রাশিয়ার ইউক্রেনের আক্রমণের মধ্যে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন যে, রাশিয়া বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে ইউক্রেনের সাথে আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছেন।
রাশিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা আরআইএ নভোস্তিকে উদ্বৃতি করে সিএনএন এই খবরটি জানিয়েছে।
পেসকভ আরো বলেন, ‘তবে এই আলোচনাতে ইউক্রেনকে ‘নিরপেক্ষ অবস্থা’ বজায় রাখতে হবে এবং বেসামরিকীকরণ এই আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। রাশিয়া কোনো অবস্থাতেই চাই না ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিক।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে পুতিন আলোচনায় রাজি হবেন এমন কোনো ইঙ্গিত এখনো পাওয়া যায়নি।
মিনস্ক একটি তাৎপর্যপূর্ণ স্থান, কারণ যেখানে ২০১৪ সালে পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার সাথে ওই সময়ে চলমান সংঘাতের অবসান ঘটাতে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছিল।
ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়ার নেতারা মিনস্কে করা চুক্তিগুলো ছিঁড়ে ফেলেছেন বলে ধরে নেওয়া যায়।
এর আগে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছিলেন, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী অস্ত্র সমর্পণ না করা পর্যন্ত ইউক্রেনের সাথে কোনো আলোচনা হবে না।
স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেন পুতিন। তাঁর এ নির্দেশের পরই ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী।
আজ দ্বিতীয় দিনের মতো ইউক্রেনে হামলা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া।
ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযানের প্রথম দিনটি সফল হয়েছে বলে দাবি করেছেন রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ।
অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রুশ হামলায় তাঁর দেশের অন্তত ১৩৭ জন সেনা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩১৬ জন।
পূর্ব ইউক্রেনে ‘বিছন্নতাবাদীদের’ নিয়ন্ত্রণে থাকা দুটি অঞ্চল দোনেস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি এবং ওই অঞ্চলে শান্তিরক্ষার নামে সেনা পাঠানোয় একের পর এক পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ছে রাশিয়া।
মঙ্গলবার রাতে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া ভাষণে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন।
এর কিছুক্ষণ আগেই যুক্তরাজ্য নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের পথ ধরে কানাডা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
ইউক্রেন সীমান্ত ঘিরে রুশ সেনা মোতায়েন নিয়ে পশ্চিমাদের আগ্রাসনের অভিযোগের উত্তেজনার মধ্যেই গত সোমবার দোনেস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। এরপর সেখানে শান্তিরক্ষী মোতায়েনের নির্দেশ দেন তিনি।
এরপরই নিষেধাজ্ঞা আরোপ শুরু করে পশ্চিমা বিশ্ব। প্রথমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাজ্য। এরপর ঘোষণা আসে যুক্তরাষ্ট্রের।
সূত্র : বিবিসি
মন্তব্য