logo
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১৪:৫২
সাতক্ষীরা
জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের সহকারী সাইফুল ইসলাম বাচ্চুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের সহকারী সাইফুল ইসলাম বাচ্চুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

  • রেজিস্ট্রার অফিস বাচ্চুর হাতে জিম্মি
  • জেলার সাত অফিস থেকে মাসে আদায় ২০ লক্ষাধিক টাকা
  • মাসিক ও বার্ষিক টাকার ভাগ পান অনেকে

সাতক্ষীরা জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের অফিস সহকারী মোঃ সাইফুল ইসলাম বাচ্চুর বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম, নারী নকল নবিশদের হয়রানি ও ক্ষমতার অপব্যবহার চরমে উঠেছে। এসব বিষয়ে অভিযোগ করেও কর্তৃপক্ষে ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। নানাবিধ অভিযোগে বাচ্চুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী।

সাইফুল ইসলাম বাচ্চু জেলা রেজিস্ট্রার অফিসে যেভাবে ছড়ি ঘোরান, সেভাবেই চলেছে। জেলা রেজিস্ট্রারও বাচ্চুর বাইরে কথা বলেন না, এমনই অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। সম্প্রতি আবেদ আলী নামের একজন ব্যক্তি নিবন্ধন শাখার মহাপরিদর্শক বরাবর বাচ্চুর দুর্নীতি ও অনিয়মের বিচার চেয়ে অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্র জানায়, নকলনবিশ থেকে আসা অফিস সহকারী পদে যোগদানের পরে সাইফুল ইসলাম বাচ্চুর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৬ সাল থেকে জেলা রেজিস্ট্রার অফিস এবং জেলার ৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস একাই নিয়ন্ত্রণ করেন। জেলার ৭টি অফিস থেকে গড়ে মাসে ৪০০০ হাজার দলিল রেজিস্ট্রি হয়। এতে বাচ্চু দলিল প্রতি নেন ২০০ টাকা, মাসে তিন হাজার, নকল প্রতি নেন ১৫০ টাকা। প্রতি মাসে পরিদর্শনে অফিস প্রতি দিতে হয় লাখ টাকা, ৩০ জন কর্মচারিকে প্রতিমাসে বাচ্চুকে দিতে হয় ৫ হাজার টাকা করে।

জেলায় ১০০ জন নিকাহ রেজিস্ট্রারকে বছর ইনডেন্ট প্রতি তিন হাজার টাকা দিতে হয়, নিকাহ রেজিস্ট্রারদের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়ার নামে লাখ টাকা নিয়ে থাকেন বাচ্চু। অভিযোগে আরও জানা গেছে, জেলা অফিসে প্রতিবছর আসবাবপত্র কেনার জন্য যে বাজেট থাকে, তার কোন কাজ না করে ভূয়া বিল ভাউচার করে টাকা হজম করে ফেলে বাচ্চু ও তার সিন্ডিকেট। সহকারি বদলিতে দিতে হয় পাঁচ লাখ টাকা, মোহরার তিন লাখ টাকা ও পিয়নে দিতে হয় দুই লাখ টাকা। দলিল লেখকদের লাইসেন্স নবায়ন করতে জনপ্রতি দিতে হয় ১৫০০ টাকা। জেলায় লাইসেন্স রয়েছে মোট ৪০০টি।

তৃতীয় শ্রেণির একজন কর্মচারি হয়েও সাইফুল ইসলাম বাচ্চু সাতক্ষীরা শহরে নির্মাণ করেছেন আলিশান বাড়ি এবং কিনেছেন শত বিঘা জমি। কৌশলে নিজের ছেলেকে দিয়েছেন নকল নবিশের চাকরি, যদিও তিনি অফিস করেন না। বোনকে করিয়েছেন পদন্নতি। বাচ্চু জেলা রেজিস্ট্রার অফিসকে নিজের বাড়ি মনে করেন এবং নিজের ইচ্ছামত অফিসের কাজ করেন। অফিসের প্রধান সহকারী নুসরাত ফাতেমাকে দিয়ে কোন কাজ করান না, কম্পিউটার অপারেটরেরও একই অবস্থা। নিজেই করেন যাবতীয় কাজ।

ভুক্তভোগীরা সাইফুল ইসলাম বাচ্চুর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাইফুল ইসলাম বাচ্চু তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই।