ক্ষমতাসীন ব্যক্তির আশীর্বাদ কারও মাথার ওপর থাকলে বড় অপরাধ করেও যে শাস্তি পেতে হয় না বরং বারবার পুরস্কৃত হওয়া যা; তার নজিরবিহিন দৃষ্টান্ত গড়েছেন জাতীয় নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ। হাসপাতালে কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ওই কমিটির তদন্তে কেনাকাটায় দুর্নীতির প্রমাণ মেলে। পরিচালকসহ জড়িতদের শাস্তির সুপারিশ করা হয়। কিন্তু আজও কেউ শাস্তি পায়নি। অথচ ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সরকারি চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন দফায় সাত বছর হাসপাতালটির পরিচালক হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেন অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদকে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার ছয় মাস পরও এই এখনও দীন মোহাম্মদ বহাল তবিয়তে আছেন! খোলস পাল্টে তিনি বর্তমান সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাব এবং জামায়াতপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন এনডিএফ শীর্ষ নেতাদের ঘনিষ্ঠ তালাভে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
তিন দফায় সাত বছর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ:
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের একাধিক চিকিৎসক-কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ২০০৩ সালে পূর্ণাঙ্গ নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ‘১০তলা ভবনে ৩শ’ বেডের অত্যাধুনিক নিউরো সায়েন্স ইনস্টিটিউটটি’ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ২০০৯ সালে নিউরোলজি ও নিউরো সার্জারিবিষয়ক পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাসেবা দেশে প্রতিষ্ঠা করার কার্যক্রম শুরু করা হয়। এরপর ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ইনস্টিটিউটটি চালু করা হয়। প্রতিষ্ঠাকালে এ হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ। সেই থেকে তার যাত্রা শুরু। ২০১৮ সালে ২২ ডিসেম্বও তার সরকারি চাকরির মেয়াদ শেষ হয়। এরপর ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ২ বছরের জন্য চুক্তিতে এই হাসপাতালের পরিচালক তিনি হিসেবে নিয়োগ পান। দুই বছর মেয়াদ শেষে ২০২০ সালে আবারও ৩ বছরের জন্য তাকে একই দায়িত্বে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ২০২৪ সালের ৮ জানুয়ারি তাকে আবারও ২ বছরের জন্য পরিচালক পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়।
সরকারি চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তার দফায় দফায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ার রহস্য খুঁজতে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাজী দীন মোহাম্মদ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক প্রভাবশালী সদস্যের চাচাত ভাই হওয়ার সুবাদে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হয়ে ওঠেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। স্বাস্থ্য খাতের নীতি-নির্ধারণী বৈঠকগুলোতে অন্য পরিচালকরা ডাক না পেলেও তার ছিল সরব উপস্থিতি। তার উপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে তৎকালীন মন্ত্রী, সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ভাষ্য ছিল; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছায় গুরুত্বপূর্ণ সভাগুলোতে তাকে রাখা হয়। এ কারণে একটি হাসপাতালের পরিচালক হলেও তার ভয়ে ততষ্ট থাকতেন মন্ত্রী, সচিব, মহাপরিচালক থেকে শুরু করে স্বাাচিব, বিএমএর নেতারাও। এ সুযোগে তিনি এতোটাই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন যে অনিয়মই ছিল তার কাছে নিয়ম। গণমাধ্যমেও নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল ও কাজী দীন মোহাম্মদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করতে একধরনের অলিখিত বিধিনিষেধ ছিল। সরকারি চাকরি করেও ইস্কাটনে এইচপিআরসি নামে একটি হাসপাতাল খোলেন দীন মোহাম্মদ। শত শত রোগী প্রতিদিন ওই হাসপাতালে ভিড় করেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ইস্কাটনে এইচপিআরসি হাসপাতালটির পরিবেশ এতোটাই অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা যেখানে সুস্থ মানুষ গেলেও অসুস্থ হওয়ার শংকা রয়েছে। অথচ এই হাসপাতালেই প্রতিদিন শত শত রোগীর চিকিৎসা দেন এই দীন মোহাম্মদ। সরকারি কর্মঘণ্টার আগেই তিনি এইচপিআরসি হাসপাতালের উপস্থিত হন প্রতিদিন। যেসব রোগী তার কাছে চিকিৎসার জন্য আসেন তাদের ওষুধ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা সব এইপিআরসি অথবা তার নির্ধারিত হাসপাতাল থেকে করাতে হয়। এর ব্যত্যয় ঘটলে তিনি ওই রোগীর চিকিৎসা দেন না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী রোগী ও তাদের স্বজনদের।
দুর্নীতি করেও ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে:
ভাইরাস ও ছত্রাকের আক্রমণ শনাক্তে রোগীর মস্তিষ্কের রস সংগ্রহে ব্যবহৃত হয় বিশেষ ধরনের এক সুই। দেশের বাজারে যার প্রতিটির মূল্য ২৫০ টাকা। অথচ এই সুচই প্রতিটি ২৫ হাজার টাকায় কেনা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় চামড়া আটকে রাখার জন্য ব্যবহৃত হয় একধরনের বিশেষ যন্ত্র, যার নাম টিস্যু ফরসেপস। দেশের বাজারে যা প্রতিটি পাওয়া যায় মাত্র ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। কিন্তু এটি কেনা হয়েছে প্রতিটি ২০ হাজার টাকায়। রোগীর প্রস্রাব ধরে রাখার ইউরিনারি ব্যাগের প্রতিটির বাজারমূল্য ৬০ টাকা, কিন্তু এই ব্যাগই প্রতিটি কেনা হয়েছে ১ হাজার ৩০০ টাকায়। ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এক মাসের জন্য ছয় কোটি টাকার এমএসআর পণ্য অস্বাভাবিক এমন দরে ক্রয় করেন নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নিউরো সায়েন্স হাসপাতাল গড়ে মাসে ১০ থেকে ১১ কোটি টাকার এমএসআর পণ্য কেনাকাটা করে থাকে। বছরে প্রতিষ্ঠানটি ১৩০ কোটি টাকার বেশি কেনাকাটা করে। যার বড় অংশেই এমন সাগর চুরি হয় বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। জানা গেছে, ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে ‘ভিক্টর ট্রেডিং করপোরেশন’ এবং ‘এবি ট্রেডিং করপোরেশন’ নামে দুটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মোট ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকার বেশি এমএসআর পণ্য ক্রয় করে নিউরো সায়েন্সেস কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ভিক্টর ট্রেডিংয়ের কাছ থেকে ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৭৭ হাজার ৮৫০ টাকার এবং এবি ট্রেডিংয়ের কাছ থেকে ২ কোটি ৭৩ লাখ ১৩ হাজার ৬৫০ টাকার এমএসআর পণ্য কেনা হয়।
এবি ট্রেডিং করপোরেশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ডায়াবেটিসের রোগীর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরিমাপের জন্য যে স্টিপ ব্যবহার হয় তার দাম রেখেছে প্রতিটি ২৮ টাকা। সাধারণত বাজারে খুচরা ক্রেতারা এই স্টিপ প্রতিটি ১০-১২ টাকায় কিনে থাকেন। আর এর সুচ ২০-২৫ পয়সায় কিনে থাকেন ক্রেতারা, কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেই সুইয়ের মূল্য ধরেছে প্রতিটি ২ টাকা।
কার্যাদেশ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এবি ট্রেডিং করপোরেশনের সরবরাহ করা ২ কোটি ৭৩ লাখ টাকার পণ্যের মধ্যে সব থেকে বেশি কেনা হয়েছে লাম্বার ড্রেনেজ সিস্টেম। রোগীর মস্তিষ্ক থেকে রসসংগ্রহ করা হয় এক ধরনের সুইয়ের মাধ্যমে, যাকে লাম্বার ড্রেনেজ বলে। সাধারণত ভাইরাস ও ছত্রাকের আক্রমণ শনাক্ত করা যায় এ পরীক্ষার মাধ্যমে। এ ছাড়া রোগীর মস্তিষ্কের প্রেসারও নির্ণয় করা যায়। এ ধরনের একটি সুইয়ের বাজারমূল্য ব্যাগসহ ২৫০ টাকা। অথচ নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতাল এটি ক্রয় করে কিনেছে প্রতিটি ২৫ হাজার টাকায়। প্রতিটি ইভিডি সেটের বাজারমূল্য ৩০০ টাকা, কেনা হয়েছে ১৬ হাজার টাকায়। এটি কিনেছে ২০৬ সেট, প্রতি সেটের দাম ২৫ হাজার টাকা করে মোট টাকার পরিমাণ ছিল ৫১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এই ২০৬ সেটের প্রকৃত বাজারমূল্য ৫১ হাজার ৫০০ টাকা। এ ক্ষেত্রে একটি পণ্যেই প্রায় ৫১ লাখ টাকা মুনাফা করা হয়েছে।
রোগীর মূত্রনালিতে ব্যবহারের ব্যাগের বাজারমূল্য প্রতিটি ৪৫ টাকা, কেনা হয়েছে ১ হাজার ৩০০ টাকায়। প্রধান ধমনির জন্য ব্যবহৃত প্রতিটি ক্যানুলার বাজারমূল্য ৮০ টাকা, কেনা হয়েছে ১ হাজার ৪০০ টাকায়। রক্তের ব্যাগ থেকে রক্ত নেওয়ার টিউবসহ একটি কাঠামো, যার নাম ব্লাড ট্রান্সফিউশন সেট, এটির বাজারমূল্য প্রতিটি ২২ টাকা। অথচ প্রতিটি কেনা হয়েছে ৯৫ টাকায়। একই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রতিটি বাঁকানো কাঁচি (ফাইন কার্ভড সিজর) কেনা হয়েছে ১০ হাজার ৫০০ টাকায়, অথচ বাজারে এর দাম মাত্র ৪০০ টাকা। বাঁকানো কাঁচি কেনা হয়েছে মোট ১০ লাখ ৫ হাজার টাকার। মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচারের সময় একধরনের আঠা ব্যবহার হয়, যার নাম অ্যাডহেসিব ড্রাপার। বাজারে প্রতি পিস এমন আঠার দাম ৭০০ টাকা, কেনা হয়েছে ১ হাজার ৯৮০ টাকায়। মোট ৩৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার আঠা কেনা হয়েছে। ক্যানসার জাতীয় রোগ আছে কি না, তা পরীক্ষার জন্য শরীর থেকে টিউবের মাধ্যমে টিস্যু নেওয়া হয়, যার নাম মাইক্রোবুনেট সেট। এর একটি সেটের বাজারমূল্য ৬০-৭০ টাকা। কেনা হয়েছে ১ হাজার ৫০ টাকায়। মোট ২ হাজার ৯০০ সেট কেনা হয়েছে ৩০ লাখ ৩৫ হাজার টাকায়।
অণুবীক্ষণ যন্ত্র যখন কেনা হয়, তখন যন্ত্রের মুখের সামনে ঢাকনাসহই কেনা হয়। কিন্তু নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতাল নতুন করে ৬০০ অণুুবীক্ষণ যন্ত্রের ঢাকনা কিনেছে। প্রতিটি প্লাস্টিকের ঢাকনা কিনেছে ১ হাজার ৭৯০ টাকায়, আর এর জন্য মোট ব্যয় হয়েছে ১০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। রাজধানীর তোপখানা ও শাহবাগের মেডিকেল পণ্য বেচাকেনার মার্কেট ঘুরে জানা গেছে, বাস্তবের দামের চেয়ে নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালের এসব কেনাকাটা হয়েছে অনেক বেশি দামে। কোথাও কোথাও মূল দামের চেয়ে পার্থক্য ১০০ গুণ বেশি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক-কর্মকর্তা জানান, নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালে বছরে এমএসআর পণ্য কেনা হয় শতকোটি কোটি টাকার ওপরে। দেশের সব বড় সরকারি হাসপাতাল প্রতি মাসে এমএসআর পণ্য ক্রয় করে থাকে। আর এর প্রতিটির কেনাকাটায় ভয়াবহ দুর্নীতি হয়। এটা ‘ওপেন সিক্রেট’। মন্ত্রণালয়ের ‘মহাপরাক্রমশালী’ একটা সিন্ডিকেট এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। বাস্তবে এসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নেই বলে তাদের দাবি।
২০১৯ সালে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভয়াবহ এ দুর্নীতির তদন্ত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি। তদন্তে দুর্নীতির বিষয়ে প্রমাণ মেলে। কিন্তু আজও পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে শাস্তি দেওয়া হয়নি।
তবে মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলছে, দুর্নীতির প্রমান পাওয়ার পরও শেখ হাসিনার নির্দেশেই ডা. দীন মোহাম্মদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এরপর ২০১৮ সাল থেকে তাকে প্রথমে দুই বছর, পরে তিন বছর এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে আরও ২ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। এই নিয়োগও হয়েছিল শেখ হাসিনার নির্দেশে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস (নিন্স) ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ ও যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. বদরুল আলমের পদত্যাগের দাবিতে কর্মবিরতি ঘোষণা করেন সর্বস্তরের চিকিৎসকরা। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও আউটসোর্সিংয়ের কর্মচারীদের হামলায় তিন চিকিৎসকসহ ১০ জন আহত হওয়ার ঘটনায় এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
চিকিৎসকদের অভিযোগ, হামলাকারীরা নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদের অনুগত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চার মাসে আগে নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল থেকে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নেতা অধ্যাপক ডা. গুরুদাস মণ্ডলকে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি করা হয়। সম্প্রতি তাকে আবার নিন্সে ফিরিয়ে আনা হলে এ নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।
এই আদেশের প্রতিবাদ ও বাতিলের দাবিতে সকালে হাসপাতালের ৪০২ নম্বরে কর্মসূচিতে মিলিত হন চিকিৎসকরা। সেখানে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও আউটসোর্সিং কর্মীরা তাদের অবরুদ্ধ করে হামলা চালায়। অভিযোগের সত্যতা জানতে অধ্যাপক দীন মোহাম্মদকে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফরকে ফোন করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হননি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, স্বাস্থ্য খাতে অস্বাভাবিক দামে কেনাকাটা ও দুর্নীতি নিয়ে নতুন করে বলা কিছু নেই। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর আশ্রয়-প্রশ্রয় না দিলে দুর্নীতি করার সুযোগ থাকে না। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে মিলেমিশে দুর্নীতি চলছে। শক্ত হাতে দুর্নীতি দমন করতে না পারলে দরিদ্র মানুষের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না।
ভোরের আকাশ/মি