মধ্যপ্রাচ্যের বৈরি দুই দেশ সৌদি আরব ও ইরান। সাম্প্রতিক ইয়েমেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দ্বন্দ্ব নিরসনে ইরাকের মধ্যস্থতায় দেশ দুটির মধ্যে গত বছর চার দফা আলোচনা হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। এখন সৌদি নিজেই আগ্রহী ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংলাপে।
মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনে শনিবার সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সউদ বলেছেন, রিয়াদ তেহরানের সঙ্গে পঞ্চম দফায় সরাসরি সংলাপে বসতে ইচ্ছুক।
ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালে করা যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয়জাতি পারমাণবিক চুক্তি পুনর্জ্জীবিত করা হচ্ছে শিগগিরই। এ নিয়ে ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে পক্ষগুলোর কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে এবং তার ফল ইতিবাচক। কয়েকদিনের মধ্যেই চুক্তিতে ফেরতের সিদ্ধান্ত জানানো হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গ ধরে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যদি ২০১৫ সালের চুক্তি পুনর্জ্জীবিত করা হয়, তাহলে সেটিই হবে প্রারম্ভিক পয়েন্ট, শেষ পয়েন্ট নয়।
তিনি বলেন, ইরানের কাছে আমাদের প্রতিবেশীদের জোরালো চাওয়া হচ্ছে বিদ্যমান ইস্যুগুলোর সমাধান, আমরা আশা করবো, সমস্যা সমাধানের জন্য একটি নতুন কার্যকৌশল খুঁজে বের করার জোরদার ইচ্ছা সবারই থাকবে।
মধ্যপ্রাচ্যের দুই শক্তিধর দেশ সৌদি সুন্নি আর ইরান শিয়াপ্রধান। দুই দেশের মধ্যে ক্ষমতার আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব এমনিতেই চলছিল। মূলত ইরানের পারমাণবিক শক্তিধর হওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের শুরু। তবে সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি তিক্ত হয়ে পড়ে ২০১৬ সালে। ওই সময় রিয়াদ কর্তৃপক্ষ দুই শিয়া নেতাকে ফাঁসি দিলে প্রতিবাদে তেহরানে সৌদি দূতাবাসে হামলা হয়। ওই ঘটনায় দুই দেশের সম্পর্ক একেবারেই ছিন্ন হয়। এরপর ইয়েমেন ইস্যুতেও দ্বন্দ্বে জড়ায় দুই দেশ। হুথি বিদ্রোহীদের সমর্থন ও অস্ত্র দেওয়ার অভিযোগ ইরানের বিরুদ্ধে আর সৌদির সামরিক জোট হুথিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধই চালিয়ে যাচ্ছে ইয়েমেনে।
আঞ্চলিক শান্তি আনতে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল খাদিমি ২০২১ সালে বাগদাদে দুই দেশকে আলোচনায় বসায়। চার দফা আলোচনায়ও কোনো সমাধান আসেনি।
তবে সম্প্রতি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খাতিবজাদে পঞ্চমদফা সংলাপে বসার আশাপ্রকাশ করেছিলেন। তাতেই সাড়া দিল সৌদি।
সূত্র: আল জাজিরা।
মন্তব্য