-->
শিরোনাম

যে কারণে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে ইউক্রেনের জাদুঘরের শিল্পকর্ম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যে কারণে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে ইউক্রেনের জাদুঘরের শিল্পকর্ম

ইউক্রেনের বৃহত্তম জাতীয় জাদুঘর আন্দ্রে শেপ্টিটস্কি এর কর্মীরা রাশিয়ার আক্রমণ থেকে দেশের জাতীয় ঐতিহ্য রক্ষার জন্য অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। রাশিয়ার সৈন্যরা এখন ইউক্রেনের পশ্চিম দিক থেকে রাজধানী কিয়েভের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

আন্দ্রে শেপ্টিটস্কি জাতীয় জাদুঘরের একটি গ্যালারি খালি করে মূল্যবান সামগ্রী কার্ডবোর্ডের বাক্সে সাবধানে মুড়িয়ে রাখতে দেখা গেছে।

তার কয়েক মিটার দূরে একটি দলকে ১৮ শতকের বোহরোদচানি শিল্পকর্মের একটি বিশাল অংশ জাদুঘরের রাজকীয় প্রধান সিঁড়ি দিয়ে নামিয়ে আনতে দেখা গেছে।

‘এই শিল্পকর্মগুলো সরাতে মাঝে মধ্যে কান্না চলে আসে। এইসব কাজ সময়, শ্রম ও কষ্টসাধ্য। তারপরও খুশি লাগছে কারণ আমরা ভাল কিছু করছি। জাদুঘরের দেয়াল খালি দেখা একটি তিক্ত ও দুঃখজনক ঘটনা।

আমরা বিশ্বাস করতে চাই যে, যা ধারণা করছি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ওই রকম কিছু ঘটবে না’ বলছেন জাদুঘরের জেনারেল ডিরেক্টর ইহোর কোজান।

২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লভিভের জাদুঘরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যুদ্ধের মধ্যে ইউক্রেন জুড়ে থাকা ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলো ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কায় আছে।

কোরজান বলেন, তিনি এবং তার কর্মীরা যাদুঘরে রক্ষিত কাজগুলো সংরক্ষণে সহায়তার জন্য অন্যান্য ইউরোপীয় সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিদিন ফোন পাচ্ছেন।

বিরল পাণ্ডুলিপি এবং বই বিভাগের প্রধান আনা নওরোবস্কা বলছেন, তিনি এখনো জানেন না যে, বাক্সে প্যাক করা ১২,০০০ এরও বেশি সংগ্রহ কোথায় নিরাপদে সংরক্ষণ করবেন।

অব্যাহত আক্রমণের মুখে এতসব জিনিসপত্র স্থানান্তর করা খুবই কঠিন।

এখানে রক্ষিত শিল্পকর্ম ও বইয়ে আছে ‘আমাদের জীবনের গল্প, আমাদের জীবন। এটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ’ বলেন নওরোবস্কা।

নওরোবস্কাকে দেখা গেল ভবনের অন্য ঘরে গিয়ে একটি বিশাল বই ধরে আছে আর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। সে যে বইটি ধরে আছে সেটি ‘একটি রাশিয়ান বই’। ‘সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আমি খুব রাগান্বিত’ বলেন নওরোবস্কা।

এই জাদুঘরের মতোই লভিভের শৈল্পিক ও সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো রক্ষা করার প্রাণান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছে। হিস্ট্রি অব রিলিজিয়ন জাদুঘরের ডিসপ্লে ক্যাবিনেটগুলো প্রায় খালি পড়ে আছে।

ঐতিহাসিক বইপত্র ও শিল্পকর্মগুলো সুরক্ষিত রাখতে শ্রমিকরা ধাতবপাত্র জোগাড় করছে। ল্যাটিন ক্যাথিড্রালের ভাস্কর্যগুলো সম্ভাব্য আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য কার্ডবোর্ড, ফোম ও প্লাস্টিক মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

জাদুঘরের খালি দেয়াল এবং আবৃত মূর্তিগুলো দেখিয়ে কোজান হতাশা প্রকাশ করতে করতে বলেন, এই স্থাপনাগুলো দুটি বিশ্বযুদ্ধেও সুরক্ষিত ছিল।

‘জাদুঘরকে টিকে থাকতে হবে। এখানে লোকজন আসবে এবং সাথে আসবে শিশুরা। শিশুদের সংস্কৃতির মূল বিষয়গুলো শিখতে হবে’ বলেন নওরোবস্কা।

সাবানিউজ

 

মন্তব্য

Beta version