-->
রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনা

বিশ্বের নজর বেলারুশে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বিশ্বের নজর বেলারুশে
বেলারুশ সীমান্তে সোমবার শান্তি আলোচনায় অংশ নেন রাশিয়া-ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা। ছবি-সংগৃহীত

বহুল প্রতীক্ষিত শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় বেলারুশের সীমান্তবর্তী গোমেল অঞ্চলে বৈঠকে বসেন রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা। আলোচনার মধ্য দিয়ে ইউক্রেন সংকট নিরসনের দ্বার উন্মুক্ত হবে বলে আশা বিশ্ববাসীর। কিয়েভ জানিয়েছে, তারা এ মুহূর্তে যুদ্ধবিরতি এবং রুশ সেনা প্রত্যাহার চায়।

অন্যদিকে রাশিয়ার প্রতিনিধিদলের প্রধান ভ্লাদিমির মেদিনস্কি বলছেন, মস্কো এমন বোঝাপড়া চায় যাতে দুই পক্ষেরই স্বার্থ রক্ষা হয়। গত ৫ দিনে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আগ্রাসন আর পরমাণু অস্ত্রের বিশেষ সতর্কতা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল বিশ্ববাসী। গতকালের শান্তি আলোচনা শুরুর মধ্য দিয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে বিশ্ববাসীর মনে। তাই সবার নজর এখন বেলারুশের দিকেই।

যুদ্ধ মানেই প্রাণহানি, সম্পদের ক্ষতি, বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বেড়ে যাওয়া, শেয়ারের মূল্য পড়ে যাওয়া, ক্ষুধা-দারিদ্র্য-অনাহার বেড়ে যাওয়া, দুর্ভিক্ষ দেখা দেওয়া। ইরাক ও আফগান যুদ্ধের দগদগে ঘা এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে বিশ্ববাসী। তাই এই মুহূর্তে নতুন করে একটা বড় যুদ্ধ নেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে নেই বিশ্ব। এ কারণে সারা বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে বেলারুশের দিকে।

অপেক্ষায় আছে কবে একটি শান্তির বাণী আসবে। মানুষ স্বস্তিতে নিশ্বাস ফেলতে পারবে। বৈঠকটি ঠিক কোন জায়গায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে নিরাপত্তাজনিত কারণে তা গোপন রাখা হয়েছে। বৈঠকের স্থান বলতে কেবল গোমেল অঞ্চলে প্রিপায়াত নদীর তীরের কথা জানানো হয়েছে। খবর: বিবিসি, সিএনএন ও আলজাজিরার।

বেলারুশের গোমেল অঞ্চলে শুরু হওয়া বৈঠকে রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে রয়েছেন ভøাদিমির মেদিনস্কি। অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলে রয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অলেক্সি রেজনিকভ, প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াকসহ অনেকেই। ইউক্রেন আগেই এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হবে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি ও ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহার। রুশ প্রতিনিধি প্রধান মেদিনস্কি বলেন, আমরা সারা রাত জেগে তাদের অপেক্ষায় ছিলাম। দুর্ভাগ্যবশত রাতভর তারা একাধিকবার তাদের আসার সময় পরিবর্তন করেছে। তাই আজ দুপুর ১২ টায় বৈঠকের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

এদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। ইউক্রেনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জায়ার দুই শহর বারদিয়ানস্ক ও এনারহোডারের দখল নিয়েছে রুশ বাহিনী। জাপোরিজ্জায়ার পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিও বর্তমানে রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। যে লক্ষ্যে এই অভিযান শুরু করেছে, তা এখনো অর্জিত হয়নি বলে জানিয়েছে রাশিয়া।

তবে রাশিয়া বেশি সময় নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই ফেদরোভ। তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট পুতিন ২ মার্চের মধ্যেই জয় দিয়ে এই অভিযানের শেষ দেখতে চান। এটাই যদি হয় তাহলে পুতিন রোববার দেশটির পারমাণবিক বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলায় যারা মনে করেছিল এই নির্দেশ ইউক্রেন যুদ্ধকে বৃহত্তর পারমাণবিক সংঘাতে পরিণত করতে পারে তার আর কোনো আশঙ্কা থাকে না।

তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিকল্প হলো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। হয় আমাদের তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে যেতে হবে। না হয় যে দেশটি আন্তর্জাতিক সব নিয়মনীতি লঙ্ঘন করছে, তার জন্য তাকে মূল্য দিতে বাধ্য করা। ইউক্রেনে আগ্রাসনের জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা বিশ্ব সরব হয়েছে। ইতোমধ্যে নানা ক্ষেত্রে মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

রুশ হামলায় পূর্ব ইউরোপের ছবির মতো সুন্দর এই দেশটি ক্ষতবিক্ষত হলেও ইউক্রেন এখন বলছে, আক্রমণের তীব্রতা কমিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। যদিও মাত্র একদিন আগেই চতুর্দিক থেকে ইউক্রেনে হামলা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছিল মস্কো। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানায়, রুশ হামলাকারীরা আক্রমণের গতি কমালেও ইউক্রেনের কিছু এলাকায় এখনো সাফল্য অর্জনের চেষ্টা করছে তারা। সোমবার রাজধানী কিয়েভ থেকে কারফিউ তুলে নেওয়া হয়েছে। মুদি দোকানগুলো খোলা হয়েছে। ফলে মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারছে। গত দুই দিন ধরে বেশিরভাগ মানুষই বাড়ির আন্ডারগ্রাউন্ডে অবস্থান করছিলেন।

সংঘাতে এ পর্যন্ত ইউক্রেনের ৩৫২ বেসামরিক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে সংঘাতে রাশিয়ার পাঁচ হাজারের বেশি সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাঁচ হাজার তিনশ রুশ সেনা নিহত হয়েছে। একই সঙ্গে আরো দাবি করেছে, ইউক্রেন বাহিনী রাশিয়ার ১৯১টি ট্যাঙ্ক, ২৯টি যুদ্ধবিমান, ২৯টি হেলিকপ্টার এবং ৮১৬টি সাঁজোয়া যান ধ্বংস করেছে।

যুদ্ধবিরতি চায় কিয়েভ

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পঞ্চম দিনে যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে। কিয়েভ বলেছে, তারা এ মুহূর্তে যুদ্ধবিরতি এবং রুশ সেনা প্রত্যাহার চায়। অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রতিনিধিদলের প্রধান ভ্লাদিমির মেদিনস্কি বলছেন, মস্কো এমন এক বোঝাপড়া চায় যাতে দুই পক্ষের স্বার্থ রক্ষা হবে। বৈঠক শুরুর আগে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি রুশ সেনাদের অস্ত্র নামিয়ে রাখার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে ইউক্রেইনকে দ্রুত সদস্যপদ দেওয়ার জন্য ইইউকেও অনুরোধ করেন তিনি।

ইউক্রেইনের প্রতিনিধিদলের মধ্যে বেশ কয়েকজন ঊচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থাকলেও প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিজে নেই। এর আগে খবর বের হয়েছিল, পরিকল্পনা, সংগঠন ও নিরাপত্তা ইস্যুজনিত কারণে শান্তি আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে। রোববার এক ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছিলেন, এই আলোচনার মধ্য দিয়ে সংকট সমাধানে বড় ধরনের কোনো অগ্রগতি হবে বলে আশা করছেন না তিনি। তবে ছোট হলেও এই সুযোগকে তারা কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন।

ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর কোনো চেষ্টা করেনি, কেউ যেন এমন অভিযোগ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতেই শান্তি আলোচনায় কিয়েভ যোগ দেবে। কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বেলারুশের মন্ত্রীরা সোমবার আলোচনার জন্য আসা ইউক্রেন এবং রাশিয়ার প্রতিনিধিদেরকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, তারা পুরোপুরি নিরাপদ বোধ করতে পারে।

বেলারুশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভ্লাদিমির মাকেই বলেছেন, প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো আশা করছেন যে, আজকের আলোচনায় এই সংকটের সমাধান খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে। বেলারুশের জনগণও এর জন্য প্রার্থনা করছে। আজকের আয়োজিত এই বৈঠকে যে কোনো প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখা হবে এবং পূরণ করা হবে। আমরা বৈঠকের ফলের দিকে তাকিয়ে আছি।

নিষেধাজ্ঞার বিকল্প তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ: বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিকল্প হলো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ব্লগার ব্রায়ান টাইলার কোহেনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দুটো বিকল্প আমাদের হাতে আছে। এক. তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করা, রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে যাওয়া। দুই. যে দেশটি আন্তর্জাতিক সব নিয়মনীতি লঙ্ঘন করছে, তার জন্য তাকে মূল্য দিতে বাধ্য করা।

কোহেনের ইউটিউব পেজে এই সাক্ষাৎকারের ভিডিও প্রকাশ করা হয় গত শনিবার। বাইডেন এও বলেন, নিষেধাজ্ঞা হবে ব্যাপক এবং ইতিহাসের বৃহত্তম। এর মধ্যে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও আছে। সাক্ষাৎকার দেওয়ার আগেই বাইডেন ইউক্রেনকে ৩৫০ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে নির্দেশ দেন। সব মিলিয়ে ইউক্রেনের জন্য ৬০০ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার স্মারকে স্বাক্ষর করেছেন তিনি।

দ্রুত অভিযান শেষের নির্দেশ পুতিনের

ইউক্রেনে যে লক্ষ্যে রাশিয়া অভিযান শুরু করেছে, তা এখনো অর্জিত হয়নি। তবে রাশিয়া বেশি সময় নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই ফেদরোভ। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন ২ মার্চের মধ্যেই জয় দিয়ে এই অভিযান শেষ করতে চান।

ইউক্রেনের প্রতিরোধ ও পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা মস্কোর ধারণার চেয়েও বেশি কঠোর বলেও তিনি জানান। বলেন, আমি ইউক্রেনের নেতৃত্বের অবস্থান সম্পর্কে জানি। তারা আলোচনায় বসতে ও আলোচনা করতে প্রস্তুত। তবে তা হবে কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই। অভিযান দ্রত শেষ করার নিদেশের মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী পারমাণু যুদ্ধের যে ভয় শুরু হয়েছিল তা হ্রাস পেয়েছে।

পুতিন রোববার দেশটির পারমাণবিক বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলায় অনেকেই ইউক্রেন যুদ্ধকে বৃহত্তর পারমাণবিক সংঘাতে পরিণত হওয়ার ইঙ্গিত মনে করা শুরু করেছিল। এরপর জো বাইডেনকেও যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক বাহিনীর সতর্কতার মাত্রা বাড়ানো হবে কি না, সেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে।

পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র রুশ দখলে

ইউক্রেনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জায়ার দুই শহর বারদিয়ানস্ক ও এনারহোডারের দখল নিয়েছে রুশ বাহিনী। জাপোরিজ্জায়ার পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও বর্তমানে রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দখল করলেও তা ধ্বংস করেনি রুশ বাহিনী। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ আগের মতোই স্বাভাবিক আছে জাপোরিজ্জায়ায়। যদিও ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই তথ্যের সত্যতা অস্বীকার করে বলেছে, বিদ্যুৎকেন্দ্র এখনো ইউক্রেন সরকারের দখলেই আছে।

হামলার তীব্রতা কমিয়েছে রাশিয়া

রুশ আগ্রাসন পঞ্চম দিনে গড়ালেও হামলার তীব্রতা আর আগের মতো নেই বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। যদিও মাত্র এক দিন আগেই চতুর্দিক থেকে ইউক্রেনে হামলা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছিল মস্কো। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানায়, ইউক্রেনে রুশ সেনারা আক্রমণের তীব্রতা কমিয়ে দিয়েছে। দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর একজন জেনারেল স্টাফ জানায়, রুশ বাহিনী আক্রমণের গতি কমিয়েছে। কিন্তু ইউক্রেনের কিছু এলাকায় এখনো সাফল্য অর্জনের চেষ্টা করছে তারা। যদিও মাত্র একদিন আগেই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান সামরিক অভিযান সব দিক থেকে আরো জোরদার করতে সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়ার কথা জানিয়েছিল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। মস্কোর এই নির্দেশের পর পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে আক্রমণ আরো জোরদার হবে বলেই ধারণা করা হয়েছিল।

কিয়েভে কারফিউ প্রত্যাহার

রাশিয়ার সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে জারি করা কারফিউ তুলে নেওয়া হয়েছে। কারফিউ জারির দুই দিনের মাথায় তা প্রত্যাহার করল দেশটি। ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পঞ্চম দিনে এসে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির প্রায় সকল জেলাতেই ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে রুশ সামরিক বাহিনী ও রুশপন্থি যোদ্ধাদের সংঘর্ষ চলছে।

মূলত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানগুলো খোলার সুযোগ দিতেই ইউক্রেন সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া টানা দুই দিনের বেশিরভাগ সময় ভূগর্ভস্থ নিরাপত্তা শেল্টারে কাটানো মানুষের জন্য এটি উল্লেখ্যযোগ্য প্রাপ্তি হিসাবে বর্ণনা করেছে সংবাদমাধ্যমগুলো। অবশ্য আগের দুই রাতের তুলনায় কিয়েভে রোববারের রাত তুলনামূলক শান্ত ছিল।

যুদ্ধ ইউক্রেনের মানুষের জীবনের ওপর ঠিক কী প্রভাব ফেলেছে তা এখনই জানা বেশ কঠিন। মূলত যুদ্ধের খবরে গুরুত্ব দিতে গিয়ে মানুষের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়টিকে উপেক্ষা করা হয়েছে। তবে বিদ্যমান এই পরিস্থিতির সঙ্গে স্থানীয়রা অনেকটাই খাপ খাইয়ে নিয়েছেন। খাদ্য ও পানীয় রেশনে মানুষ অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে এবং তারা এক ধরনের রুটিন মেনে চলছে। ঘরে বন্দি থাকলেও সবার চোখ থাকে টেলিভিশন স্ক্রিন ও মোবাইল ফোনের দিকে।

মন্তব্য

Beta version