-->
শিরোনাম

ইউক্রেনের ১৫টি পারমাণবিক চুল্লি বড় বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইউক্রেনের ১৫টি পারমাণবিক চুল্লি বড় বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে
ইউক্রেনের চেরনোবিলে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট

ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান সংঘাত পারমাণবিক যুদ্ধে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। আর এর আগেই বড় বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে ইউক্রেনের ১৫টি নিউক্লিয়ার পাওয়ার রিয়্যাক্টর।

গত সপ্তাহে রাশিয়ার সেনাবাহিনী চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দখল করে। এরপরই আরেকটি পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা ব্যক্ত করে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মেয়াদোত্তীর্ণ এই বিদ্যুকেন্দ্র এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ। যুদ্ধপরিস্থিতিতে ঝুঁকি আরো বেড়েছে। 

দু:শ্চিন্তা শুধু চেরনোবিলকে ঘিরে নয়। এর চেয়েও বড় আশঙ্কা ইউক্রেনের সক্রিয় ১৫টি পারমাণবিক চুল্লিকে ঘিরে।  বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যুদ্ধের কারণে বন্ধ রাখা হলেও এগুলো ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। দুই দেশের সেনাবাহিনীর গোলাগুলির মাঝে পড়ে আকস্মিকভাবে আগুন লেগে যাওয়ার আশঙ্কা তো রয়েছেই।

'গ্রিন পিস ইস্ট এশিয়া'র পরমাণু বিশেষজ্ঞ শন বার্নি এবং ইয়ান ভান্দে পুট্টে পারমাণবিক শক্তি চুল্লিগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান।

লিখিত বিবৃতিতে তারা বলেন, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট এমনিতেই খুব জটিল এবং স্পর্শকাতর বিষয়। এগুলোকে নিরাপদ রাখতে প্রয়োজন বিশেষ ধরনের সম্পদ এবং কর্মীবাহিনী।

রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে পারমাণবিক শক্তি চুল্লিগুলো নিয়ে দু:শ্চিন্তা বেড়ে চলেছে ৷

শন বার্নি বলেন, ১৫টি পারমাণবিক শক্তি চুল্লি রয়েছে এমন একটি দেশ এখন যুদ্ধে জড়িয়েছে। পারমাণবিক শক্তির ইতিহাসেই এটা খুব ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি।

তিনি বলেন, ইউক্রেন এমন পরিস্থিতির কথা ভেবে শক্তি চুল্লিগুলো বানায়নি বলে বিপর্যয়ের শঙ্কাটাও বেশি। যুদ্ধের আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে তৈরি করলে ঠান্ডা যুদ্ধের (কোল্ড ওয়ার) সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন যেমন বেশ কিছু চুল্লি মাটির নীচে তৈরি করেছে, ইউক্রেনও হয়তো তাই করতো।

এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় দু:শ্চিন্তা স্যাপোরিশিয়া প্ল্যান্ট নিয়ে। ইউরোপের সবচেয়ে বড় দুটো পারমাণবিক শক্তি চুল্লির একটি এটি। এর আশপাশেও যুদ্ধ চলছে এখন।

'গ্রিনপিস' ফ্রান্সের রজার স্পাউৎস মনে করেন, হঠাৎ কোনো ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতের আশঙ্কটাই এখন সবচেয়ে বড় এবং মারাত্মক। তাছাড়া ‘নিষ্ক্রিয়' শক্তি চুল্লিগুলো দ্রুত ঠান্ডা না হলেও ঘটতে পারে বিপর্যয়।

ইউক্রেনের বেশিরভাগ পারমাণবিক চুল্লিই এখন যুদ্ধের কারণে বন্ধ থাকে।

স্পাউৎস জানান, চুল্লিগুলোতে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা খুব জরুরি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হচ্ছে না বলে বিপর্যয়ের ঝুঁকি এমনিতেই অনেক বেড়েছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা কনফ্লিক্ট অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট অবজারভেটরির পরিচালক ডগ অয়্যার মনে করেন, রাশিয়া স্যাপোরিশিয়া বা অন্য কোনো পারমাণবিক চুল্লিতে সরাসরি হামলা চালাবে সে আশঙ্কা খুবই কম। তবে গোলাগুলির মাঝে আকস্মিক দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে।

এছাড়া রাশিয়া পারমাণবিক চুল্লিগুলোর দখল নিলেও বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়বে। এমন রিয়্যাক্টর পরিচালনার জন্য দরকার প্রশিক্ষিত এবং দক্ষ কর্মীবাহিনী। রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে তেমন দক্ষ লোক না থাকলে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র বা বোমার আঘাত ছাড়াও নেমে আসতে পারে ভয়াবহ বিপর্যয়।

সূত্র : ডয়েচে ভেলে

 

মন্তব্য

Beta version