ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) গভীর রাতের চিঠির মাধ্যমে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।
এর প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ বিএনপির নেতা-কর্মীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য হরতালের ডাক দেন। তবে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা হরতাল প্রত্যাহার করেন।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ড. টি. এম. মাহবুবুর রহমান জানান, পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী শনিবার সকালে ইউনিয়ন সম্মেলনের ভোট গ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু জেলা বিএনপির নেতারা আকস্মিকভাবে শুক্রবার মধ্যরাতে চিঠি দিয়ে সম্মেলন স্থগিতের নির্দেশ দেন।
এমন হঠাৎ সিদ্ধান্তে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন তৃণমূল বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তারা জেলা বিএনপির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হরতালের ডাক দেন এবং বিক্ষোভ শুরু করেন।
দুওসুও ইউনিয়ন বিএনপি সূত্রে জানা যায়, সম্মেলনকে ঘিরে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। কিন্তু ভোটগ্রহণ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে হঠাৎ করে জেলা বিএনপি সম্মেলনটি স্থগিতের ঘোষণা দেয়।
এর প্রতিবাদে প্রার্থী ও ভোটাররা বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য হরতালের ডাক দেন। পরে তারা বেলা ১১টায় হরতাল প্রত্যাহার করেন।
এর আগে, শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) মধ্যরাতে চিঠি পাওয়ার পর ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা রাস্তায় নেমে আসেন। তারা বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে সড়ক অবরোধ করেন এবং মিছিল বের করেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের কথা ছিল। কিন্তু জেলা কমিটির একতরফা সিদ্ধান্তে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। এতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে।
স্থানীয় বিএনপি নেতা জুলফিকার আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এভাবে ভোট বাতিল করা মানে আমাদের মতামতকে দমন করা। আমরা চাই গণতান্ত্রিকভাবে নেতা নির্বাচন হোক।”
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাফরুল্লাহ বলেন, "বর্তমান কিছু পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং দলের মধ্যে যেন অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য সম্মেলনটি স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।"
তিনি নেতা-কর্মীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, "জেলা বিএনপি থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে। শিগগিরই এ বিষয়ে একটি সমাধানে আসা হবে।"
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৌকত আলী সরকার বলেন, "পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আমরা কাজ করছি।"