ১৫ দিনের কারাদণ্ড এবং ১০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুইদিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আদালত পরিচালনা করেন পিরোজপুরের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াজ মাহমুদ।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত রাজিব মন্ডল পিরোজপুর সদর উপজেলার উত্তর শোরগোলা গ্রামের রবিন মন্ডলের ছেলে এবং রাহাত রব্বানী পিরোজপুর সদর উপজেলার খামকাটা গ্রামের আজাদ রব্বানীর ছেলে।
দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে নিজেদের পরিচয় গোপন করে জেলা হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করে দুদক। এ সময় দুই দালালকে সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে আটক করা হয়। অভিযানের অংশ হিসেবে দুদকের পাঁচ সদস্যের একটি দল হাসপাতালের রান্নাঘর, বিভিন্ন বিভাগ এবং ঔষধের স্টোর রুম পরিদর্শন করে।
পরিদর্শনে দেখা যায়, রোগীদের খাবারে প্রতিদিন ১০০ জনকে ৬০ গ্রাম করে মাংস দেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে মাত্র ৫০ গ্রাম করে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া নিম্নমানের চাল সরবরাহ করা হচ্ছে। ঔষধ সরবরাহ রেজিস্ট্রারে শিশু বিভাগের জন্য কডসন (১০০ মিলিগ্রাম) নামের ৪০০ পিস এবং ট্রাইজেট (২৫০ মিলিগ্রাম) নামের ৩,৭২৭ পিস ঔষধ থাকার কথা উল্লেখ থাকলেও কোনো ঔষধ পাওয়া যায়নি।
অভিযানে আরও দেখা যায়, সাউথ বাংলা কর্পোরেশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসপাতালের ঔষধ ও যন্ত্রপাতি সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ১ কোটি ৭৬ লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকার একটি চেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রদান করলেও নথিপত্রে ঔষধ সরবরাহ সঠিকভাবে দেখানো হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক এবং পিরোজপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াজ মাহমুদ বলেন, "দুদকের অভিযানে দুই জন দালাল আটক করা হয়। পরে তারা দোষ স্বীকার করায় তাদের ১৫ দিনের কারাদণ্ড এবং ১০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুইদিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।"
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন বলেন, "হাসপাতালে নিম্নমানের খাবার ও ঔষধ সরবরাহ এবং আর্থিক গড়মিল পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করে প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"